জোড়া মাস্কে মেলে দ্বিগুণ সুরক্ষা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২১, ০৯:৪৪ পিএম
জোড়া মাস্কে মেলে দ্বিগুণ সুরক্ষা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক কার্যকর একটি সুরক্ষা ব্যবস্থা। তবে জোড়া মাস্ক পরলে সেই সুরক্ষা দ্বিগুণ হয়ে যায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনা হেলথ কেয়ারের একদল গবেষকের করা নতুন একটি গবেষণায় এমন প্রমাণই পাওয়া গেছে।

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, একটির বদলে মুখে যথাযথভাবে দুটি মাস্ক পরলে করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য দায়ী ক্ষুদ্রকণার ফুসফুসে ঢোকার শঙ্কা দ্বিগুণ হ্রাস পায়। জোড়া মাস্কের কল্যাণে যিনি মাস্ক পরেছেন তার নাক কিংবা মুখ দিয়ে ক্ষুদ্রকণা ঢুকে সংক্রমণ ঘটাতে পারে না।     

আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জেএএমএ ইন্টার্নাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণা নিবন্ধে আরও বলা হয়েছে, ব্যাপারটা আসলে বেশি স্তর বলে নয়, দুর্বলভাবে মাস্ক পরার কারণে কোনো ফাঁক থাকার বিষয়টি পূরণ করার মাধ্যমেই জোড়া মাস্ক সংক্রমণ ঠেকাতে অধিক সুরক্ষার কাজটি করে থাকে।

গবেষণা দলের প্রধান ও নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের সংক্রামক রোগ বিভাগের অধ্যাপক এমিলি সিকবার্ট-বেনেটে বলেন, ‘মেডিকেল মাস্ক সম্পূর্ণ সুরক্ষার নিমিত্তে তৈরি করা হলেও এটি যেভাবে আমাদের মুখ ঢেকে রাখে তা যথাযথ নয়।’ 

স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি দশ ফুট বাই দশ ফুটের একটি এক্সপোজার চেম্বার তৈরি করে সেখানে অ্যারোসেলের মাধ্যমে ক্ষুদ্রকণা দিয়ে বেশ কিছু মাস্কের মাধ্যমে গবেষণায় দেখা হয়েছে যে, এসব মাস্ক প্রকৃতপক্ষে ক্ষুদ্রকণা নাকে বা মুখে ঢোকা ঠেকাতে কতটা কার্যকর।

এতে দেখা গেছে, সাধারণত ব্যক্তিভেদে মাস্কের কার্যকারিতা ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ। কিন্তু যখন একটি সার্জিক্যাল মাস্কের ওপর আর একটি কাপড়ের মাস্ক পরা হয়, তখন কার্যকারিতা বিশ শতাংশ বেড়ে যায়। এছাড়া মাস্ক ভালোভাবে পরলে কার্যকারিতা আরও বাড়ে। 

বলা হচ্ছে, যখন একটি মাস্কের উপর আরও একটি মাস্ক পরা হয় তখন এটি মুখ ও নাক আরও ভালোভাবে ঢেকে রাখে। ফলে মাঝখানে যেসব স্থান ফাঁকা থাকার শঙ্কা থাকে তা কমে যায়। এতে একটি মাস্ক ভেদ করলেও অপরটি ক্ষুদ্রকণাগুলোর ভেতরে প্রবেশ ঠেকায়।   

তবে ওই গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক এমিলি সিকবার্ট- বেনেটে বলছেন, ঢিলেঢালাভাবে জোড়া মাস্ক পরে কেউ নিজেকে সুরক্ষিত ভাবলেও ভুল হবে। কারণ ঢিলেঢালাভাবে পরা জোড়া মাস্কের চেয়ে যথাযথভাবে পরা একটি মাস্কই বেশি কার্যকর।’ 

ত্রিশ লাখ প্রাণহানির মর্মান্তিক মাইলফলক

প্রথম শনাক্ত হওয়ার মাত্র ১৬ মাসের মাথায় শনিবার বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে প্রাণহানির ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি শনিবাবের হালনাগাদ তথ্য দিয়ে করোনায় প্রাণহানির মর্মান্তিক মাইলফলকে পৌঁছানোর খবরটি জানিয়েছে। 

বিশ্বের অধিকাংশ দেশে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলে শুরু হলেও প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। গত মাসে কিছুটা কমলেও এপ্রিলে মৃত্যু আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে। গত সপ্তাহে করোনায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যু গড়ে ১২ হাজারের বেশি ছিল।

তবে সফলভাবে গণটিকাদানের কল্যাণে ইসরায়েলের মতো কিছু দেশে এই ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা কমে এসেছে। অন্যদিকে, টিকার সংকটে ভারতে এই ভাইরাসের সংক্রমণ এবং মৃত্যু করোনা মহামারির গত বছরের রেকর্ড তছনছ করে দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানাচ্ছে, করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে যত মানুষ মারা গেছে; তা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ, ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাস কিংবা পর্তুগালের লিসবন শহরে বসবাসকারী মানুষের সমান। 

তবে সরকারি হিসাবে তথ্য গোপন করায় প্রাণহানির প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না। এই সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি হতে পারে ধারণা। উল্লেখ্য, মহামারি করোনা শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্বের ১৪ কোটিরও বেশি মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটিয়েছে।

গোনিউজ/আই

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর