১৫ বছর ধরে ওরাংওটানকে দিয়ে দেহ ব্যবসা


নিউজ ডেস্ক: প্রকাশিত: মে ১৫, ২০১৯, ০৫:০২ পিএম
১৫ বছর ধরে ওরাংওটানকে দিয়ে দেহ ব্যবসা

টানা ১৫ বছর ধরে তাকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয় একটি ওরাংওটানকে। বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনেক নারী দেহব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু কোনো প্রাণীর? হ্যাঁ, এরকই এক নৃশংস ঘটনা ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও দ্বীপে। ওই দ্বীপের এক পতিতালয়ে একটি নারী ওরাংওটানকে টানা ১৫ বছর দেহব্যবসা করানো হয়।

একদল দুর্বৃত্ত জন্মের পররই মায়ের কাছ থেকে চুরি করে নিয়ে যায় বাচ্চা ওরাংওটানটিকে। দুই তিন বছর বয়সের সময় তার ঠাঁই হয় পতিতালয়ে। 

ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল বলছে, নির্যাতনের শিকার ওই ওরাংওটাংয়ের নাম পনি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও দ্বীপের জঙ্গলে তার জন্ম। জন্মের পরপরই মায়ের কোল থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত।

পরে পতিতালয়ে নিয়ে গিয়ে তাকে যৌনদাসীতে পরিণত করা হয়। মানুষের অবয়বে যেন তাকে দেখা যায় সেজন্য কয়েকদিন পরপর তার শরীরের রোম ফেলে দেয়া হতো। গায়ে জড়িয়ে দেয়া হতো দামি সব অলঙ্কার। দুর্গন্ধ এড়াতে দেয়া হতো পারফিউম। পাশের তেল কারখানার শ্রমিকদের টাকার বিনিময়ে তার কুঁড়েঘরে ঢুকিয়ে দিতো দালালরা।

শিকলে বেঁধে ইচ্ছেমতো নিজেদের লালসা মিটিয়ে যেতো শ্রমিকরা। সেই অবস্থাতেই দিন কাটছিল তার। পরে দেশটির একটি পশু সেবায় নিয়োজিত সংস্থা পনিকে উদ্ধার করে। ১৯৯৪ সালে বাবা-মা হারানো ওরাংওটাং উদ্ধারে নামেন পেশায় শিক্ষিকা মিশেল ডেসিলেটস।

বোর্নিওতে ওরাংওটাংদের শুশ্রূষার একটি সংগঠনে কাজ করতেন তিনি। সেখানে ২০০৩ সালে পনিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময় পনির শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। প্রতিনিয়ত শরীরের রোম তুলে দেয়ায় মশা-মাছি এবং পোকামাকড়ের কামড়ে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল তার শরীর।

তাকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে হিমশিম খেতে হয়েছিল ৩৫ জনের সশস্ত্র পুলিশ সদস্যের একটি দলকে। খবর পেয়ে উদ্ধারে গিয়ে বাধার মুখে পড়ে পুলিশ সদস্যরা। প্রথমে ওই পতিতালয়ে পুলিশ সদস্যদের ঢুকতেই দেয়নি স্থানীয়রা। পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পতিতালয়ের নারী ও পুরুষরা। একপর্যায়ে পিছু হটলে পনিকে উদ্ধার করে পুলিশ। চিকিৎসা ও সেবা পাওয়ার পর এখন সুস্থ হয়ে উঠছে এই প্রাণী।

গো নিউজ২৪/আই

বিচিত্র সংবাদ বিভাগের আরো খবর