জলাবদ্ধতায় শাখ-সবজির ৬৬ লাখ টাকার ক্ষতি


ঝালকাঠি সংবাদদাতা প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০১৭, ০৫:০৩ পিএম
জলাবদ্ধতায় শাখ-সবজির ৬৬ লাখ টাকার ক্ষতি

ঝালকাঠি জেলায় গত ১৯ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় ৬৬ লাখ ২৫ হাজার টাকার  শীতকালিন শাখ সবজির ক্ষতি হয়েছে। এতে ৭ হাজার ৫০টি কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলার ৩২ ইউনিয়নের ১ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে এবার সবজি আবাদ করা হয়। এসব সবজির মধ্যে কাঁচাকলা, পেঁপে, লাউ, লালশাক, উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বরবটি, সিম, করলা গাছের গোড়ায় পানি থাকার কারণে মরে গেছে অধিকাংশ গাছ।

সদর উপজেলার জগদীশপুর, বাউকাঠি, চামটা, শতদশকাঠি, ভীমরুলি, রামপুর, গৈহার, কাফুরকাঠি, ডুমুরিয়া, খেজুরা, পঞ্জিপুথিপাড়া, বেতরা, আলীপুর ও মিরকাঠি গ্রামে জেলার মধ্যে কান্দিতে বেশি সবজি আবাদ হয় বারো মাস। ধান আবাদ হয়না এসব গ্রামে। নারী পুরুষ সবাই মিলে  শাখ সবজি আবাদ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। এখানকার উৎপাদিত সবজি জেলার গন্ডি ছাড়িয়ে পার্শবর্তি জেলায়ও সরবরাহ হয়। প্রতি বছর শীতের শুরুতেই এখানকার উৎপাদিত কৃষি বিক্রি হয় সরাসরি কান্দি থেকেই।

বছরের শীতের শুরুতে উৎপাদিত কৃষি পণ্য তুলতে ভোরে কৃষক ব্যস্ত সময় কাটাতো পার্শবর্তী হাট বাজারে বিক্রির জন্য । কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম। অনেক কৃষক অলস সময় কাটাচ্ছে চায়ের দোকানে। মরে যাওয়ায় অধিকাংশ সবজির ঝাঁকা ও কান্দি গুলো পরে আছে। তারপরেও অনেকে আবার বসে নেই। কিস্তি ও সুদের টাকা পরিশোধের জন্য নতুন করে আবাদ শুরু করেছেন। এবার আগাম কোন শীতকালিন সবজি উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য কৃষকরা চড়া সুদে ও কিস্তিতে টাকা এনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। শ্রমিক মজুরী বেড়ে যাওয়ায় কৃষক পরিবারে সবাই নেমে পড়েছে কাজে।

শতদশকাঠি গ্রামের কৃষক সুভাষ হালদার জানান, কিভাবে চলবে সংসার তা ভেবে পাচ্ছিনা। শ্রমিকের মজুরী দিয়ে কাজ করাতে না পারায় আমরাই কান্দিতে নতুন ভাবে শালগম লাগানোর চিন্তা করছি। পাশের কান্দিতে কচু লাগিয়ে ছিলাম। সে গুলো কেটে হাটে নিয়ে যাব। যা পাই তা দিয়ে শালগমের চাড়া কিনে লাগাবো। একই গ্রামের কৃষক শুভ রঞ্জণ বড়াল জানালেন, ৩০ হাজার টাকা সুদে এনে সবজি আবাদ করে ছিলাম এনজিও থেকে। বন্যার পানিতে সব শেষ। তাই এখন নিজেই নেমেছি বাঁচার তাগিদে কিছু করার জন্য।

ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তবের উপরিচালক শেখ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ এসব কৃষকদের ক্ষয় ক্ষতির পরিমান নিরুপন করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন ভাবে সরকারি বরাদ্ধ থেকে তাদের সহায়তা শুরু করেছে। কৃষি বিভাগও তাদের সার বীজ বিতরণ শুরু করেছে।

গোনিউজ২৪/কেআর

দেশজুড়ে বিভাগের আরো খবর