কাতারি হজযাত্রীদের খরচ বহন করতে চান সৌদি বাদশা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০১৭, ১১:১০ এএম
কাতারি হজযাত্রীদের খরচ বহন করতে চান সৌদি বাদশা

কাতার থেকে আগত হজযাত্রীদের সৌদি আরবে প্রবেশের অনুমোদন দেয়ার পাশাপাশি তাদের সব খরচ বহন করার প্রস্তাব দিয়েছেন দেশটির বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ। সৌদি কর্তৃপক্ষ কাতারি হজযাত্রীদের বাধা দিচ্ছে- এমন অভিযোগের পরই এই প্রস্তাব দেয়া হলো।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, ওই অভিযোগের জবাবে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাদশা সালমান কাতারি হজযাত্রীদের জন্য সালওয়া সীমান্ত খুলে দেয়ার আদেশ দেন। পাশাপাশি যেসব কাতারি হজ করতে ইচ্ছুক তাদের সৌদি আরব প্রবেশে ইলেকট্রনিক পারমিটের প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়ে দেয়া হয়।

কাতারের ক্ষমতাসীন পরিবারের সদস্য শেখ আবদুল্লাহ বিন আলি বিন আবদুল্লাহ বিন জাসিম আল থানির মধ্যস্থতার ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও এসপিএ জানিয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি বিমানও পাঠিয়েছেন বাদশা সালমান। কাতারি হজযাত্রীদের নিজ খরচে জেদ্দাহ পর্যন্ত নিয়ে আসতে ওই বিমান পাঠিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ মে কাতারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের কিছু তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে যাওয়ার পর এ নিয়ে দেশটির সঙ্গে অন্য আরব রাষ্ট্রগুলোর বিরোধ শুরু হয়। ৫ জুন ‘সন্ত্রাসবাদে সমর্থন’ দেয়ার অভিযোগ তুলে ছোট্ট এই দ্বীপ রাষ্ট্রটির সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় সৌদি আরব এবং তার মিত্র মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন। পরে এই তালিকায় যুক্ত হয় মালদ্বীপ এবং লিবিয়া ও ইয়েমেনের পশ্চিমা সমর্থিত সরকার।

মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন মতে, গত ২৩ মে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা হ্যাকিংয়ের পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। আর তার পরদিনই কাতার সরকারের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিকমাধ্যম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়। হ্যাকাররা কাতারের সরকারি গণমাধ্যম কিউএনএ’র ওয়েবসাইটে একটি ভুয়া প্রতিবেদন যুক্ত করে দেয়।

এতে দেখা যায়, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ইরান, হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলকে সমর্থন জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় টিকে থাকবেন কি না- তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ওই ঘটনায় আরব আমিরাত জড়িত বলে জানিয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দারা।

আরব দেশগুলোও দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, কাতার ইসলামপন্থিদের সহায়তার দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ দেখিয়ে আসছে দেশগুলো। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই দলটি বর্তমানে নিষিদ্ধ। ব্রাদারহুড রাজতন্ত্রের বিরোধিতা করে এবং গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তাদের এই আদর্শকে হুমকি হিসেবে দেখে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো।

২০১২ সালে মিসরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ব্রাদারহুড নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এলেও ২০১৩ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। এরপর থেকে ব্রাদারহুড সমর্থকদের ওপর চালানো হয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর নির্যাতন। এতে সমর্থন দেয় সৌদি সরকার।

গো নিউজ২৪/ আরএস

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর