মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০১৭, ০৯:৩৮ এএম
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর দমন পীড়নের সমাপ্তি টানতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস হয়েছে। মিয়ানমারকে গণহত্যার জন্য দায়ী করে বৃহস্পতিবার রাতে এ প্রস্তাব গ্রহণ করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ।

রোহিঙ্গাদের পূর্ণ অধিকার দিয়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে পাস হওয়া প্রস্তাবে। থার্ড কমিটি রাখাইনে জাতিসংঘ প্যানেলকে অবাধে কাজ করতে দিতেও মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

সাধারণ পরিষদের এজেন্ডা নির্ধারণী অন্যতম ফোরাম থার্ড কমিটি মানবাধিকার লঙ্ঘন, নারী ও শিশু সুরক্ষা, আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে। সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারে মানবাধিকার হরণের নিন্দা জানিয়ে গত দেড় দশক ধরে দেশটির বিরুদ্ধে প্রস্তাব গ্রহণ করে আসছিল থার্ড কমিটি।

ইসলামি সহায়তা সংস্থার (ওআইসি) ৫৭ সদস্য দেশ প্রস্তাবটি জাতিসংঘের ওই কমিটিতে উত্থাপন করে। ওআইসির পক্ষে জাতিসংঘে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আল মোয়াল্লিমি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ধর্মীয় বিদ্বেষের আরেক অমানবিক চিত্র দেখা যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্ক সময় সকালে ভোটাভুটির পর এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। ভোটাভুটিতে ১৩৫টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে চীন ও রাশিয়াসহ ১০টি দেশ। ভারতসহ ২৬টি দেশ কোনো পক্ষেই ভোট দেয়নি। এছাড়া, অনুপস্থিত ছিল ২২টি দেশ।

প্রস্তাবে মিয়ানমারের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন পুনর্বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ওপর যারা নির্যাতন করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্যও দেশটির সরকারকে বলা হয়েছে।

প্রস্তাবে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ‘মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত’ নিয়োগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ যেন মিয়ানমারকে সহায়তার প্রস্তাব করে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনসহ সব ধরনের সংকট সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

৩১ অক্টোবর থার্ড কমিটিতে ‘মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শিরোনামে মিশর এই খসড়া প্রস্তাবিটি জমা দেয়। এর কো-স্পনসর ছিল ৯৭টি দেশ। এই প্রস্তাবে শুধু রোহিঙ্গা সমস্যা উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে অং সান সুচি সরকার গঠনের আগে একই শিরোনাম ‘মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। সেখানে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণতান্ত্রিক পরিবেশের ওপর জোর দেয়া হয়েছিল। সেই প্রস্তাবে ১৯টি অনুচ্ছেদের মধ্যে রোহিঙ্গা বিষয়ে শুধু একটি অনুচ্ছেদ ছিল।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এতে গণহত‌্যা, গণধর্ষণ, নির্যাতনের অভিযোগ এনেছে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। এরপর থেকে প্রাণভয়ে ছয় লাখ ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এই ঢল এখনো বন্ধ হয়নি।

গোনিউজ২৪/কেআর

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর