রাণী এলিজাবেথের সঙ্গে সর্বক্ষণ থাকে যে ১১ বস্তু!


নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০১৮, ০৬:১৬ পিএম
রাণী এলিজাবেথের সঙ্গে সর্বক্ষণ থাকে যে ১১ বস্তু!

ঢাকা : ভ্রমণের সময়ে আমাদের সাথে অবশ্যই থাকে ছোট-বড় কিছু ব্যাগ। গন্তব্য এবং সেই গন্তব্যে কতদিন থাকা হবে তার ওপরে নির্ভর করে ব্যাগে কমবেশি জিনিস নেওয়া হয়। তবে কিছু কিছু জিনিস আমরা নিতে ভুলি না। কেউ কেউ প্রিয় সানগ্লাস ছাড়া ভ্রমণের কথা ভাবতেই পারেন না। কেউ বেড়াতে যাবার জন্য আলাদা করে রাখেন এক জোড়া জুতো। আবার কারো ট্রাভেল ব্যাগে থাকে কয়েকটা বই।

কখনো কি ভেবেছেন, বিখ্যাত মানুষগুলোর ট্রাভেল ব্যাগে কী থাকে? জেনে অবাক হবেন, যুক্তরাজ্যের রাণী এলিজাবেথ খুব সচেতন তার ট্রাভেল ব্যাগ নিয়ে। কোথাও বেড়াতে যাবার সময়ে তিনি অবশ্যই ১১টি জিনিস রাখেন সাথে। চলুন দেখে নিই এগুলোকে-

জেট ল্যাগের ওষুধ
যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে তিনিই রাজপরিবারের সেই সদস্য যিনি সবচাইতে বেশী ভ্রমণ করেন। ঘন ঘন ভ্রমণ করার কারণে তার জেট ল্যাগ হতে দেখা যায় খুব। জেট ল্যাগ এড়াতে তিনি ব্যবহার করন কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধ। এর মাঝে আছে বার্লি সুগারের কিছু ক্যান্ডি। এগুলো খাবার ফলে গন্তব্যে পৌঁছে তার শরীর ওই এলাকার সময়ের সাথে মানিয়ে নেয় বলে তিনি মনে করেন।

এক সেট কালো পোশাক
সাধারণত বিশেষ কোন দাওয়াতে অন্যদের মুগ্ধ করতে পাশ্চাত্যের নারীরা কালো পোশাক পড়ে থাকেন। রাণীর ক্ষেত্রে কিন্তু ব্যাপারটা তেমন নয়। এর পেছনে একটি ইতিহাস রয়েছে। রাণীর পিতা যখন মারা যান, তখন তিনি ছিলেন কেনিয়াতে। তার সাথে শোকের কালো পোশাক ছিল না। এ কারণে ইংল্যান্ডে পৌঁছে বিমানের ভেতরেই তিনি অপেক্ষা করেন। তার জন্য কালো পোশাক নিয়ে আসার পর তা পরিধান করেই তিনি বিমান থেকে বের হন। এ ধরণের সমস্যা যেন আর না হয় তার জন্য এখন রাজ পরিবারের সবাই ভ্রমণের সময়ে এক সেট কালো পোষাক সাথে রাখেন।

টয়লেট পেপার
শুনে অবাক হচ্ছেন? টয়লেট পেপার তো সবখানেই পাওয়া যায়। তারপরেও রাণী এলিজাবেথ নিজের ব্যবহারের টয়লেট পেপার সাথে নিয়েই যান ভ্রমণের সময়ে। ২০ বছর ধরে রাজপরিবারের ভ্রমণের খবর নিয়ে চলা একজন রিপোর্টার জানান, রাণীর এই টয়লেট পেপার বিশেষ একটি স্টিকার দিয়ে আটকানো থাকে, যা শুধু রাণী বা যুবরাজ ফিলিপের খোলার অধিকার আছে।

রক্ত
রাণী এলিজাবেথের সাথে সবসময়েই একজন ডাক্তার থাকেন। ইমার্জেন্সির সময়ে দরকারি সব যন্ত্র সাথে রাখেন তিনি। কিছু কিছু দেশে রক্তদান নিয়ে সমস্যা হতে পারে, এ কারণে সবসময়েই সাথে রাণী এলিজাবেথ এবং যুবরাজ ফিলিপের জন্য রক্ত থাকে সেই ডাক্তারের কাছে।

