রাখাইনে গণহত্যায় সু চি ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘রায়’


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭, ০৩:৩৭ পিএম
রাখাইনে গণহত্যায় সু চি ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘রায়’

ঢাকা: মিয়ানমারে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে ‘দোষী সাব্যস্ত’ হয়েছেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর ও ক্ষমতাসীন দলেন নেত্রী নোবেল বিজয়ী অং সান সু চি সরকার ও দেশটির সামরিক বাহিনী।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের ‘আন্তর্জাতিক গণ-আদালত’ প্রতীকী বিচারে এ রায় ঘোষণা করা হয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ দিন মালয় ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদে এই গণ আদালতের শুনানি চলে। 

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা, কাচিন, কারেনসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর ২০০ মানুষের জবানবন্দি শুনে এবং  বিভিন্ন তথ্যচিত্র ও বিশেষজ্ঞ মতামত পর্যালোচনা করে রোমভিত্তিক সংগঠন পার্মানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনালের (পিপিটি) সাত ‘বিচারকের’ প্যানেল রায় ঘোষণা করে।

ট্রাইব্যুনালের সভাপতি আর্জেন্টিনার সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের প্রতিষ্ঠাতা দানিয়েল ফিয়েরেস্তেইন শুক্রবার গণ আদালতের প্রতীকী ‘রায়’ ঘোষণা করে বলেন, তাদের বিচার মিয়ানমারের শাসক গোষ্ঠী গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।

এই প্রতীকী বিচারের রায় মানার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা কারও নেই। বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাপরাধ তদন্ত-প্রক্রিয়ায় যুক্ত আইনবিদ, অধিকারকর্মী ও গবেষকরা এই গণআদালতে মিলিত হয়েছিলেন মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান দমনাভিযান বন্ধের দাবি নিয়ে।

ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলারসের সাবেক সভাপতি দানিয়েল ফিয়েরেস্তেইন ছাড়াও এই ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্যানেলে ছিলেন ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ তদন্ত-প্রক্রিয়ায় যুক্ত মালয়েশীয় অধিকারকর্মী জুলাইহা ইসমাইল, ঢাকার সেন্টার ফল স্টাডি অব জেনোসাইড অ্যান্ড জাস্টিসের উপদেষ্টা কম্বোডীয় আইনজীবী হেলেন জার্ভিস, অস্ট্রেলিয়ার মেকুইয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক প্রধান গিল এইচ বোয়েরিঙ্গার, ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার আইনজীবী নুরসিয়াবানি কাতজাসুংকানা, ইরানের মানবাধিকার কর্মী আইনজীবী সাদি সদর এবং ইতালির সুপ্রিম কোর্টের সলিসিটর জেনারেল নেল্লো রোসি।

মিয়ানমারে গণহত্যা

মিয়ানমারে গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে ১৭ দফা সুপারিশ করেছে পার্মানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনাল।  জাতিসংঘের একটি ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ দলকে মিয়ানমারে গিয়ে পূর্ণ তদন্ত চালানোর সব ধরনের সুযোগ দেয়ার কথাও সেখানে রয়েছে।

পিপলস ট্রাইব্যুনাল বলেছে, মিয়ানমার সরকারকে তাদের সংবিধান সংশোধন করে সব জাতিগোষ্ঠীকে নাগরিকত্বের অধিকার দেওয়ার পাশাপাশি সব ধরনের বৈষম্যমূলক আইন বাতিল করতে হবে।

ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর ১৯৭৯ সালে ইতালির বোলোনিয়ায় যাত্রা শুরু করে পার্মানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনাল। বিভিন্ন দেশে যুদ্ধপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে এ পর্যন্ত ৪৩টি প্রতীকী বিচারের আয়োজন করেছে এ সংগঠন।

গোনিউজ২৪/এন

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর