দুর্ভাগ্য তাদের, একটি মাত্র ভুলেই সব শেষ...


নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮, ০৪:৩০ পিএম
দুর্ভাগ্য তাদের, একটি মাত্র ভুলেই সব শেষ...

ঢাকা : ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহেরু বলেছিলেন, একজন রাজনীতিবিদের সারা জীবনের অর্জন শেষ হয়ে যেতে পারে মাত্র একটি ভুল সিদ্ধান্তে। আসলেই তাই। নিচে এরকমই কয়েকজন নেতার কথা আরোকপাত করা হলো। জীবনে একটি মাত্র ভূল সিদ্ধান্ত তাদের সকল অজর্নকে ম্লান করে দিয়েছে।  

আওয়ামী লীগে তারা ব্যাপক সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। দলের প্রধানের স্নেহধন্য এবং আস্থাভাজন হয়েছিলেন। তাদের ভাবা হতো আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত নেতা। কিন্তু ভ্রান্ত রাজনীতি আর ভুল সিদ্ধান্তের কারণে তাঁরা দলে অপাংক্তেয়, দলীয় প্রধানের আস্থাও হারিয়েছেন। এরা ড. কামাল, মোস্তফা মোহসীন মন্টু কিংবা মাহামুদুর রহমান মান্নার মতো আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেননি। কিন্তু দলে তাঁরা গুরুত্বহীন। কারও কারও মতে এরা অনাহুত। এই সব পরিত্যক্ত আওয়ামী লীগারদের ভবিষ্যত কী?

পরিত্যক্ত, গুরুত্বহীন এবং অনাহুত তালিকায় প্রথম নামটি আসে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের। ৭৫ এর পর প্রথম ছাত্রলীগ নেতা ডাকসুর ভিপি হয়ে তিনি পাদপ্রদীপে এসেছিলেন। শেখ হাসিনার কাছের মানুষ হতেও তাঁর সময় লাগেনি। ছাত্রলীগে তাঁকে তোফায়েল আহমেদের পর সফল নেতা ভাবা হতো। ওয়ান-ইলেভেনের সময় তাঁর কি হলো, তা তিনিই ভালো জানেন। যে নেত্রী তাঁকে নতুন উচ্চতায় নিয়েছিলেন, সেই নেত্রীকে মাইনাস করার খায়েস জাগল তাঁর। এখন শেখ হাসিনা তাঁকে দেখেও দেখেন না। আওয়ামী লীগে তিনি থেকেও নেই। এবার নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করছেন। সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের মতো ডাকসাইটে ছাত্রনেতা এখন আওয়ামী লীগে সাইড লাইনে।

অনেকেই মুকুল বোসকে মনে করতেন ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ৭৫ এর পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগকে সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ৮১ সালে এক প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিবেশে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে, যে ক’জন তরুণ তাঁকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেন, তাঁদের একজন ছিলেন মুকুল বোস। মুকুল বোস ২০০৭ এর ওয়ান ইলেভেনের সময় পাগল হয়ে গেলেন। যে নেতা তাঁকে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করল সেই নেতার সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করলেন। এখন দলের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য হয়ে আছেন। দলে তাঁকে ‘মেয়াদোত্তীর্ণ নেতা’ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়। মুকুল বোস নিজেও জানেন আওয়ামী লীগে তাঁর ভবিষ্যত নেই। 

দলে বিপুল অজনপ্রিয় হলেও শুধু শেখ হাসিনার প্রশ্রয়েই ছাত্রলীগ নেতা হয়ে উঠেন আবদুল মান্নান। বিএনপির ঘাঁটি বগুড়ার একমাত্র আওয়ামী ফুল হিসেবে, ছাত্রলীগ থেকে আওয়ামী নেতৃত্বে আসতেও তাঁর সময় লাগেনি। শুধু নেতা কর্মী নয়, সাধারণ মানুষের সঙ্গেও দুর্ব্যবহারের জন্য আলোচিত আব্দুল মান্নান। কিন্তু তারপর শেখ হাসিনার আশীর্বাদে তাঁর রাজনীতি উন্নয়নের গ্রাফ তরতর করে উঠতে থাকে। সুলতান মনসুর বা মুকুল বোসের মতো তাঁর নির্বাচনের টিকিট হাতছাড়া হয়নি বটে, তবে দলে তাঁকে মীরজাফরই ডাকা হয়। কারণ একটাই ওয়ান ইলেভেনে বিতর্কিত ভূমিকা। অনেক কসরত করেও শেখ হাসিনার ধারে কাছে ঘেঁষতে পারেননি।

জাসদ-বাসদ ছেড়ে আওয়ামী লীগে এসেছিলেন তুখোড় ছাত্রনেতা আখতারুজ্জামান। শেখ হাসিনাও এই ছাত্র নেতার অভিজ্ঞতাকে দলে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন। এক লাফে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও মান্নার পথেই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মৃত্যু কামনা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য আখতারুজ্জামানের, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মৃত্যু হয়নি বরং তাঁর রাজনৈতিক জীবন কোমায় চলে গেছে। কালীগঞ্জ থেকে মনোনয়ন পাননি। দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন, না থাকার মতো করেই।

গো নিউজ২৪/আই

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর