মাদ্রাসা ছাত্রীকে কলাবাগানে নিয়ে ব্লেড দিয়ে অত্যাচার!


মাদারীপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০১৭, ০৪:০৯ পিএম
মাদ্রাসা ছাত্রীকে কলাবাগানে নিয়ে ব্লেড দিয়ে অত্যাচার!

মাদারীপুরে এক মাদরাসাছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত ছাত্রীকে উদ্ধার করে মঙ্গলবার বিকেলে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে স্থানীয়রা।

পুলিশ, পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের পাট ব্যবসায়ীর মেয়ে ছিলারচর দাখিল মাদরাসার ছাত্রী প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে মাদরাসায় যায়। মাদরাসা ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে বোরখা পরা এক মেয়ে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। কিছুদূর গেলে ওই শিক্ষার্থীকে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে তার চোখে কাপড় বেঁধে দেয়া হয়। এ সময় বোরকা পরা নারীর সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিলেন।

পরে ওই ছাত্রীকে বোরকা পরা নারীরা টেনেহিঁচড়ে ছিলারচরের সীমান্তবর্তী শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীকান্তাপুর চর শিমুলিয়া গ্রামের মোতালেব বেপারীর পরিত্যক্ত কলাবাগানে নিয়ে যায়।

সেখানে ওই শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাত বোরকা পরা নারীসহ কয়েকজন যুবক মিলে মারধর করে। পরে ব্লেড দিয়ে ওই শরীরে আঘাত করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. অখিল চন্দ্র সরকার বলেন, ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিয়ে এলে আমরা তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেই। তার হাত ও বুকে জখমের চিহ্ন আছে। হাতের জখম গুরুতর হওয়ায় সেখানে সেলাই দেয়া হয়েছে। এছাড়া মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীর মা বলেন, প্রতিদিনের মতো আমার মেয়ে মাদরাসায় যায়। দুপুরে ছিলারচর বাজার থেকে ঘটনার কথা শুনে আমরা ছুটে আসি। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমার মেয়ে বলতে পারবে। তবে আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই। অপরাধীদের শাস্তি চাই।

ওই শিক্ষার্থীর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সে বলে, মাদরাসা ছুটির পর আমি একটি অটোবাইকে ছিলারচর বাজারে আসি। সেখানে অটোবাইক থেকে নামার পর একটি বোরকা পরা মেয়ে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। আমি তাকে চিনি না। কিছুদূর যাওয়ার তারা কয়েকজন আমার হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে টেনে নিয়ে যায়।

পরে একটি বাগানে নিয়ে আমাকে মারধর করে। একপর্যায়ে তারা আমার হাত ও বুকে ব্লেড দিয়ে আঘাত করে। পরে তারা আমার মুখ থেকে কাপড় সরায়। এ সময় একজন আমাকে দেখে বলে, এই মেয়ে সেই না, এটা অন্য মেয়ে। আমি নাকি সেই মেয়ে না-বলে তারা আমাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। তখন আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে কী হয়েছে আমি জানি না।

মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত হাসপাতালে আসি। মেয়েটির চিকিৎসা চলছে। তার সঙ্গে কথা বলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওসি।

গো নিউজ২৪/এএইচ

অপরাধ চিত্র বিভাগের আরো খবর