তার মাথায় পুরনো স্ট্র হ্যাট। প্যান্টের সঙ্গে শার্টটাকে মানানসই করেছে নেভি সাসপেন্ডার্স। কম বয়সী এই ছেলেটি 'বার্বার-অন-এ-বাইক' পরিচিত লেবাননে। এই যুগে বৈরুতে এমন দৃশ্যপট সবাইকে অবাক করবে। ছেলেটি পরেশায় নরসুন্দর। একটি ছোট্ট সাইকেলে চেপে চুল-দাড়ি-গোঁফ কাটার যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়ে কাস্টমারে দ্বারে দ্বারে চলে যায়। কাজেই তাকে মোবাইর নাপিত বললেও ভুল হবে না।
যেকোনো জায়গায় বসেই কাজে লেগে যেতে পারে না। হাতে বানানো একটি ট্রাঙ্ক আটকে থাকে সাইকেলের পেছনে। সেখানে আটকানো রয়েছে কেঁচি, চিরুনি, ইলেকট্রিক রেজর এবং ব্রাশ।
এই হাতে বানানো ট্রাঙ্কেই আছে গোটা সেলুনের জিনিসপত্র।
মাত্র ১৮ বছর বয়স তার। আর এ পদ্ধতিতেই পেশা এগিয়ে নিতে চায় সে। কারণ, এটা পুরনো উপায় হলেও আইডিয়াটা তার কাছে দারুণ লাগে। বুর্জ আল-বারাজনেহ এর রাস্তায় রাস্তায় দেখা যায় তাকে।
তার আসল নাম মোহাম্মদ খালেদ জাহজাহ। তবে তিনি নিজের জন্যে আবো তাওইলা নামটিই পছন্দ করে নিয়েছেন। তার সব জিনিসপত্র পুরনো ধাঁচের। কারণ পুরনো যেকোনো জিনিস তার খুবই পছন্দের। বললেন, আমার এই আয়োজন মানুষস খুবই পছন্দ করে। আর পুরনো আমলের মতো জিনিসপত্রগুলো আমার খুবই পছন্দের। যদি কখনো আমি একটা দোকান দিতে পারি তো তা হবে ভিন্টেজ।
একটা সময় মোবাইল নাপিতদের বৈরুতের সবখানে দেখা যেতো। কিন্তু এখন সেলুনগুলো খুবই জনপ্রিয়। তবে জীবন চালাতে দুই জায়গাতেই কাজ করেন আবো তাওইলা। দিনের বেশি সময়টা দেন একটি সেলুনে। তারপর নিজের মোবাইল সেলুন নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তিনি কেবল চলতে থাকেন। কেউ আটকান চুল কেটে নেয়ার জন্যে। আবার কেউ আটকে দেন শেভ করার জন্যে। অনেকে আবার তাকে থামিয়ে পরিচিত হন।
বললেন, ছোটবেলা আমাদের বাড়ির পাশের নাপিতের দোকানটা আমাকে টানতো। স্কুল থেকে ফিরে বাড়িতে ব্যাগটা ফেরেই আমি দৌড়ে চলে যেতাম সেখানে। নরসুন্দররা আমাকে বলতো, যদি এই কাজ ভালো লাগে তো স্কুল থেকে সেখানে চলে যেতে। তারা আমাকে শিখিয়ে দেবে বলতো।
দক্ষিণ বৈরুতে মোটামুটি সেলিব্রিটি হয়ে গেছেন এই তরুণ। দেখতেও হ্যান্ডসাম। তার পোশাক স্টাইলিশ। একহারা গড়ন তার। ক্রেতারা দারুণ খুশি। সবাই তাকে ভালোবাসেন। তাকে ডাকামাত্রই পাওয়া যায়। কষ্ট করে সেলুনেও যেতে হয় না। এই সাইকেল নিয়ে বের হলে প্রতিদিন ৫-৩০ জন ক্রেতা মেলে তার।
সূত্র-এনডিটিভি
গো নিউজ২৪/আই