সেদিন রাতের ‍‍`আসল ঘটনা‍‍` শোনালেন লাদেনের স্ত্রী


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২৭, ২০১৭, ০৩:৫৯ পিএম
সেদিন রাতের ‍‍`আসল ঘটনা‍‍` শোনালেন লাদেনের স্ত্রী

জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর ঘটনা সবার জানা। যুক্তরাষ্ট্র সরকার, বিশেষ বাহিনী নেভি সিল ও গোয়েন্দা সংস্থা বারবার বর্ণনা দিয়েছে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে বিপুল আলোচিত শীর্ষ এই সন্ত্রাসীকে।

তবে এবারই প্রথম লাদেনের পরিবারের সদস্য শোনালেন, কীভাবে সেদিন হত্যা করা হয়েছিল তাঁকে।

ওসামা বিন লাদেনের জীবনের ওপরে একটি বই লিখছেন ক্যাথি স্কট ক্লার্ক ও আদ্রিয়ান লেভি। তাঁদের কাছেই সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন লাদেনের সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী আমাল। আমালের ওই স্মৃতিচারণা তুলে ধরা হয় যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদপত্র দ্য সানডে টাইমসে।

জবানবন্দিতে আমাল জানান, পাকিস্তানের আবোটাবাদ শহরের একটি বাড়িতে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন লাদেন।  প্রায় ছয় বছর ধরে সেখানে ছিলেন তাঁরা। ২০১১ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একটি ব্লাক হক হেলিকপ্টার উড়ে আসে। তখন স্বামীর মুখে ভয়ের ছাপ দেখেছিলেন বলে জানান আমাল।

সেনাসদস্যরা যখন বাড়ির দিকে আসছিল লাদেনের তিন স্ত্রী তাদের সন্তানদের নিয়ে বাড়ির উপর তলায়  চলে যান এবং প্রার্থনা করতে থাকেন।  লাদেন তখন তাদের নিচ তলায় চলে আসতে নির্দেশ দেন। বলেন, ‘তারা আমাকে চায়, তোমাদের না।’ এরপর স্বামীর কাছে সন্তান হুসেইনকে নিয়ে থেকে যান আমাল।

এদিকে ততক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের নেভি সিল সদস্যরা বাড়ির ভেতরে ঢুকে লাদেনের ছেলে খালিদকে হত্যা করেছে। পথে তাদের সঙ্গে লাদেনের অপর দুই মেয়ে সুমাইয়া ও মিরিয়ামের দেখা হয়। তাঁদেরই কেউ একজন সেনাসদস্যদের বাড়ির ‘নিরাপদ স্থানটি’ অর্থাৎ লাদেনের লুকানোর জায়গাটি চিনিয়ে দেয়।

একপর্যায়ে সেনা সদস্যরা লাদেনের ঘরে প্রবেশ করে। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন আমাল ও হুসেইন। সে সময় আমাল তাদের বাধা দিতে গেলে তাঁর পায়ে গুলি করে সামনের দিকে এগিয়ে যায় সেনারা। একটু ধাতস্থ হয়ে লাদেনের কাছে যান আমাল। কিন্তু ততক্ষণে গুলিতে মৃত্যু হয়েছে লাদেনের। মায়ের পাশে বসে বাবার হত্যাকাণ্ড দেখেছিল শিশুপুত্র হুসেইন।

স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আমাল বলেন, লাদেনকে হত্যার পর সেনা সদস্যরা তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী খাইরিয়াহ ও দুই মেয়ে সুমাইয়া ও মিরিয়ামকে তাঁর লাশের পাশে নিয়ে যায়। তারপর লাদেনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। শনাক্তকরণ শেষে লাশ নিয়ে চলে যায় নেভি সিল সদস্যরা।

আমাল জানান, ওই বাড়িতে হামলা হতে পারে সে কথা চিন্তাই করেননি লাদেন। এজন্য তাঁর কোনো পূর্ব-পরিকল্পনাও ছিল না। আর স্বামীর জীবনের শেষ মুহূর্তের ওই বিভীষিকা নিয়ে তারা কোনোদিন আলোচনাও করেননি। 

 

গো নিউজ২৪/আ ফ ম 

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর