ভাড়াটিয়াদের ফরমে যে সকল তথ্য জানাতে হবে


নিজস্ব প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০২০, ০১:৩৫ পিএম
ভাড়াটিয়াদের ফরমে যে সকল তথ্য জানাতে হবে

সকাল সাড়ে ৯টা। রাজধানীর নিউ মার্কেট থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষের একটি বেঞ্চে বসে রয়েছেন মধ্যবয়সী দুই ব্যক্তি। তাদের চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। এদিক-সেদিক তাকাচ্ছেন। কিছুক্ষণ আগেই তাদেরকে আইয়ুব আলী কলোনির দুটি বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।

এ সময় বয়স্ক আরেক ভদ্রলোককে হন্তদন্ত হয়ে থানায় প্রবেশ করতে দেখা যায়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে প্রবেশ করে কুশল বিনিময় করে ওই দুজনকে আটক করে নিয়ে আসার কারণ জানতে চান। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে থানা এলাকার বিভিন্ন ফ্ল্যাট ও মেসসহ বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহে অভিযান চলছে। কিছুদিন আগে এলাকার বাড়িতে বাড়িতে তথ্য সংগ্রহের জন্য ফরম বিতরণ করে আসা হয়। তাদেরকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফরম পূরণ করে থানায় জমা দিতে বলা হয়। এই দুই ব্যক্তি (মেস ম্যানেজার) ফরম নিলেও জমা না দেয়ায় আজ তাদেরকে আটক করে আনা হয়।

তবে তাদেরকে হাজতে রাখা হয়নি। বাড়ির মালিককে তিনদিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সকল ভাড়াটিয়ার তথ্য থানায় জমা দেয়ার পরামর্শ দিয়ে তার জিম্মায় দুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়।

নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম কাইয়ুম বলেন, ‘থানা এলাকায় প্রতিটি বাড়ির ভাড়াটিয়াদের বিশেষ করে মেসে থাকা ভাড়াটিয়াদের সঠিক তথ্য-উপাত্ত থানায় জমা দেয়ার জন্য বাড়ির মালিকদের কাছে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ফরম পৌঁছে দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনেকেই হেলাফেলা করে ফরম পূরণ করে জমা দিচ্ছেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহে অভিযান চলছে। যাদের বাড়ির ভাড়াটিয়াদের তথ্যে পাওয়া যাচ্ছে না, তাদেরকে আটক করে কিংবা সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ফরম পূরণ করে জমা দিতে বলা হচ্ছে। যারা বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে জমা দেবে না তাদের বিরুদ্ধে আাইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

থানা এলাকার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বদা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে ওসি এস এম কাইয়ুম বলেন, নিয়মিত তথ্য দিয়ে সহায়তা করলে কোনো অপরাধী গোপনে লুকিয়ে থেকে অপরাধ করতে পারবে না। কিন্তু তথ্য না পাওয়া গেলে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায়। বাড়িতে নতুন কোনো সদস্য এলে বা কেউ চলে গেলে সে তথ্যও তাদেরকে জানাতে হবে বলে তিনি জানান।

ফরমে যে সকল তথ্য জানাতে হবে

২০০৮ ও ২০০৯ সালে রাজধানীর মিরপুর ও কদমতলী এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি বাসা থেকে জেএমবি জঙ্গিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসে জঙ্গিরা পরিচয় গোপন করে বাড়ি ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। পরে ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহে পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ফরম সরবরাহ করা হয়। ওই ফরমে ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, জন্মতারিখ, পেশা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, মোবাইল ফোন নম্বর, ছবি ও আঙুলের ছাপ, পরিবার বা মেসের সদস্য সংখ্যা, গৃহকর্মী ও গাড়ি চালকের নাম (যদি থাকে), পূর্ববর্তী বাড়ির মালিকের নাম, বাসা ছাড়ার কারণসহ ১৭ ধরনের তথ্য চাওয়া হয়। এছাড়া ভাড়াটিয়া ব্যক্তিকে চেনে-জানে এমন দুজন শনাক্তকারীর ও তার আগের ভাড়া বাড়ির মালিকের ফোন নম্বরসহ নাম-ঠিকানা যুক্ত করার বিধান জুড়ে দেয়া হয়।

গোনিউজ২৪/এন

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর