ট্রাংকে ভরে তরুণীর লাশ পাঠানো হয় ঢাকায়, ছয় বছর পর ধরা


অপরাধ প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১, ০১:১৯ পিএম
ট্রাংকে ভরে তরুণীর লাশ পাঠানো হয় ঢাকায়, ছয় বছর পর ধরা

২০১৫ সালের ৩ মে গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম থেকে আসা ঈগল পরিবহনের একটি বাসের ট্রাংকের ভেতর থেকে অজ্ঞাতনামা তরুণীর লাশ পাওয়া যায়। লাশের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে দাফন করা হয়। ওই সময় পুলিশ বাদী হয়ে দারুস-সালাম থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ছয় বছর পর সেই তরুণীর লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রেজাউল করিম স্বপন নামের একজনকে কুমিল্লার ইপিজেড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পিবিআই-এর মহাপরিচালক বনজ কুমার মজুমদার শনিবার ২৫ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পিবিআইকে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে অজ্ঞাতনামা তরুণীর পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই। গ্রেফতারকৃত রেজাউল করিম স্বপনও হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলাটি পাওয়ার পর ২০১৫ সালে এন্ট্রিকৃত নিখোঁজ জিডির অনুসন্ধান করে তথ্য সংগ্রহ করে পিবিআই। কাছাকাছি সময়ে শতাধিক মানুষের নিখোঁজের তথ্য পাওয়া যায়।

২০১৫ সালের ১০ জুন শম্পা বেগম নামের এক তরুণীর নিখোঁজের ঘটনায় চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। জিডি করেন শম্পা বেগমের ভগ্নিপতি আব্দুল মান্নান। তদন্তকারী কর্মকর্তা শম্পার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং জানতে পারে, ২০১৩ সালে রেজাউল করিম স্বপন (বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া নৌবাহিনীর সদস্য) খুলনা তিতুমীর নৌঘাঁটিতে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় শম্পা বেগমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। হাসপাতালের মেডিক্যাল অ্যাসিসটেন্ট-এর কাজ করতেন শম্পা। পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক হয় দুজনের। পরে রেজাউল বদলি হয়ে চট্টগ্রাম চলে আসে। তার সঙ্গে বেরিয়ে যায় শম্পাও।

চট্টগ্রামে শম্পার এক ফুপুর বাসায় কিছুদিন থাকে দুজন। এরপর ফয়েজ লেক এলাকায় একটি হোটেলে কিছুদিন থাকে। সেখান থেকে পাহাড়তলীর উত্তর গ্রিনভিউ আবাসিক এলাকার একটি বাসায় সাবলেট নিয়ে থাকতে শুরু করে। ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের মে পর্যন্ত একসঙ্গে ছিল তারা। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করলেও তখনও বিয়ে হয়নি তাদের। পিবিআই-এর মহাপরিচালক বনজ কুমার মজুমদার আরও বলেন, পরে শম্পা ও রেজাউলের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিলে আসামি রেজাউল করিম স্বপন ২০১৫ সালের ২ মার্চ রাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে শম্পাকে। লাশ গুম করতে সেটাকে ট্রাংকে ভরে ঢাকাগামী ঈগল পরিবহনের একটি বাসে তুলে দেয় এবং ভিকটিমের বাবাকে জানায় শম্পাকে খুলনার বাসে তুলে দেওয়া হয়েছে। পরে শম্পার খোঁজ না পাওয়ায় পাহাড়তলী থানায় জিডি করা হয়। ভিকটিমের বাবা ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ আসামি রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের নৌবাহিনীর অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ২০১৯ সালে রেজাউল করিমকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয় বাহিনী থেকে।

অপরাধ চিত্র বিভাগের আরো খবর