১৬০০ কোটি টাকা লুট করে পালিয়েছেন পিকে হালদার!


নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২০, ০৫:৫৪ পিএম
১৬০০ কোটি টাকা লুট করে পালিয়েছেন পিকে হালদার!

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার লোন থেকে ১৬০০ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। এটি করেছেন পিকে হালদার (প্রশান্ত কুমার হালদার) নামের এক ব্যক্তি ও তার গ্রুপ।

টাকা লুটের পর তিনি কানাডা চলে গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই টাকা পাচার হয়ে গেছে কানাডাতেই। প্রতিষ্ঠানটি থেকে সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এসব কথা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে হাইকোর্টের নির্দেশে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। ২৫ দিন দায়িত্ব পালনের পর তিনি গতকাল সোমবার স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।

এর আগে গত ২৫ তারিখ (ফেব্রুয়ারি) আইএলএফএসএল এর ভেতরের অবস্থা সম্পর্কে মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে প্রতিবেদন দিয়েছেন তিনি।

খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, শুধু টাকাই লুট করেন নি পিকে হালদার। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজমেন্টকে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে দখলে নিয়েছিলেন তিনি।

খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ

তিনি বলেন, ব্যাংকিং বা ম্যানেজমেন্ট সমস্যা হলে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে সেটা সারিয়ে তুলতে পারি। যেমন, ২০০০ সালের প্রথম দিকে পূবালী ব্যাংক রুগ্ন ব্যাংক হয়ে গিয়েছিলো। আমি জয়েন করে সেটাকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিলাম। কিন্তু, আইএলএফএসএল সে ধরনের না। এখানকার সমস্যা ব্যাংকিংয়েরও না, ম্যানেজমেন্টেরও না। এখানকার সমস্যা হলো- টাকা লুট করে নেয়া হয়েছে। এখানে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার লোন থেকে ১৬০০ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে। 

অথনীতিবিদ ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ২০১৫ সালের দিকে আইএলএফএসএল এর চেয়ারম্যান হিসেবে মাহবুব জামিল ছিলেন। তিনি একজন ভালো চেয়ারম্যান ছিলেন। তখন এটি একটি প্রথম সারির অরগানাইজেশন ছিল। পিকে গ্রুপ তাকে সেখান থেকে বের করে দিয়ে সংস্থাটি দখল করে। এর বোর্ড ও ম্যানেজমেন্ট বদলে ফেলে। সেখানে নিজস্ব লোকজন বসায়। তারপর সেখান থেকে ১,৬০০ কোটি টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

সে (পিকে হালদার) কানাডা চলে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে টাকা কানাডায় পাচার হয়ে গেছে। লুট করা টাকা যদি দেশের বাইরে চলে যায় তাহলে তা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। আমাদের মতো সাধারণ লোকের পক্ষে এটা সম্ভব না।

তিনি বলেন, এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক হলো রেগুলেটর। আদালত তো রেগুলেটর না। আদালত হয়তো আমাকে দিয়েছিলেন ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে। আমি সেখানে ক্ষমতাহীন চেয়ারম্যান ছিলাম। সেজন্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্টেপিং করা দরকার। আমি মনে করি, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি সেখানে প্রশাসক নিয়োগ করে এবং দুদককে দিয়ে (টাকা লুটের বিষয়ে) তদন্ত করায় তাহলে সেটিই সঠিক পদক্ষেপ হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই ডেপুটি গভর্নর বলেন, আমি এখানে চেয়ারম্যান হিসেবে ২৫ দিন ছিলাম। এর ভেতরের কথা কেউ আমাকে বলেনি। এটা আমাকে বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে আবিষ্কার করতে হয়েছে।

গো নিউজ২৪/আই

অপরাধ চিত্র বিভাগের আরো খবর