দুনিয়া কাঁপানো ৮টি ছবি


এক্সক্লুসিভ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২৫, ২০১৭, ১০:০৬ পিএম
দুনিয়া কাঁপানো ৮টি ছবি

তিন বছরের শিশু আয়লানের ছবি দেখে এখনো অনেকে কেঁদে ফেলেন৷ সিরীয় এই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু ভীষণ নাড়া দিয়েছে বিশ্ববাসীকে৷ ছবিঘরে থাকছে এমন আটটি ছবির কথা, যে ছবিগুলো অতীতে একইভাবে বিশ্বময় আলোড়ন তুলেছিল।


নিজের কাপড় ছিঁড়ে বেঁচেছিল মেয়েটি

নাপাম বোমার আঘাতে দক্ষিণ ভিয়েতনাম তখন কেঁপে উঠেছে৷ ৯ বছরের ফান থি কিম পুক কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখলো সবাই পাগলের মতো ছুটছে৷ নিজে ছুটতে শুরু করার আগেই দেখে গায়ের জামাকাপড়ে আগুন৷ আগুন নেভানোর চেষ্টা করে কাজ হলো না, বুদ্ধি করে নিজের কাপড় ছিড়ে ফেলে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়াতে শুরু করলো৷ ৯ বছরের মেয়েটির ছবিও বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তুলেছিল৷ এ ছবির জন্য ১৯৭৩ সালে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন ফটোগ্রাফার নিক উট।

কাঁটাতারে শুমান

জার্মানি তখন সবে আলাদা হয়েছে, দু দেশের মাঝখানে গড়া শুরু হয়েছে প্রাচীর৷ পূর্ব জার্মানির সৈন্য কনরাড শুমান সেই সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁটা তারের বেড়া ডিঙিয়ে চলে আসেন পশ্চিম জার্মানিতে৷ ১৯৬১ সালের আগস্ট মাসের এই ছবিটিও সবার হৃদয় ছুঁয়েছিল৷ শুমান নিজেও কোনোদিন ভুলতে পারেননি সেই দিনটির কথা৷ ১৯৯৮ সালে আত্মহত্যা করেন তিনি৷ ৪৪ বছর আগে শুমানের এই ছবিটি তুলেছিলেন পেটার লাইবিং৷

ধুলায় ঢাকা নারী

মার্সি বর্ডার৷ ধুলায় তাঁর শরীর ঢেকে যাওয়ার কারণ বিশ্বের নিষ্ঠুরতম সন্ত্রাসী হামলা৷ ২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বরের ছবি এটি৷ টুইন টাওয়ার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মুহূর্তে সেখানে ছিলেন মার্সি বর্ডার৷ এই ছবির কারণে ৯/১১-র পর থেকে সবাই ‘ডাস্ট লেডি’ নামেই সবাই তাঁকে চিনতো৷ ওই হামলার পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় পাকস্থলীতে ক্যানসার হয়েছিল৷ ক্যানসারে ভুগে এ বছরের ১৫ আগস্ট ৪২ বছর বয়সে মারা যান তিনি৷


নির্ভিক এক মানুষ

১৯৮৯ সালের ৫ই জুন তিয়েনানমেন স্কয়ারের প্রতিবাদ বিক্ষোভকে দমন করতে যখন চীনা সেনাবাহিনী হামলা চালায় তখন ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন একজন৷ এভাবে বেশ কয়েকটি ট্যাংককে কিছুক্ষণ থামিয়েও রেখেছিলেন৷ সেই মুহূর্তটিকে ক্যামেরায় ধরে রেখেছিলেন জেফ উইডেনার৷ ছবিটি তোলার পরপরই অকুতোভয় ব্যাক্তিটিকে সেখান থেকে নিয়ে যায় পুলিশ৷ ২৬ বছরেও অসম সাহসী লোকটির পরিচয় জানা যায়নি, জানা যায়নি তিনি কোথায়, কেমন আছেন!

প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে প্রাণ দিল জার্মান তরুণ

ইরানের রেজা শাহ পেহলভির রাষ্ট্রীয় সফরের প্রতিবাদে বার্লিনের রাস্তায় বিক্ষোভে নেমেছিল অনেক মানুষ৷ শাহ বার্লিন অপেরায় বসে দিব্যি মোৎসার্টের ‘দ্য ম্যাজিক ফ্লুট’ উপভোগ করছেন৷ বাইরে শুরু হয়ে গেল জনতা-পুলিশ মারামারি৷ উত্তেজনা তৈরির পেছনে শাহ-র গোয়েন্দাদের উসকানির অবদান ছিল বলে অনেকে মনে করেন৷ একটা সময়ে প্রতিবাদী ছাত্র বেনো ওনেসর্গ-কে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ৷

জন এফ কেনেডির মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির আততায়ীর গুলিতে নিহত হবার ছবিটিও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল৷ কেনেডি তখন গাড়িতে৷ হঠাৎ আততায়ীর গুলি৷ মাথায় লেগেছিল গুলি৷ অ্যাব্রাহাম জ্যাপারডার তুলেছিলেন ছবিটি৷ আর কোনো ক্যামেরায় ধরা পড়েনি মুহূর্তেরও খণ্ডাংশের সেই দৃশ্য৷


অলিম্পিকে সন্ত্রাসী হামলা

১৯৭২ সালে জার্মানির মিউনিখে বসেছিল অলিম্পিকের আসর৷ অনেকের কাছে আসরটি বেশি স্মরণীয় হয়ে আছে ইসরায়েলের অলিম্পিক দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার কারণে৷ ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর নামের একটি ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সশস্ত্র কর্মীরা অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের ১১ জন ক্রীড়াবিদকে জিম্মি করে ফেলে৷ পরে তাদের হত্যা করা হয়৷ ছবিতে এক ভবনের ব্যালকনিতে দেখা যাচ্ছে এক অপহরণকারীকে৷

 

আফগান মেয়ে

আফগানিস্তান তখন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলে৷ পাকিস্তানে আশ্রয় নেয়া এই আফগান কিশোরীর ছবি তখনেই তুলেছিলেন স্টিভ ম্যাককারি৷ ১৯৮৫ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক প্রচ্ছদ ছবির মর্যাদা দেয় ছবিটিকে৷ শরবত গুলা নামের মেয়েটি তা জানেনইনা৷ ২০০২ সালে তাকে খুঁজে পায় সংবাদমাধ্যম৷ শরবত গুলা তখন জানতে পারেন তাঁর ১২ বছর বয়সের কোনো ছবির জগত বিখ্যাত হওয়ার সত্যি কাহিনি৷-ডব্লিউ

গো নিউজ২৪/এআর
 

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর