হঠাৎ এক রাতের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম কেজিতে বাড়লো ৩০ টাকা


নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪, ০২:১৯ পিএম
হঠাৎ এক রাতের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম কেজিতে বাড়লো ৩০ টাকা

যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলসহ বাজারগুলোতে পেঁয়াজ সংকট দেখা দিয়েছে। এতে সব হাটবাজারে এক রাতের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতীয় পেঁয়াজ বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি বন্ধ থাকায় হঠাৎ মোকামগুলো থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মজুতকারীরা এ সমস্ত এলাকার সব পেঁয়াজ কিনে নিচ্ছেন। ফলে এসব এলাকার হাটবাজার পেঁয়াজশূন্য হয়ে পড়ছে। এ কারণে যশোরের শার্শার বাজারগুলোতে পেঁয়াজের মূল্য হু হু করে বাড়ছে।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে বেনাপোল বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন রমজানকে সামনে রেখে অধিক মুনাফা লাভের আশায় মজুতদাররা তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, এসব ব্যবসায়ীদের অজুহাত ছাড়া কিছুই না, নতুন করে আবারও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মাত্র এক রাতের ব্যবধানে শার্শার সব বাজারে পেঁয়াজের কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতেও বাজারে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা যায়। গত সপ্তাহেও বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

বেনাপোল বাজারের খুচরা বিক্রেতা মিলন জানান, শনিবার সকালে স্থানীয় আড়ত থেকে পাইকারি প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১১০ টাকা দরে কিনেছেন। তিনি খুচরা বিক্রি করছেন ১২০ টাকা।

শার্শার নাভারন বাজারের বিভিন্ন আড়তে পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। নাভারন বাজারের আড়তদার রাজু আহমেদ জানান, তিনি শুক্রবার পাইকারি দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ মান ভেদে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। গত বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯০ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। এলসির পেঁয়াজ আমদানি না হলে দাম কমবে না।

আড়তদার আতাউর রহমান জানান, যশোরের-চৌগাছা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও পাবনা মোকাম থেকে ব্যাপারীরা পেঁয়াজ এনে বিক্রি করেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার হঠাৎ ওইসব মোকাম থেকে ঢাকাসহ দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ কিনে নিয়েছেন। ফলে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। রমজানকে সামনে রেখে ঢাকা ও দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা একটা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে বেসরকারি পর্যায়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র সরকারি পর্যায়ে টিসিবির পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। অন্যসময় বেনাপোল বন্দর থেকে যশোরের ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যেতেন। এখন বন্দরে কোনও পেঁয়াজ নেই। বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি না হওয়া পর্যন্ত পেঁয়াজের সংকট মিটবে না।

এদিকে, শুক্রবার বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসে হতভম্ব ক্রেতা নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত দুই দিন আগেও দেশি পেঁয়াজ বাজারে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। একদিনের ব্যবধানে ৩০ টাকা বেড়ে ১২০ দরে বিক্রি হচ্ছে। এমন কী হলো যে এক রাতের মধ্যে বাজারের সব পেঁয়াজ শূন্য হয়ে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে গেলো। এ জন্য তিনি বাজার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন।

তিনি আরও জানান, এরপরও সরকারি নজরদারির সংস্থাগুলো যদি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তবে রোজায় হয়তো ২০০ টাকায় পেঁয়াজ কিনতে হতে পারে।

বেনাপোল চেকপোস্ট উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার জানান, দীর্ঘদিন বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি বন্ধ থাকায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারত থেকে আমদানি শুরু হলে বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।

অর্থনীতি বিভাগের আরো খবর