কয়েক ডজন পোশাক
জানা যায়, অন্তত ৩০টি পোশাক ছাড়া ভ্রমণ করেন না রাণী। প্রতিটিই একদম নিখুঁতভাবে আলাদা আলাদা ব্যাগে প্যাক করা থাকে।

মিষ্টি খাবার
রাণী চা পান করতে এতই পছন্দ করেন, যে বিমানে থাকলেও তার ব্যতিক্রম হয় না। তিনি চায়ের সাথে বিভিন্ন প্যাস্ট্রি খেতে পছন্দ করেন। ১৫ বছর ধরে রাণীর পাচক ছিলেন ড্যারেন ব্র্যাডি। তিনি জানান, রাণীর সবচাইতে প্রিয় ছিল এক ধরণের চকলেট বিস্কুট কেক। এর একটি স্লাইস কম পড়লেও তিনি লক্ষ্য করতেন। আর খাবার পর কিছুটা অবশিষ্ট থাকলে সেটাও সাথে করে নিয়ে নেন তিনি।

এক দল সৈন্য-সামন্ত
রাণী একা ভ্রমণ করবেন? তাও কী হয়? ভ্রমণে গেলে তার সাথে ৩৪ জন পর্যন্ত দলবল থাকে যারা রাণীর বিভিন্ন কাজের দায়িত্বে থাকেন। টেলিগ্রাফ থেকে জানা যায়, তার সাথে ছয়জন সেক্রেটারি, আটজন বডিগার্ড, পোশাক পরতে সাহায্য করার দুজন সেবিকা, আরো দুজন সেবিকা থাকে।

নিজের খাবার এবং পানি
রাণী যেখানেই যান না কেন, তার জন্য বিদেশি শেফরা এমনভাবে খাবার তৈরি করে যাতে তার সমস্যা না হয়। এরপরেও নিরাপত্তার খাতিরে রাণীর জন্য ব্রিটিশ খাবার এবং বোতলজাত পানি নিয়ে নেওয়া হয়।

বিশেষ কিছু স্যুটকেস
রাণী এলিজাবেথ পোশাকের ক্ষেত্রে যেমন বিশেষ একটি স্টাইল বজায় রাখেন, লাগেজের ক্ষেত্রেও তাই। যুবরাজ ফিলিপের সাথে হানিমুনের সময়ে ১৯৪৭ সালে একসেট গ্লোব-ট্রটার স্যুটকেস কেনেন তিনি। এখনো পর্যন্ত সেই লাগেজই তিনি ব্যবহার করে চলছেন।

বিশেষ লাগেজ ট্যাগ
রাজপরিবার ভ্রমণের জন্য প্রাইভেট জেট ব্যবহার করেন। তাই সাধারণ বিমানের আরোহীর মত লাগেজ ট্যাগ তাদের দরকার হয় না। রাণীর ব্যাগগুলোর সাথে লাগানো ট্যাগে শুধুই লেখা থাকে ‘দি কুইন’। রাণী এলিজাবেথ এবং কেট মিডলটনের এই ট্যাগের রং হলুদ, যুবরাজ উইলিয়াম এবং চার্লসের ট্যাগ লাল, রাজপুত্র জর্জেরটা নীল, আর রাজকন্যা অ্যানেরটা হলো সবুজ।

গরম পানির ব্যাগ
রাবারের তৈরি গরম পানির ব্যাগ অনেকেই চেনেন। শীতকালে বা শরীরের ব্যথা কমাতে এই ব্যাগের ভেতরে পানি ভরে সেঁক দিলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। খুব সাধারণ এই জিনিসটি রাণী এলিজাবেথও পছন্দ করেন। ঘুমানোর সময়ে বিছানায় এই গরম ব্যাগ রাখলে তার ঘুম ভাল হয়। এ কারণে তিনি সাথেই রাখেন একটি করে গরম পানির ব্যাগ।

যে জিনিসটি তিনি সাথে রাখেন না
ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটের আগে সবচাইতে জরুরী কোন জিনিসটি? অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট! কিন্তু আপনি কি জানেন, রাণীর সাথে কোন পাসপোর্ট থাকে না! পাসপোর্টের বদলে তাকে বয়স, স্থায়ী ঠিকানা এমন কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয় কেবল।

গো নিউজ২৪/আই

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর