যৌথ সামরিক মহড়ার উদ্দেশ্যে কাতারে পৌঁছেছে তুর্কি সেনারা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০১৭, ০১:৫৯ পিএম
যৌথ সামরিক মহড়ার উদ্দেশ্যে কাতারে পৌঁছেছে তুর্কি সেনারা

যৌথ সামরিক মহড়ার উদ্দেশ্যে তুর্কি সেনাদের প্রথম দল কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছেছে। রোববার কাতারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, তারিক বিন জিয়াদ সেনাঘাঁটিতে দুই দেশের সৈন্যরা এই প্রথম কোনও প্রশিক্ষণে অংশ নেবে। দীর্ঘদিন ধরেই এই মহড়ার পরিকল্পনা করে আসছিল তুরস্ক ও কাতার। উভয় দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে তাদের মধ্যকার চুক্তির একটি অংশ এই মহড়া। সশস্ত্র গোষ্ঠিগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা জোরদারে একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ার কথাও জানিয়েছে দেশ দুটি।

গত ৫ জুন মুসলিম ব্রাদারহুডসহ কিছু সংগঠনকে সমর্থনের অভিযোগে কাতারের সঙ্গে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিসর এবং আরও কয়েকটি দেশের সম্পর্ক ছিন্ন করার কয়েক সপ্তাহ পরই এই মহড়া অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে এসব দেশের ওই অভিযোগ বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে এসেছে কাতার। ওইসব দেশের বক্তব্য, ব্রাদারহুড ‘চরমপন্থি’ সংগঠন। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করে।

এর প্রেক্ষাপটে কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক। দেশটির সঙ্গে সম্পর্ককে আরও গভীর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, কাতারের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদে’ সমর্থন দেয়ার অভিযোগ যদি সত্যিই হতো তবে তিনি তাতে ব্যক্তিগতভাবে হস্তক্ষেপ করতেন। এছাড়া কাতারের সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর সম্পর্ক ছিন্ন করার পরপরই দেশটিতে নির্মিত তুর্কি সেনাঘাঁটিতে সেনা মোতায়েনের অনুমোদ দেয় তাদের পার্লামেন্ট।

নিজ দল একেপির এক অনুষ্ঠানেও তিনি তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। কাতারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে নিতে সৌদি আরবের প্রতি অনুরোধ জানান এরদোয়ান। তার ভাষায়, ‘আমরা আমাদের কাতারি ভাইদের পরিত্যাগ করবো না। সৌদি প্রশাসনের কাছে আমার একটি বিশেষ অনুরোধ আছে। উপসাগরীয় অঞ্চলে আপনারা সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী রাষ্ট্র। আমরা আপনাদের পবিত্র স্থানগুলোর খাদেম বলি। আপনাদের বিশেষভাবে ভ্রাতৃত্বের জন্য কাজ করা উচিৎ, শত্রুতার জন্য নয়। ভাইদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য কাজ করতে হবে আপনাদের। দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম সৌদির কাছে আমরা এটাই প্রত্যাশা করি।’

প্রসঙ্গত, আরব দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, কাতার ইসলামপন্থিদের সহায়তার দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে মুসলিম ব্রাদারহুডের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ দেখিয়ে আসছে দেশগুলো। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই দলটি বর্তমানে নিষিদ্ধ। ব্রাদারহুড রাজতন্ত্রের বিরোধিতা করে এবং গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তাদের এই আদর্শকে হুমকি হিসেবে দেখে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো।

২০১২ সালে মিসরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ব্রাদারহুড নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এলেও ২০১৩ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। এরপর থেকে ব্রাদারহুড সমর্থকদের ওপর চালানো হয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর নির্যাতন। এতে সমর্থন দেয় সৌদি সরকার।

গো নিউজ২৪/ আরএস

এ সম্পর্কিত আরও সংবাদ


আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর