কলেজছাত্রীর সাথে এ কেমন অমানবিক আচরণ!


নরসিংদী প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ৬, ২০১৭, ০২:৫০ পিএম
কলেজছাত্রীর সাথে এ কেমন অমানবিক আচরণ!

নরসিংদীর বেলাবতে স্ত্রীর স্বীকৃতি চাইতে গিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তানিয়া আক্তার নামে এক কলেজছাত্রী। 

শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার মাথার চুল কেটে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্লেড দিয়ে ক্ষত করে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে এবং ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন তানিয়া আক্তার।

সোমবার সকালে উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের ধুকুন্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তানিয়া উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ভাটেরচর গ্রামের সুরুজ মিয়ার মেয়ে এবং বারৈচা ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।

তানিয়া জানান, ধুকুন্দি গ্রামের মৃত রহম আলীর ছেলে সৌদিপ্রবাসী জাকির হোসেনের সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তা প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত দেড় বছর আগে জাকির হোসেন তার পরিবারের কাউকে না জানিয়ে চট্টগ্রামে নিয়ে তানিয়াকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা ঢাকা ও নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকেন। কিছুদিনের মধ্যেই জাকির কাজের জন্য সৌদি আরবে চলে যান। 

একপর্যায়ে তানিয়া জানতে পারেন, জাকির হোসেন এর আগেও তিনটি বিয়ে করেছেন। এর পর সৌদি আরব থেকেই জাকির তানিয়ার সঙ্গে মাঝে-মধ্যে ফোনে কথা বলতেন। সম্প্রতি তানিয়া জাকিরকে বাড়িতে নেওয়ার জন্য চাপ দেন। পরে স্বামীর কথামতো তানিয়া গত ৩১ মে ধুকুন্দি গ্রামে তার শ্বশুরবাড়িতে গেলে জাকিরের মা সকিনা, বোন সুরাইয়া, রুবি, দ্বিতীয় স্ত্রী বেদেনা ও ভাগ্নি বিনা আক্তার তাকে মারধর করে। রাতে পার্শ্ববর্তী গ্রাম আবদুল্লানগরে জাকিরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে পরদিন আবার বাড়িতে এনে তাকে মারধর করা হয়।

তানিয়া সোমবার সকালে জাকিরের বাড়িতে গেলে একই ব্যক্তিরাই তাকে আবার মারধর করে। একপর্যায়ে তারা তানিয়ার চুল কেটে দেয় এবং ব্লেড দিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে ক্ষত করে তাতে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেয়। এ সময় তানিয়ার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে বেলাব থানার এসআই মাহবুব ঘটনাস্থলে এসে তানিয়াকে উদ্ধার করে বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।

ধুকুন্দি গ্রামের বাসিন্দা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, 'মেয়েটির চিৎকার শুনে আমরা জাকিরের বাড়িতে গিয়ে তাকে উদ্ধার করি। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।'

আমলাব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বশির আহমেদ পরশ বলেন, 'ঘটনাটি আমি শুনেছি, যা খুবই লজ্জাজনক। আমি সামাজিকভাবে ব্যাপারটি দেখছি।'

এ ব্যাপারে বেলাব থানার ওসি মো. বদরুল আলম খান বলেন, ঘটনা শুনে আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত নির্যাতিতার পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


গো নিউজ২৪/এএইচ
 

অপরাধ চিত্র বিভাগের আরো খবর