বয়স ৬ হলেই নাগরিক নিবন্ধন, মিলবে জাতীয় পরিচয়পত্র!


নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুন ২২, ২০১৯, ০৭:৪০ পিএম
বয়স ৬ হলেই নাগরিক নিবন্ধন, মিলবে জাতীয় পরিচয়পত্র!

‘৬+ নাগরিক নিবন্ধন কর্মসূচি’ গ্রহণের চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এ সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কমিশন এ কর্মসূচির অনুমোদন দিলে ছয় বছর থেকে সব বয়সী নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তথ্য সংগ্রহ শেষে সবাইকে দেওয়া হবে জাতীয় পরিচয়পত্র।

ছয় বছর থেকে যাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে ১৮ বছর বয়স হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তারা ভোটার হয়ে যাবেন। তথ্য সংগ্রহের এই প্রক্রিয়া শেষ হলে প্রায় ৮৫ শতাংশ নাগরিকের তথ্য থাকবে ইসির কাছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দ্রুতই একটি খসড়া কমিশন সভায় তোলা হবে। ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি) এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি খসড়া তেরি করেছে বলে জানা গেছে।

ইসি ও এনআইডি সূত্রে জানা গেছে, এই প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে দেশের ৬৪ জেলায় স্কুল-কলেজ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। পরে দ্বিতীয় ধাপে সারা দেশের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা গেলে নতুন করে তিন কোটিরও বেশি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। বছরজুড়েই এই কার্যক্রম চালাবে অনুবিভাগ। এটি সফল হলে দেশের সব নাগরিকের তথ্য একই ভাণ্ডারে সংরক্ষিত থাকবে। তথ্য সংগ্রহ শেষ হলে সবাই একটি নির্দিষ্ট পরিচিতি নম্বর পাবে।

সূত্র আরো জানায়, কমিশন এরই মধ্যে ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ চায়, চলতি বছর থেকে যাদের বয়স ছয় বছর হবে তাদের থেকে শুরু করে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করার। সেজন্য তারা সব প্রস্তুতি নিয়ে সামনে এগুচ্ছে। দ্রুতই বিষয়টি কমিশন সভায় তুলবে তারা। সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে কাজ শুরু করবে। ৬-১৮ বছর বয়সীদের তথ্য সংগ্রহ শেষ হলে শূন্য থেকে ৬ বছর বয়সীদেরও তথ্য সংগ্রহ করবে ইসি।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের ‘৬+ নাগরিক নিবন্ধন কর্মসূচি’ সংক্রান্ত খসড়াতে তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে পাইলট কার্যক্রম নেওয়া হবে। দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আছে এমন ১২টি বিদ্যালয় বাছাই করে সেখানেই তাদের নিবন্ধন করা হবে। সেটি সফল হলে ৬৪টি জেলার ৬৪টি থানায় একযোগে নিবন্ধন কার্যক্রম চালানো হবে। একই প্রক্রিয়ায় ওই বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড বা থানার অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর ঝরে পড়া শিশুদের তথ্য সংগ্রহ করতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে কার্যক্রম চালানো হবে।

খসড়ায় আরো বলা হয়েছে, এই তথ্য সংগ্রহের পরও যারা বাদ যাবে তারা সারা বছর উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে তথ্য নিবন্ধন করতে পারবে। নিবন্ধনের সময়ে জন্মসনদ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পঞ্চম শ্রেণি/এবতেদায়ি সমাপনী সনদ অথবা অষ্টম শ্রেণির সনদ এবং মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা নেওয়া হবে। আর যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় না, তাদের নিবন্ধিত হতে জন্মসনদ ও মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে।

রোহিঙ্গা শিশুরা যাতে নিবন্ধন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে না পারে সেজন্য প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা ও ভারতীয় নাগরিক অধ্যুষিত উপজেলাগুলোকে বিশেষ এলাকা ঘোষণা করা যেতে পারে। ওই সব এলাকার জন্য বিশেষ ফরম ও বিশেষ কমিটি গঠন করা যেতে পারে। ওই কমিটি যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিবন্ধন করবে।

গো নিউজ২৪/আই

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর