আল-আকসার নিরাপত্তা নিয়ে জর্দানের বাদশা ও এরদোয়ানের বৈঠক


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০১৭, ০৯:৩৩ পিএম
আল-আকসার নিরাপত্তা নিয়ে জর্দানের বাদশা ও এরদোয়ানের বৈঠক

আল-আকসা মসজিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জর্দানের বাদশা আবদুল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সম্প্রতি মসজিদটিকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর দমন পীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম বিশ্বের এই দুই নেতার আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো।

ইরানি গণমাধ্যম প্রেসটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুসলিমদের প্রথম কিবলা পবিত্র আল-আকসা মসজিদের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেন জর্দানের বাদশা। এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকে তিনি আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গনে ইহুদিবাদী ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের বিষয়টি আলোচনা করেছেন।

আল-আকসা মসজিদের কাঠামো কিংবা ঐতিহাসিক পরিবেশে কোনো পরিবর্তন ঘটানোর পদক্ষেপ মেনে না নেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন তারা।

সম্প্রতি ইসরায়েলি দখলদার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জেরুজালেমের নিজস্ব ও প্রদেয় সম্পত্তি সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরির অভিযোগ উঠে। জেরুজালেম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের চেয়ারম্যান হাসান খাতার দাবি করেন, চুরি হওয়া নথিগুলোর মধ্যে জেরুজালেমের ওল্ড সিটির ৯০ শতাংশেরও বেশি সম্পত্তির ‘বিস্তারিত ও গোপনীয়’ তথ্য ছিল।

প্রেস টিভির খবরে বলা হয়েছে,  জর্দানের বাদশা আবদুল্লাহ ও এরদোয়ান মনে করছেন, এ ধরনের পদক্ষেপে পূর্ব-বায়তুল মুকাদ্দাসের পরিচিতি হুমকির মুখে পড়বে। বৈঠকে তারা সহিংসতা অবসানের জন্য ফিলিস্তিন এবং ইসরাইলের মধ্যে নতুন করে কথিত শান্তি আলোচনা শুরুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ১৯৬৭ সালের সীমানা মেনে এবং পূর্ব-বায়তুল মুকাদ্দাসকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই কেবল সমস্যার সমাধান সম্ভব বলেও মনে করেন এই দুই নেতা।

আল-আকসা মসজিদটি একইসঙ্গে মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের জন্য পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হয়। মুসলিমরা একে আল হারাম আল শরিফ নামে ডেকে থাকেন। আর ইহুদিরা এ স্থানটিকে টেম্পল মাউন্ট বলে। গত ১৪ জুলাই ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের সঙ্গে ইসরায়েলি পুলিশের সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর মসজিদ প্রাঙ্গণটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়ার পর নতুন করে আবারো উত্তেজনা শুরু হয়।

১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে সেখানে বসতি স্থাপন অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক আইনে এ বসতি স্থাপন অবৈধ বিবেচনা করা হলেও দেশটি তা মানতে নারাজ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সংঘাত চলে আসছে ওই ভূখণ্ডে। নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় শান্তি আলোচনা হলেও তা ব্যর্থ হয়।

পূর্ব-জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী বলে দাবি করে ইসরায়েল। অবশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলের দাবির কোনো স্বীকৃতি দেয়নি। ওই এলাকাকে নিজেদের রাজধানী বলে করে ফিলিস্তিনিরাও। ১৯৬৭ সালে দখলকৃত পশ্চিমতীরে বর্তমানে ৪ লাখ এবং পূর্ব-জেরুজালেমে ২ লাখ ইহুদি বসবাস করছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে দখলকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বসতি নির্মাণকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে একটি প্রস্তাব পাস করে জাতিসংঘ। দেশটির এ ধরনের আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং তা শান্তি প্রক্রিয়ায় বাধা বলেও উল্লেখ করা হয় সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদের ওই প্রস্তাবে। তবে তখন এর বিরুদ্ধে দাঁড়ান বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে চলতি বছর ইসরায়েলকে ‘বর্ণবাদী’ রাষ্ট্র আখ্যা দিয়ে একটি প্রস্তবনা পাস করে জাতিসংঘ।

গো নিউজ২৪/ আরএস

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর