সৎমেয়ের গর্ভপাত ঘটিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস!


নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০১৭, ০৫:৪৫ পিএম
সৎমেয়ের গর্ভপাত ঘটিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস!

ঢাকা: রাজধানী ঢাকায় ৮ বছর ধরে সৎবাবার কাছে ধর্ষণের শিকার হয়ে অবশেষে মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণী। মামলা দায়েরের পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরমান হোসেন ওরফে সুমন (৩৮) নামে সেই সৎবাবাকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তার সুমন বেসরকারি টিভি চ্যানেল নিউজ ২৪-এর শব্দ প্রকৌশলী। সৎমেয়েকে ৮ বছর ধরে জিম্মি ধরে ধর্ষণ করার ঘটনায় মামলা দায়ের ও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার পর বের হয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

ধর্ষিতা ওই মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে আরমান ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে তার গর্ভপাতও ঘটিয়েছেন। এরপর গেল বছর ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর আরমান তার ফেসবুকে এ ব্যাপারে একটা স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন। 

অবশ্য গত ১১ জুলাই রমনা থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে মেয়েটি ওই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ২০১৫ সালে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার গর্ভপাত ঘটানো হয়। এরপরও তার ওপর নির্যাতন চালিয়ে যেতে থাকেন আরমান।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে গর্ভপাত ঘটনার পর মেয়েটি তার এক নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। তবে সেখানেও গিয়েও রেহাই পাননি। আরমান তাকে দফায় দফায় কুপ্রস্তাব পাঠাতে থাকেন। কোনো কিছুতেই রাজি করাতে না পেরে মেয়েটির এক বন্ধুকে ভিডিও ও অডিও ক্লিপ পাঠান আরমান। এরপর নিরূপায় হয়ে মামলায় যেতে বাধ্য হন মেয়েটি। 

তবে গর্ভপাত ঘটনার পর আরমান এর জন্য আংগুল তোলেন সমাজের রীতিনীতির বিরুদ্ধে। তার সেই স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘মানুষের অসাবধানতায় কিংবা ইচ্ছাই বৈধ্য বা অবৈধ্য ভাবে গর্ভে চলে আসে সেই মানবভ্রুন, যা ধিরে ধিরে সে মানব শিশুতে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু প্রতিনিয়ত মানুষ তার গর্ভে বৈধ্য বা অবৈধ্য ধারন করা বাচ্চাটিকে নিজের লাভের কথা ভেবে নির্মম ভাবে নষ্ট করে ফেলে। কিন্তু একবারো ভাবিনা একটি জীবন হত্যা করার অধিকার আমাদের কেউ দেয় নি, একটি জীবন মানে নতুন এক পৃথিবী, তার আলাদা একটি সত্ত্বা এবং আলাদা চিন্তা চেতনার আর ভাবনার বিশাল এক রাজ্য। একবারও মানুষ ভাবেনা বৈধ্য বা অবৈধ্য যেভাবেই হউক সেই অবুঝ শিশুটির তো কোন দোষ নেই, তবে তাকে কেন আমাদের পাপের কারনে জীবন দিতে হবে? সে যদি সুন্দর ভাবে পৃথিবীর আলোর মুখ দেখে তবে কি খুব বেশী মানুষের সমস্যা হবে, তার জীবন ধারন কিংবা চলার পথ এক সময়তো সে নিজেই তৈরি করে নিবে।

আমরা কেউ কখনোই ভাবিনি বৈধ্য/ অবৈধ্য ধারন করা বাচ্চাটি যদি বেচে থাকতো তাহলে সে এই পৃথিবীর শ্রেষ্ট কোন মানুষ হতে পারতো! হতে পারতো মানব জাতির শ্রেষ্ট কোন উদাহারন। সেই মানুষটির উছিলায় হয়তো অনেকের দুঃখ লাগব হতে পারতো কিন্তু আমরা সেই মানুষটিকে বৈধ্য,অবৈধ্যের আওয়াজ তুলে সমাজ, দেশ, বংশ ও নিজের মান সম্মানের কথা ভেবে শুরুতেই নষ্ট করে দিচ্ছি।

বাচ্চা নষ্ট করার সব পদ্ধতিতেই এক ধরণের লম্বা নল জরায়ুতে ঢুকিয়ে গর্ভের শিশুটিকে প্রথমে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়। পরে ভ্যাকুয়াম সাকারের মাধ্যমে শিশুটিকে শুষে আনা হয়। গর্ভপাতের সময়কার শিশুটির অব্যাক্ত বেদনা হয়তো কারো কানে পৌঁছায় না।

কিন্তু তাই বলে কি তাদের প্রতি আমাদের কোন মায়া-মমতা নেই? আপনার জন্ম গ্রহণকারী ছোট্ট বাবুটি যখন সামান্য একটু ব্যাথা পায় তখন আপনার কাছে কেমন লাগে? আর আপনার চোখের আড়ালে যাকে ক্ষতবিক্ষত করছেন তার ব্যাথাটা একটু বোঝার চেষ্টাও করেন না? মানুষ নামের নরপশুর নির্মমতায় একটি নিষ্পাপ শিশু মৃত মাংসপিণ্ডে পরিণত হয় যেসব মা ক্ষণিকের সুখের জন্য নিজ গর্ভের সন্তানকে পাশবিকভাবে হত্যা করে তাদের জন্য আমার পক্ষথেকে হৃদয় উগড়ে দেয়া সীমাহীন ঘৃণা।’
 

গো নিউজ২৪/এএইচ

অপরাধ চিত্র বিভাগের আরো খবর