বনানী থেকে আটক সম্রাট, বিমানবন্দর গিয়েও পারেননি পালাতে!


নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯, ০৬:০৯ পিএম
বনানী থেকে আটক সম্রাট, বিমানবন্দর গিয়েও পারেননি পালাতে!

জুয়ার আসরকে ক্যাসিনোতে উন্নীত করার মূল নায়ক ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট আটক হয়েছেন। গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গতকাল (শুক্রবার) রাজধানীর বনানী এলাকার একটি বহুতল ভবন থেকে তাকে আটক করে। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন। এ নিয়ে আজ একটি জাতীয় দৈনিক সংবাদও প্রকাশ করেছে।

গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে দৈনিকটি জানিয়েছে, যুবলীগের আলোচিত-সমালোচিত প্রভাবশালী নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট চলমান ক্যাসিনো-জুয়াবিরোধী অভিযানের শুরু থেকে তাদের নজরদারির মধ্যেই ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও চালিয়েছিলেন। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে তিনি দেশ থেকে পালাতে পারেননি।

আরো পড়ুন<<>>সম্রাট গ্রেফতার কিনা জানা যাবে শিগগিরই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি পৌঁছেও তিনি ফিরে আসতে বাধ্য হন। পরে কাকরাইলে ভূঁইয়া ম্যানশনে ব্যক্তিগত কার্যালয়ে টানা ৬ দিন অবস্থান করেন। আর পাহারায় বসান শতাধিক যুবককে। সেখান থেকে গত রোববার তিনি বনানীর ডিওএইচএস এলাকার একটি বাসায় অবস্থান করছিলেন। সর্বশেষ সেখান থেকেই তাকে আটক করা হয়েছে।

সংবাদে বলা হয়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা দৈনিকটির প্রতিবেদককে বলেন, ‘যুবলীগ নেতা সম্রাট আমাদের নজরদারির মধ্যেই আছেন। তাকে আটকের বিষয়টি এখনই প্রকাশযোগ্য নয়। সবুজ সংকেত পেলেই তার বিষয়টি প্রকাশ করা হবে।’

এদিকে সম্রাটের গ্রেফতারের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লে শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, সম্রাট গ্রেফতার কিনা তা শিগগিরই জানা যাবে। 

সূত্র জানায়, যুবলীগের প্রভাবশালী এই নেতা আটক বা গ্রেফতার এড়াতে ক্ষমতাসীন দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করে আসছিলেন। হাইকমান্ডের সঙ্গে তিনি দফায় দফায় কথাও বলেছেন। তার কাছ থেকে সুবিধা নেওয়া প্রভাবশালীচক্র এক্ষেত্রে মাধ্যম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিল। তবে শেষ পর্যন্ত দলের হাইকমান্ড থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই সম্রাটকে আটকের সিদ্ধান্ত নেয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (সদ্য বহিষ্কৃত) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ওরফে ক্যাসিনো খালেদ গ্রেফতার হওয়ার পরই ভড়কে যান সম্রাট। যেকোনো মূল্যে গ্রেফতার এড়াতে শুরু করেন নানা মহলে লবিং। তিনি দলীয় হাইকমান্ডকে দফায় দফায় বুঝাতে চেয়েছেন দলের প্রতি তার অবদানের কথা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।

দৈনিকটির ঐ সংবাদে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আরো বলা হয়, যুবলীগ নেতা সম্রাট গোয়েন্দা হেফাজতেই আছেন। এর আগে গ্রেফতার হওয়া যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও গোলাম কিবরিয়া শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। আর ওই দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে সম্রাট দম্পতির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সম্রাটের আর্থিক লেনদেনের বিষয়টির চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সরকারের কয়েকটি সংস্থা। আর তাকে জড়িয়ে ক্যাসিনো বিষয়ক তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।

গো নিউজ২৪/আই

সংবাদপত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর