মহেশপুরের আসাদুল্লাহ যেভাবে শিবির থেকে জঙ্গি


জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতনিধি: প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০১৯, ১২:৫৫ পিএম
মহেশপুরের আসাদুল্লাহ যেভাবে শিবির থেকে জঙ্গি

ঝিনাইদহ মহেশপুরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন শিবিরের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে ফখরুল সাদিক আসাদুল্লাহ (২৫)। দ্রুতই শিবিরের ইউনিয়ন কমিটির ‘সাথী’ হিসেবে পদোন্নতি পায় সে। 

যশোর পলিটেকনিক কলেজ থেকে ডিপ্লোমা করার সময় শিবির ছেড়ে যোগ দেয় জঙ্গিগোষ্ঠী আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে। পরে সরাসরি অংশ নেয় ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যায়। 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) সদস্যরা গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের টঙ্গী থেকে ওই হত্যাকান্ডে জড়িতদের অন্যতম আসাদুল্লাহকে গ্রেফতার করেন। 

পুলিশ বলছে, আসাদুল্লাহর বাবাও জামায়াতের রুকন পর্যায়ের নেতা ছিলেন। বাবার পথ ধরে শিবির আর শিবিরের মতাদর্শ ধরে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে সে। 

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, জুলহাস ও তনয় হত্যাকান্ডের পরিকল্পনায় ছিল ১৩ জন। এর মধ্যে পাঁচজন সরাসরি হত্যাকান্ডে জড়িত ছিল। অন্যরা তথ্য সরবরাহ, জুলহাসের বাসা দেখিয়ে দেওয়াসহ অন্যান্য কাজে ছিল। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসাদুল্লাহ এসব তথ্য দিয়েছে। 

হত্যার ঘটনার বর্ণনায় মনিরুল ইসলাম বলেন, হত্যার আগে ওই পাঁচজন টঙ্গীতে একটি বাসা ভাড়া নেয়। সেখান থেকে একটি বাসে করে আসে রাজধানীর কলাবাগানে। সেখান থেকে কলাবাগানে জুলহাসের বাসার পাশের একটা মসজিদে নামাজ আদায় করে। এরপর দুজন গিয়ে বাসার দারোয়ানকে আটকে ফেলে। বাকিরা ওপরে গিয়ে জুলহাস ও তনয়কে হত্যা করে। সরাসরি হত্যাকারীদের একজন আসাদুল্লাহ।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, হত্যার পর আবার তারা দৌড়ে গিয়ে কলাবাগান থেকে বাসে করে টঙ্গীতে অবস্থান নেয়। ২০১৬ সালে এটি ছিল তাদের শেষ অপারেশন (হত্যার টার্গেট)। এর আগে ওই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি বাড্ডার সাঁতারকুলের একটি আস্তানায় পুলিশের একজন ইন্সপেক্টরের ওপর এই জঙ্গিরা হামলা করে। ওই সময় ইন্সপেক্টর বাহাউদ্দিনের সঙ্গে থাকা পিস্তল কেড়ে নেওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসাদুল্লাহ সেই কথাও স্বীকার করেছে। 

পুলিশ বলছে, পিস্তলটি উদ্ধারসহ তারা আগে কতটি হামলা করেছে সেসব তথ্য খতিয়ে দেখছি। 

এদিকে বুধবার দুপুরে আসাদুল্লাহর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মামুনুর রশীদ শুনানি শেষে এ রিমান্ডের আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিটিটিসির পরিদর্শক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এ সময় আসাদুল্লাহর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। 

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানে লেক সার্কাস এলাকার বাসায় ঢুকে জুলহাস ও তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় এর আগে সরাসরি হত্যাকারীদের একজন আরাফাতসহ চারজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

গো নিউজ২৪/আই

দেশজুড়ে বিভাগের আরো খবর