ফেরি করে বিক্রি হচ্ছে অতিথি পাখি, প্রশাসন চুপ


জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০১৭, ১১:৫১ এএম
ফেরি করে বিক্রি হচ্ছে অতিথি পাখি, প্রশাসন চুপ

গোপালগঞ্জ: প্রকৃতিতে শীতের আমেজ শুরু হলেই রঙ-বেরঙয়ের অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত হত গোপালগঞ্জের বিল অঞ্চলগুলো। শীত মৌসুমজুড়েই দেখা যেত সাদা বক, বালিহাঁস, মাছরাঙ্গা, সারস, পানকৌরীসহ দেশি বিদেশি অসংখ্য পাখি। খাল-বিল, জলাশয়গুলোতে পুঁটি, খলসে মাছ খাওয়ার লোভেই নানা প্রজাতির অতিথি পাখি ঝাঁকে ঝঁকে আশ্রয় নিত এখানকার বিলে।

দিগন্তজোড়া উন্মুক্ত হাওয়ায় পাখা মেলে এক বিল থেকে আরেক বিলে উড়াউড়ি করত। অপরূপ রূপে সেজে উঠতো প্রকৃতি। বর্তমানে মাছ আছে, দিগন্তজোড়া বিল আছে, আসছে অতিথি পাখিও। কিন্তু একটি মহল পাখির এমন অবাদ বিচরণে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিষটোপ-পড়শিসহ নানা প্রকার ফাঁদ পেতে নির্বিচারে শিকার করছে এসব অতিথি পাখি। বাঁশের খুটি, কলা পাতা, খেজুর ডাল বেতের পাতা এসব উপকরণ দিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা ফাঁদ ৬ থেকে ৭ ফিট উঁচু হয়।  এ ফাঁদ পেতে শিকারিরা প্রতিদিন সাদা বক, বালিহাঁস, মাছরাঙ্গা, সারস, পানকৌরীসহ নানা প্রকার অতিথি পাখি শিকার করছে।

প্রতিদিন বিকেল থেকে গভীর রাত আর ভোর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত এ ফাঁদ পেতে পাখি শিকার চলছে। শুধু তাই নয়, পাখিগুলো বিক্রির জন্য প্রশাসনের সামনে দিয়েই হাটে নেয়া হচ্ছে।  কেউ কেউ আবার হাট-বাজারে ফেরি করেও এসব পাখি বিক্রি করছে।  তবে এ ঘটনায় নীরব ভূমিকা পালন করছে প্রশাসন।  

এখানে প্রতিটি বক ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা, বালিহাস ৪শ থেকে ৫শ টাকা এবং তেলকুচ পাখি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা এবং চাকলা পাখি প্রতিটি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পাখি শিকারি জানান, তারা গোপালগঞ্জের বিভিন্ন বিলের ফসলের মাঠে খুঁটি পুঁতে কলাপাতা, খেজুর ডাল দিয়ে বিশেষ কায়দায় ফাঁদ তৈরি করেন।  এরপর ফাঁদের সামনে একটি বাঁশের মগডালে শিকারি বকটিকে রাখেন।  নির্মিত ফাঁদের ওপর দিয়ে দল বেঁধে উড়ে যাওয়ার সময় শিকারি বকটি অন্য বককে নাচাতে থাকে। এক পর্যায়ে শিকারি বকটি ডাকাডাকি শুরু করলে উড়ন্ত বকের ঝাঁকটি বিশেষ ভাবে নির্মিত ঘরের (ফাঁদ) ওপর বসে। এসময় তারা ভেতর থেকে একে একে বকগুলোকে ধরে ধরে খাঁচায় ভরে। এছাড়া বিশেষ কায়দায় বিষটোপ দিয়েও এসব অতিথি পাখি শিকার করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ বনবিভাগের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পাখি শিকার রোধে আমরা এ বছর এখনো কোনো অভিযান পরিচালনা করি নাই। শুনেছি পাখি শিকার চলছে, হয়তো খুব শিগগিরই পাখি শিকার বন্ধে অভিযান চালানো হবে।’

গোনিউজ/এমবি

দেশজুড়ে বিভাগের আরো খবর