কারফিউ উপেক্ষা করে সাবজারের জানাজায় হাজারো কাশ্মীরি


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২৯, ২০১৭, ০৪:৩১ পিএম
কারফিউ উপেক্ষা করে সাবজারের জানাজায় হাজারো কাশ্মীরি

কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতা সাবজার আহমাদ ভাট ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হওয়ার পর উপত্যকাটিতে নতুন করে কারফিউ জারি করেছে ভারতীয় প্রশাসন। তবে কারফিউ উপেক্ষা করে নিহত ওই কাশ্মীরি নেতার জানাজায় উপস্থিত হয়েছে হাজারো মানুষ।

এর আগে শনিবার (২৭ মে) নিজের শহর কাশ্মীরের ত্রালে ভারতীয় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে এক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের প্রধান সাবজার আহমাদ ভাট। তার মৃত্যুর পর আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কাশ্মীর উপত্যকা। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে এক বেসামরিক নাগরিক। এছাড়া আহত হয়েছে কয়েক ডজন।

রোববার রমজানের প্রথম দিন থেকে সেখানে কারফিউ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। সাবজারের জানাজায় অংশ নিয়ে ভারতবিরোধী এবং স্বাধীনতার পক্ষে নানা স্লোগান দেন স্থানীয়রা। তারা ‘যাও ভারত, ফিরে যাও’ এবং ‘আমরা স্বাধীনতা চাই’ বলে স্লোগান দিয়ে রাজপথে নেমে আসে। ২৭ বছর বয়সী আবিদ আহমেদ নামের একজন জানান, লোকজন পায়ে হেঁটে বহুদূর থেকে সাবজারের জানাজায় এসেছে। তিনি নিজেও রাজধানী শ্রীনগর থেকে ত্রালে এসেছেন জানাজার উদ্দেশ্যে।

সাবজার ছিলেন কাশ্মীরের নিহত স্বাধীনতাকামী নেতা বুরহান ওয়ানির উত্তরসূরি। গত বছরের জুলাইতে বুরহানকে হত্যা করে ভারতীয় বাহিনী। এরপর থেকেই ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ চলছে কাশ্মীরে। তার মৃত্যুর পর হিজবুল মুজাহিদিনের প্রধান হন সাবজার।

এই সংগঠনটি ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইরত কাশ্মীরের সবচেয়ে বড় স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠি। ১৯৮৯ সালে উপত্যকাটিতে বিদ্রোহ শুরু হলে সশস্ত্র লড়াই শুরু করে হিজবুল মুজাহিদিন।

বুরহান ওয়ানির সঙ্গে সাবজার আহমাদ

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারতীয় উপমহাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ হয়ে আছে ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীর। দুই দেশই পুরো ভূখণ্ডটি দাবি করে। তবে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের বেশিরভাগ মানুষ হয় স্বাধীনতা চায়, না হয় পাকিস্তানের সঙ্গে থাকতে চায়।

তিন দশক ধরে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে কাশ্মীরের বিভিন্ন স্বাধীনতাকামী সংগঠন। গত বছর বুরহান নিহত হওয়ার পর থেকে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ শুরু হয় সেখানে। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে সেখানকার একটি ভারতীয় সেনাঘাঁটিতে এক বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলায় ১৮ সেনা নিহত হয়।

এরপর থেকে কাশ্মীরে অভিযান শুরু করে ভারত সরকার। এতে কাশ্মীরিদের মাঝে বিক্ষোভ আরো বেড়েছে। ইতিহাসে এই প্রথম ওই অঞ্চলের স্কুলগামী মেয়েরাও রাস্তায় নেমে এসেছে। সম্প্রতি কাশ্মীরের স্থানীয় নির্বাচনে ভোট পড়েছে মাত্র সাত শতাংশ। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ভারতের হাতছাড়া হতে যাচ্ছে কাশ্মীর। বর্তমানে এই এলাকায় ৫ লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে ভারত।

গো নিউজ২৪/ আরএস

এ সম্পর্কিত আরও সংবাদ


আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর