প্রধানমন্ত্রীর কাছে উচ্চ শিক্ষিত দৃষ্টিহীন দম্পতির আবেদন


নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০১৮, ০৫:৩১ পিএম
প্রধানমন্ত্রীর কাছে উচ্চ শিক্ষিত দৃষ্টিহীন দম্পতির আবেদন

ঢাকা : ২০১৪ সাল থেকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন করতে করতে এখন ক্লান্ত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শাহিদা আফরোজ মিম এবং মো. রফিকুল ইসলাম দম্পতি।  নানান প্রতিকূলতার মাঝেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করা এই দম্পতির পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। একমাত্র শিশু সন্তানের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার তুলে দিতেই হিমশিম খেতে হচ্চে তাদের। 

তিন বছর বয়সে টাইফয়েড হয়েছিল মো. রফিকুল ইসলামের। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দিনদিন চোখের দৃষ্টি কমতে থাকে। একসময় সবকিছুই অন্ধকার হয়ে গেল। তবে হার মেনে নেননি তিনি। গাজীপুরের নীলের পাড়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে এ মাইনাস-গ্রেড নিয়ে এসএসসি, শহীদ এম মনসুর আলী কলেজ থেকে এ-গ্রেড নিয়ে এইচএসসি পাস করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিটিক্যাল সাইন্সে অনার্স করেছেন তিনি। বিয়ে করেছেন ২০১১ সালে ঢাকায় এসে।

রফিকের স্ত্রীর স্ত্রী শাহিদা আফরোজ মিমের জন্ম চাঁদপুরের হাইমচরে। শৈশব কাটে ঢাকার মিরপুরে। তিন বছর বয়সে হাম হয়েছিল। এরপর থেকেই চোখে দেখেন না। শুধু লাইট জ্বললে-বন্ধ করলে বুঝতে পারেন। মিরপুরের আইডিয়াল গার্লস কলেজ থেকে এ-মাইনাস নিয়ে এসএসসি আর বেগম বদরুন্নেসা কলেজ থেকে বি-গ্রেড নিয়ে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স করেন। 

এরপর এ বন্ধুর মাধ্যমে তাদের পরিচয়, প্রেম-ভালোবাসা, অতঃপর বিয়ে করেন দুজনে। তাদের অন্ধকার জীবনের আলো ফেরাতে পৃথিবীতে এনেছেন ফুটফুটে এক ছেলে সন্তান। চার বছর বয়সী সেই সন্তানই এখন দৃষ্টিহীন বাবা-মায়ের ‘অন্ধের যষ্টি। তবে তাকে নিয়েই এখন তাদের যত চিন্তা। সন্তানকে যে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু কীভাবে? দুবেলা দুমুঠো ভাত জোগাড় করতে গিয়েই তো হিমশিম খেতে হচ্ছে। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও চাকরি নামের সোনার হরিণের দেখা যে এখনও মেলেনি।

এই দম্পতি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ পরীক্ষা দিয়েছেন অনেক ব্যাংকে। ফলাফল শূন্য। চাকরি পাননি। কোনোটাতে লিখিত পরীক্ষা টপকাতে পারেননি আবার কোনোটাতে মৌখিকে গিয়ে হোঁচট। ঢাকার কোনো দফতরে নেই তাদের কোনো ‘মামা-চাচা’। তাই হচ্ছে না চাকরি। 

বর্তমানে আত্মীয়-স্বজনের আর্থিক সাহায্যে কোনোমতে চলছে তাদের পরিবার। এমন অবস্থায় একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী বরাবর। কিন্তু কোনোভাবেই চিঠিটা তার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি। একজনের পরামর্শে স্থানীয় সংসদ সদস্যের স্বাক্ষর নিয়েও পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন, গিয়েছেন গণভবনেও কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিতে পারেননি চিঠিটা।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লেখা মিমে চিঠি-

গো নিউজ২৪/আই

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর