‘বস্তির মেয়ে’ থেকে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২২, ২০১৭, ০১:৪৪ পিএম
‘বস্তির মেয়ে’ থেকে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত

জীবনটা মোটেও সহজ ছিল না মুজুন আলমেহানের। অবশ্য যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় জীবন সহজ হওয়ারও কথা নয়। সেই সিরিয়াতেই বেড়ে ওঠা এই মেয়ের। ২০১৩ সালে কোনোমতে পালিয়ে আসেন জর্দানে। তিন বছর ধরে শরণার্থীদের একটি বস্তিতে থেকেছেন তিনি। তারপরও গড়েছেন নিজের ভাগ্য। বিশ্ব শরণার্থী দিবসে মুজুন আলমেহানকে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে মনোনীত করেছে জাতিসংঘের শিশু বিয়ষক সংস্থা ইউনিসেফ।

জর্দানে তিন বছরের শরণার্থী জীবনের মধ্যে ১৮ মাস জাটারি শরণার্থী শিবিরে কেটেছে মুজুনের। বাল্যবিবাহ এবং বা শিশুশ্রমের জন্য পরিচিত এই জাটারি শরণার্থী শিবির। তবে মুজুন সে পথে হাঁটেননি। আর পাঁচটা শিশুর মতো শেকড় ছেড়ে পালিয়ে আসার সময় তার হাতে ছিল স্কুল থেকে দেয়া কিছু বই। বুঝেছিলেন, বই ছাড়া মুক্তি নেই। একমাত্র বই-ই বদলে দিতে পারে স্বপ্নের রঙ।

সেভাবেই শুরু হয়েছিল এই সিরীয় মেয়ের পথচলা। তবে পরিসরটা শুধু নিজের জীবনের গণ্ডিতেই আটকে রাখেননি তিনি। শরণার্থী শিবিরের বাকি সমবয়সীদেরও স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন মুজুন। সে স্বপ্নে শিক্ষা ছিল, স্বাস্থ্য ছিল, মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার প্রতিশ্রুতি ছিল। সমবয়সীরাও মুজুনের পাশে এসে দাঁড়ায়। সেখান থেকেই শুরু হয় লড়াই।

মালালার সঙ্গে মুজুন

আর এই লড়াইয়ে তিনি পাশে পেয়েছিলেন ইউনিসেফকে। সামনে ছিল প্রয়াত অদ্রে হেপবার্নের আদর্শ, যিনি নিজেও ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত ছিলেন। উনিশ বছর বয়সেই মুজুন এখন ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত। সেই প্রকল্পের অংশ হিসেবে শাদে গিয়েছিলেন মুজুন। দায়িত্ব ছিল, সন্ত্রাস বিধ্বস্ত, যুদ্ধক্লান্ত শৈশবকে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা। 

শুধু শাদই নয়, বিশ্বজুড়ে এমন প্রায় আড়াই কোটি শিশুকে পথ দেখাচ্ছেন তিনি। ২০১০ সাল থেকে মানব উন্নয়ন খাতে বরাদ্দের দুই শতাংশ এসব শিশুর শিক্ষার জন্য ব্যয় করা হচ্ছে। ইউনিসেফের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে সংস্থাটির আওতায় থাকা শিশুদের শিক্ষার জন্য ২৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন।

গো নিউজ২৪/ আরএস

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর