আসানসোল ‘জয় করতে’ বুধবার দুপুরেই কলকাতা থেকে রওনা দিয়েছিলেন মুনমুন সেন। সঙ্গে ছিল পছন্দের বেশ কয়েকটি শাড়ি। উঠেছিলেন এক মাস চারদিনের প্রচারের আস্তানা হাইওয়ে লাগোয়া হোটেলে।
বেলা ১০টা নাগাদ পছন্দের আকাশি-নীল শাড়ি, লাল টিপ পরে গণনা কেন্দ্রে যান মুনমুন। প্রথম দুই রাউন্ডেই প্রধান প্রতিপক্ষ বাবুল বেশ খানিকটা ‘লিড’ নিয়েছেন দেখে দ্রুত গণনা কেন্দ্র ছাড়েন সুচিত্রাকন্যা। আসানসোলের এক দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে মোবাইল ফোনটিও বন্ধ করে দেন তিনি।
তবে এক দলীয় নেতার কাছে আসা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ফোনে ফের গণনা কেন্দ্রের দিকে রওনা দেন মুনমুন। সেখানে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে বেরিয়ে আসার সময় দৃশ্যতই বিব্রত ও বিধ্বস্ত দেখায় তাকে।
ভোটের ব্যবধান দেখে দলীয় নেতাকর্মীদের কাউকে কাউকে তিনি বলতে থাকেন, ‘দেখব, তুমি এখানে কী করে থাক! একটা কাজও ঠিক করোনি তোমরা।” আর এক দলীয় নেতার হাত ধরে কাছে টেনে নিয়ে বলেন, “এক মাস চার দিন ধরে এত খাটলাম, মানুষ বুঝল না!’
বিকেল ৩টা। আসানসোলের ভোটগণনা কেন্দ্রে সপ্তম রাউন্ডের গণনা চলছে। এর মধ্যে জানা গেল মুনমুন হোটেল ছাড়ছেন। জানা গেল, তিনি কলকাতা ফিরে যাচ্ছেন।
কয়েক মিনিটের মধ্যে বাইরে আসলেন মুনমুন। আঁচল দিয়ে ঘাম মুছে বললেন, ‘আই অ্যাম জাস্ট ফিনিশড। আর রাজনীতি করব না। মেয়েরা ফোন করে বলল, ওখানে বসে কী করছ? এখনই কলকাতায় ফিরে এসো।’
বৃহস্পতিবার সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন বেলা যত গড়িয়েছে, ততই দেশজুড়ে বিজেপি-বিরোধী শক্তির ভরাডুবির ছবি স্পষ্ট হয়েছে। রাজ্যেও তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে নরেন্দ্র মোদির দল।
বিজেপির চেয়ে বেশি আসন পেলেও আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র পুনরুদ্ধার করতে পারেনি তৃণমূল। ২০১৪ সালে বাবুল সুপ্রিয় এই কেন্দ্র থেকে জেতার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আস্থা রেখেছিলেন মুনমুনের ওপর।
এদিন বেলা ১২টাতেও তিনি বলেছিলেন, ‘এখনও বলছি, আমিই জিতব।’ ততক্ষণে অবশ্য প্রতি রাউন্ড ভোটগণনার পরে মুনমুনের থেকে জয়ের ব্যবধান বেড়েই চলেছে বাবুলের।
বেলা ৩টেয় হার প্রায় নিশ্চিত বুঝে আসানসোল ছাড়ার মুখে মুনমুন বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঢেলে সব সাজাতে হবে। উনি একা লড়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তার নিচের লোকগুলো কেউ ভালো নয়। ওরাই আমায় হারিয়ে দিয়েছে।’
তিনি জানান, তার মতো অভিনেত্রীকে সবাই দলে চেয়েছিল। তবে তিনি যাননি।
তিনি বলেণ, ‘প্রণব মুখোপাধ্যায়ও আমাকে ডেকেছিলেন। আমি রাজনীতির লোক নই। তবে রাজনীতিতে এসেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। এরপরে আমায় ডাকলে আর পাবে না।’
সূত্র-আনন্দবাজার
গো নিউজ২৪/আই