শেরপুরে শীতের জমকালো পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত


রফিক মজিদ, শেরপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০১৮, ০১:৩৬ পিএম
শেরপুরে শীতের জমকালো পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত

শীত মানেই পিঠা। গ্রামীণ জনপদে শীত এলেই ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠার ধুম। কিন্তু ব্যস্ত শহরে এই পিঠার স্বাদ পেতে দ্বারস্থ হতে হয় পিঠার দোকানে। তাই বাঙালির ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে শেরপুর পৌর লেডিস ক্লাব ও উজ্জয়নী মহিলা সংস্থা’র যৌথ ভাবে আয়োজন করেছিল দিনব্যাপী পিঠা উৎসব। 

২৬ জানুয়ারী শুক্রবার শেরপুর পৌরসভা কার্যালয় মাঠে এ পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন। এসময় আয়োজকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পিঠা উৎসবের মূল আয়োজক উজ্জয়নী মহিলা সংগঠনের রাজিয়া সামাদ ডালিয়া ও পৌর লেডিস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুমানারা লিপি।

পিঠা উৎসবে নানা রঙ ও ঢংয়ের বাহারি পিঠার নামের মতো দর্শনার্থীদের মন কেড়েছে স্টলগুলোর বাহারি নানাসব নামে। বিভিন্ন ফুলের নামে বিশেষ করে কেয়া, মাধবীলতা, গোলাপ, রজনীগন্ধা, ক্যামেলীয়া, হাসনাহেনা, অপরাজিতাসহ নানা বাহারি নাম। উৎসবে ৩৫ টি স্টলে দুধ চিতই, সাগুর লস্করা, নয়নতারা, ডালের বরফি, হেয়ালি পিঠা, পাটিসাপটা, নারকেল পুলি, দুধ পুলি, তালের পিঠা, মাছ পিঠা, মালপোয়া, ঝালপোয়া, সুজির পিঠা, মাংসের সমুচা, ডিম পিঠা, মুগ পাকান, পুডিং, পায়েস, পানতোয়াসহ প্রায় ২ শত রকমের পিঠা বিক্রি ও প্রদর্শিত হয়। পিঠা উৎসবে বড়দের পাশপাশি শিশু-কিশোররাও বেশ আনন্দ উপভোগ করেছে।

উৎসব শুরু হয় বিকেল ৪টায় আর শেষ হয় রাত ৮ টায়। এসময় শহরের বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে কেউ বা আবার বন্ধুদের নিয়ে দলে দলে ভির করে পিঠা উৎসবে। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্টল পরির্দশনের পাশপাশি বিভিন্ন স্টলের নানাসব বাহারি পিঠার মজা উপভোগ করেন। 

পিঠার স্টলগুলোতে বিক্রিও হয় বেশ। বিশেষ করে দেশীয় পাটি সাপ্টা, সংসারী, পেয়া, দুধ-চিতই ও চিথই পিঠার পাশাপাশি হৃদয় হরণ, মন কারা, কুমারী পিঠা, বৌ-পিঠা, সাথী পিঠা নামে পিঠার বেশ কদর ছিল । জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সৌখিন পিঠা প্রেমী নারীরা পিঠা উৎসবের স্টলে তাদের বাবাহি পিঠার সমাহার নিয়ে বসেন। 

উৎসবের এক প্রান্তে বসে সাংস্কৃতিক আসর। সেখানে স্থানীয় শিল্পীরা পরিবেশন করে দেশীয় নানা গান।  এক দিকে গানের সুর আর অন্য দিকে পুরোনো অনেক বন্ধুদের সাথে দেখা মেলার সাথে সাথে আনন্দে নেচে উঠে অনেকেই। পিঠা উৎসবের এ সময়টা যেন বন্ধু-বান্ধব আর প্রিয়জনদের মিলন মেলায় পরিনত হয়। অনেকে দল বেঁধে বন্ধুদের নিয়ে সেলফি তোলাতেও মেতে উঠে। আয়োজকরাও এ উৎসব প্রাণের উৎসব হওয়ায় বেশ খুশি।

আয়োজকদের মূল উদ্দ্যোক্তা রাজিয়া সামাদ বলেন, বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব যাতে হারিয়ে না যায় তাই আমরা এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এখন থেকে প্রতি বছর নিয়মিত ভাবে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হবে।

পিঠা উৎসবের অন্যতম আয়োজক শেরপুর পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন এ ধরনের পিঠা উৎসব আগামীতে আরো বড় পরিসরে আয়োজন করার আশা ব্যক্ত করেন।

গো নিউজ২৪/এবি

দেশজুড়ে বিভাগের আরো খবর