‘মুসলিম হওয়ার কারণেই আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে’


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২০, ২০১৭, ১১:৩৪ এএম
‘মুসলিম হওয়ার কারণেই আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে’

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের স্টার্লিং শহরে নিহত মুসলিম তরুণী নাবরা হাসনিনকে মুসলিম হওয়ার কারণেই হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছেন তার বাবা মোহাম্মদ হাসনিন। যদিও একে মুসলিম-বিদ্বেষমূলক অপরাধ বলে মানতে নারাজ মার্কিন পুলিশ।

মুসলিম হওয়ার কারণেই মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে কি না- ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে নাবরার বাবা বলেন, ‘আমি শতভাগ তাই বিশ্বাস করি। ম্যাকডোনাল্ডে আরও অনেক বাচ্চা ছিল, অনেক লোক ছিল; কেন সে (ঘাতক) এই মেয়েটির পেছনে ছুটল? কীসের জন্য?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যখন আদালতে যাব, তার সামনে দাঁড়িয়ে জানতে চাইবো: তুমি আমার মেয়েকে কেন হত্যা করেছ? এরপর আমি তাকে আল্লাহর দায়িত্বে ছেড়ে দেব। আল্লাহই তার বিচার করবেন। সে আমার মেয়ের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।’

এর আগে রোববার স্থানীয় একটি মসজিদের পাশের রেস্টুরেন্টে সেহরি খাওয়ার সময় সর্বশেষ নাবরাকে দেখা গিয়েছিল। তিনি মসজিদে গিয়ে নামাজে অংশ নিয়েছিলেন। এরপরই গাড়ি চালিয়ে এক দুর্বৃত্ত সেখানে আসে। পরে তারা পালিয়েও যায়।

স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির আরোহী তার গাড়ি থেকে মেয়েটিকে মারতে শুরু করে। তার বন্ধুরা দৌঁড়ে মসজিদে যায় সাহায্যের জন্য। তখনই ১৭ বছরের নাবরাকে অপহরণ করা হয়। ১১ ঘণ্টা পর তার মৃতদেহ খুঁজে পায় পুলিশ।

ওই ঘটনায় ডারউইন মার্টিনেজ নামের একজনকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দেয়া হয়েছে। নাবরার বন্ধুদের উদ্দেশ্যে তার বাবা বলেন, ‘আমি আমার মেয়েকে হারিয়েছি। আমার সুখের উৎস হারিয়েছি।’

সন্দেহভাজন ঘাতক

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নাবরা মাত্রই হাইস্কুলের দ্বিতীয়বর্ষ শেষ করেছিল। ‘অল ডুলস এরিয়া মুসলিম সোসাইটি’র (এডিএএমএস) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে এই ঘটনায় আমরা হতভম্ব। ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রার্থনা করা এবং আমাদের বাচ্চাদের দেখেশুনে রাখার সময় এখন।’

এদিকে সন্দেহভাজন অপরাধীর বিরুদ্ধে ঘৃণাজনিত অপরাধধের কোনও অভিযোগ আনেনি পুলিশ। এটি ঘৃণাজনিত অপরাধ কি না- তা এখনও খতিয়ে দেখছে তারা। স্থানীয় কাউন্টির পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাকে ঘৃণাজনিত অপরাধ হিসেবে তদন্ত করেননি তারা।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ঘৃণামূলক অপরাধ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। ইসলামি সংস্থা ‘কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স’র (সিএআইআর) মতে, ২০১৫-১৬ সালের তুলনায় চলতি বছর মুসলিমবিদ্বেষী অপরাধ বেড়েছে ৫৭ শতাংশ।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর ৪৪ শতাংশ মুসলিমবিদ্বেষী অপরাধ বেড়েছে।’

নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়েছেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তে থাকে মুসলিমবিদ্বেষ।

গো নিউজ২৪/ আরএস

এ সম্পর্কিত আরও সংবাদ


আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর