বাবার লাশের অপেক্ষায় দুই যমজ শিশু


নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯, ০৪:১০ পিএম
বাবার লাশের অপেক্ষায় দুই যমজ শিশু

এইচ এম কাওসার আহমেদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। কাজ করতেন চুড়িহাট্টায় এক ফার্মেসিতে। প্রতিদিনের মতো গতকালও গিয়েছেন কাজে। কিন্তু ভয়াবহ আগুন তাকে কেড়ে নিয়েছে। 

চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ আগুনে তার মৃত্যু হয়েছে। কওসার আহমেদের ৪ মাস বয়সের ২ বাচ্চা মর্গে স্বজনদের কোলে। স্বজনদের সঙ্গে তারা অপেক্ষায় রয়েছে বাবার মৃতুদেহের জন্য।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে মরদেহ হস্তান্তর শুরু করে ঢাকা জেলা প্রশাসন।

এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ শনাক্ত করা গেছে বলে জানা গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, এখন পর্যন্ত কলেজ ও হাসপাতালের দুই মর্গে মোট ৮১টি মরদেহ রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে আমাদের ৬৭টি ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অনেক ব্যাগেই রয়েছে একাধিক মরদেহ। সব মিলিয়ে এসব ব্যাগ থেকে পাওয়া ৭০টি মরদেহ রাখা হয়েছে ঢামেক মর্গে। এর বাইরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রাখা হয়েছে ১১টি মরদেহ।

ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, যে ৮১টি মরদেহ আমরা পেয়েছি, এর মধ্যে ৪১টি মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। বাকি মরদেহগুলো এতটাই পুড়ে গেছে যে সেগুলো সরাসরি শনাক্ত করার অবস্থায় নেই। সেগুলোকে ফিংগারপ্রিন্ট বা ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে।

পরিচয় শনাক্ত হওয়া নিহতরা হলেন- রাজু (৩০), তার ভাই মাসুদ রানা (৩৫), সিদ্দিকুল্লাহ (৪৫), আব বকর সিদ্দিক (২৭), আলী মিয়া (৭৫), মোশাররফ হোসেন (৩৮), কামাল হোসেন (৫২), ইয়াসিন খান রনি (৩২), জুম্মন (৬৫), এনামুল হক (২৮), মজিবর হাওলাদার (৪৫), মুফতি ওমর ফারুক (৩৫), মোহাম্মদ আলী (৩২) ও তার ভাই আবু রায়হান (৩১), তার ছেলে আরাফাত (০৩), ইমতিয়াজ ইমরোজ (২৪), হেলাল (৩০), ওয়াফিউল্লাহ (২৫), সোনিয়া (২৮), স্বামী মিঠু (৩৫), তাদের ছেলে শাহিদ (০৩), রহিম দুলাল (৪৫), হিরা, নাসির, মঞ্জু, আনোয়ার, কাওচার, শায়লা খাতুন, আরমান হোসেন রিমন, মামুনুর রশীদ, আবু তাহের, রুবেল হোসেন, সৈয়দ সালাউদ্দিন, মুসা, ইলিয়াস মিয়া, মিজানুর, আসিফ, মো. হোসেন বাবু, খলিলুর রহমান সিরাজ, নূর ইসলাম হানিফ, নবীউল্লাহ খান।

এদিকে মরদেহের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ঢামেকে সেগুলোর স্থান সংকুলান সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মর্গে ১২টি, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে ১০টি ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেও ছয়টি মরদেহ পাঠানো যাবে। এর বাইরে অন্যান্য হাসপাতালগুলোতেও যতগুলো সম্ভব মরদেহ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেগুলো শনাক্তের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গো নিউজ২৪/আই

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর