২৫০০০ বেওয়ারিশ লাশ সৎকার করে ‘পদ্মশ্রী’ পাচ্ছেন মোহাম্মদ শরিফ


নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২০, ০৭:৩৩ পিএম
২৫০০০ বেওয়ারিশ লাশ সৎকার করে ‘পদ্মশ্রী’ পাচ্ছেন মোহাম্মদ শরিফ

২৫ বছরের বেশি সময় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের দেহ দাফন এবং সৎকার করেছেন তিনি। অন্তত ২৫ হাজার মৃত ব্যক্তির শেষ যাত্রা সম্পন্ন হয়েছে তার হাতে। নিরলস এই সেবার জন্যেই ভারত সরকারের পদ্মশ্রী পুরস্কার পেতে চলেছেন ৮২ বছর বয়সি মোহাম্মদ শরিফ।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদের পরিচিত মুখ শরিফ। সকলেরই তিনি শরিফ চাচা। পেশায় সাইকেল মেকানিক। কিন্তু নেশা সৎকারের। ১৯৯২ সালে ২৫ বছরের তরতাজা ছেলে মারা যাওয়া পরে এই কাজ শুরু করেন তিনি। এখনও সেই কাজ চলছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমকে শরিফ বলেন, ‘২৭ বছর আগে আমার ছেলে মোহাম্মদ রইস খান নিখোঁজ হয়। ও সুলতানপুরে গিয়েছিল কেমিস্টের চাকরি নিয়ে। এক মাস পরে ওর পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। খুন করা হয়েছিল ওকে। ওর দেহটা দেখে স্থির করি, কোনও মানুষকে মৃত্যুর পরে এ ভাবে এই অসম্মানিত হতে দেব না।

হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ নেই শরিফের মনে। তিনি নিজেই বলছেন, ‘নিজে হাতে অন্তত ৩০০০ হিন্দুকে দাহ করেছি নিয়ম মেনে। পুলিশ স্টেশন হাসপাতাল সর্বত্র অবাধ যাতায়াত শরিফের। মৃত্যুর ৭২ ঘণ্টা পরে সেই দেহ দাবি করতে কেউ না এলেই ডাক পড়ে শরিফের। তিনি এসে মৃতদেহগুলি নিয়ে যান যথাস্থানে।

একটি মৃতদেহ কবর দেওয়ার খরচ ৫০০০ টাকা। দাহ করতেও লাগে অন্তত ৩৫০০ টাকা। সেই টাকা জোগাড় হয় কী ভাবে? শরিফ জানিয়েছেন, কবরস্থানে হোক বা শ্মশানে , অজস্র বন্ধু রয়েছে তার। কেউ তার থেকে টাকা তো চাননি না উপরন্তু সাহায্য করেন নানা ভাবে।

শুধু মৃত মানুষের অন্ত্যেষ্টি নয়, জীবন বাঁচানোর রেকর্ডও রয়েছে শরিফের। ফৈজাবাদ-লখনউয়ে একটি জিপ উল্টে একই পরিবারের কয়েক জন মারা যায় দিন কয়েক আগে। একমাত্র জীবিত সদস্যকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন শরিফ। এই অনন্য মানবিকতারই পুরস্কার পাচ্ছেন শরিফ। খুশি তার আত্মীয় বন্ধুরা। মৃত ছেলের মুখ মনে করে শরিফের চোখে জল।

গো নিউজ২৪/আই

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর