ভালো নেই প্রতিমা তৈরির শিল্পীরা


জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭, ১০:৫৬ এএম
ভালো নেই প্রতিমা তৈরির শিল্পীরা

নড়াইল: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে এখনও বাকি কয়েকদিন।  আর বাকি এ সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হবে প্রতিটি মণ্ডপের প্রতিমা তৈরির কাজ।  তাই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা তৈরির শিল্পীরা।  দ্রুত গতিতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।  আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শুরু হচ্ছে সর্ব বৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসব।  চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

তবে যে মানুষগুলোর হাতের নিপুন ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে এ প্রতিমাগুলো কেমন আছেন সেই প্রতিমা শিল্পীরা? বছরে তিন মাস তাদের হাতে প্রতিমা তৈরির কাজ থাকে আর বাকি সময় পার করতে হয় বেকার বা অন্য পেশায়।  অনেকেই ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছ পূর্বপুরুষের এ পেশা।  এ পেশার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে এমন তথ্যই জানা গেছে।

প্রতিমা শিল্পী আউড়িয়া গ্রামের চিত্ত ও অরজিত পাল বলেন, ‘একটি প্রতিমা তৈরি করতে ৩-৪ জনের একটি গ্রুপের ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে।  এক একটি গ্রুপ পূজার সময় ১০-১২টি করে প্রতিমা তৈরি করে থাকে।  আমরা এ বছর ৪ জনের একটি দল ১৩টি প্রতিমা তৈরির কাজ করছি।’

সিতারামপুর গ্রামের প্রতিমা শিল্পী সুরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘একটি প্রতিমা তৈরি করে আমরা ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পাই।  তবে বর্তমান দ্রব্য মূল্যের বাজারে এ কাজ করে জীবনযাপন করা অত্যন্ত কষ্টকর।  আগে এ পেশায় অনেকে থাকলেও বর্তমানে রঙ, চুন এবং চুলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে পূর্বপুরুষের এ পেশা।’

লোহাগড়া উপজেলার বারসিয়া গ্রামের জনক বিশ্বাস বলেন, ‘পূজা শুরুর আগের ২ মাস থেকে আমরা প্রতিমা তৈরির এ কাজ করি।  বাকি সময় মাঠে কৃষি কাজ করে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসার চালাই।  আমরা যারা এ শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছি কেউই ভালো নেই।’

দলজিতপুর গ্রামের রমেশ পাল বলেন, ‘আমরা ৩ জনের একটি দল এ বছর ৯টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি।  প্রতিমা তৈরির মাটি, রঙ, চুলসহ সংশ্লিষ্ট উপকরণের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলেও আমাদের পারিশ্রমিক বাড়েনি।  সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়।  পূর্বপুরুষের পেশা, তাই বাধ্য হয়ে পড়ে আছি।’

নড়াইল কেন্দ্রীয় কালিবাড়ি মন্দিরের সভাপতি বিজন কুমার সাহা জানান, নড়াইল জেলায় প্রতি বছর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হয়ে থাকে।  এখানে হিন্দু-মুসলিমসহ সকল ধর্মের মানুষ দুর্গোৎসবে আনন্দ করে থাকে।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অশোক কুমার কুণ্ডু জানান, জেলায় ৫৯৭টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৬৬টি, লোহাগড়ায় ১৬৯টি এবং কালিয়া উপজেলায় ১৬২টি মণ্ডপ রয়েছে।  প্রতিটি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।  যথা সময়ে এসব প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে।

গোনিউজ২৪/এমবি
 

দেশজুড়ে বিভাগের আরো খবর