ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কোরবানির পশু সংক্রান্ত করণীয় ও বর্জনীয় 


গো নিউজ২৪ | ইসলাম ডেস্ক: প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০১৮, ০৬:১১ পিএম আপডেট: আগস্ট ১০, ২০১৮, ১২:১১ পিএম
কোরবানির পশু সংক্রান্ত করণীয় ও বর্জনীয় 

প্রতিবছর ১০ যিলহজ্জ্ব মাসে কোরবানি আসে। কোরবানি করা একটি ইবাদত। হযরত ইবরাহীম আ. এর সুন্নাত। যাদের সামর্থ আছে তাদের ওপরই এ বিধান প্রযোজ্য। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কোরবানি করা ওয়াজিব।

যেমন তেমন পশু কোরবানি করলে কোরবানি হবে না। বরং এক্ষেত্রে রয়েছে কুরআন ও হাদীসে নির্দিষ্ট নীতিমালা। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো,

যেসব পশু দিয়ে কোরবানি দেয়া যাবে : গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, দুম্বা, উট ইত্যাদি পশু কোরবানি দেয়া যাবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে এই যে, গরু, মহিষ কমপক্ষে দুই বছরের হতে হবে। ছাগল, ভেড়া, দুম্বা কমপক্ষে এক বছরের হতে হবে। উট কমপক্ষে পাঁচ বছরের হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি দেখতে মোটাতাজা হয় এবং এক বছর বয়সের মনে হয় তাহলে তা দিয়ে কোরবানি বৈধ।

যে পশুই কোরবানি দেয়া হোক না কেন তা হতে হবে সুস্থ ও সবল। কোরবানির পশু চয়নের ক্ষেত্রে মনে রাখবে, এই পশুটি আল্লাহর দরবারে উপহার দেয়া হচ্ছে। তাই উৎকৃষ্ট পশু উপহার দেয়া উচিত। দুনিয়াতে আমরা কোনো উচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তির নিকট যদি কোন উপহার পাঠাই, তাহলে সবচে ভাল এবং উৎকৃষ্ট জিনিসটি পাঠাই। তাহলে মহান আল্লাহর নিকট পাঠানো জিনিস কেন উৎকৃষ্ট হবে না?

পশুর মধ্যে যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি দেয়া যাবে না:  (১) যে পশুর দৃষ্টিশক্তি নেই। (২) যে পশুর শ্রবণশক্তি নেই। (৩) এই পরিমাণ লেংড়া যে, জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না। (৪) লেজের অধিকাংশ কাটা। (৫) কানের অধিকাংশ কাটা। (৬) অত্যন্ত দুর্বল, জীর্ণ-শীর্ণ প্রাণী। (৭) গোড়াসহ শিং উপড়ে গেছে। (৮) পশু এমন পাগল যে, ঘাস পানি ঠিকমত খায় না। মাঠেও ঠিকমত চরানো যায় না। (৯) জন্মগতভাবে কান নেই। (১০) দাঁত মোটেই নেই বা অধিকাংশ নেই। (১১) স্তনের প্রথমাংশ কাটা। (১২) রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে গেছে। (১৩) ছাগলের দুটি দুধের যে কোন একটি কাটা। (১৪) গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোন দুটি কাটা। (১৫) জন্মগতভাবে একটি কান নেই।

পশুর মধ্যে যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি দেয়া যাবে : (তবে উত্তম হচ্ছে পরিপূর্ণ সুস্থ পশু দেয়া, ত্রুটিযুক্ত প্রাণী না দেয়া) (১) পশু পাগল, তবে ঘাস-পানি ঠিকমত খায়। (২) লেজ বা কানের কিছু অংশ কাটা, তবে অধিকাংশ আছে। (৩) জন্মগতভাবে শিং নেই। (৪) শিং আছে, তবে ভাংগা। (৫) কান আছে, তবে ছোট। (৬) পশুর একটি পা ভাংগা, তবে তিন পা দিয়ে সে চলতে পারে। (৭) পশুর গায়ে চর্মরোগ। (৮) কিছু দাঁত নেই, তবে অধিকাংশ আছে। স্বভাবগত এক অন্ডকোষ বিশিষ্ট পশু। (১০) পশু বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে বাচ্চা জন্মদানে অক্ষম। (১১) পুরুষাঙ্গ কেটে যাওয়ার কারণে সঙ্গমে অক্ষম।

কতজন মিলে একটি পশু কোরবানি দিতে পারবে : ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি পশু শুধু এক ব্যক্তি কোরবানি দিতে পারবে। গরু, মহিষ, উট সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি মিলে কোরবানি দিতে পারবে। অনেকে মনে করে থাকে, কোরবানির পশুতে একাধিক শরীক থাকলে অংশ নির্ধারণ করতে হবে বেজোড় সংখ্যা হিসেবে।

শরীক হতে হবে তিনজন, পাঁচজন বা সাতজন- এই ধারণা ঠিক নয়। সঠিক বিষয় হচ্ছে এই যে, এক থেকে সাত পর্যন্ত যে কোন অংশে পশুটিকে ভাগ করা যাবে। তাই দু'জন, তিনজন, চারজন, পাঁচজন, ছয়জন ও সাত ব্যক্তি মিলে একটি পশু কুরবানী দিতে পারবে।

একাধিক শরীক থাকলে করণীয় : একাধিক শরীক থাকলে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, অংশহিসেবে ভাগ যেন যথার্থ হয়। প্রাপ্য অংশের চেয়ে কেউ যেন কম বা বেশি না পায়। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, কারো যেন নিয়তে গড়মিল না থাকে। কোন অংশীদারের যদি শুধু মাংস খাওয়া উদ্দেশ্য হয় তাহলে কারো কোরবানি হবে না। এজন্য কোরবানি শুদ্ধ হওয়ার জন্য সবার নিয়ত শুদ্ধ হওয়া জরুরি।

ভাল পশু ক্রয়ের পর ত্রুটিযুক্ত হয়ে গেলে : কোরবানির উদ্দেশ্যে ভাল পশু ক্রয়ের পর যদি তা এই পরিমাণ ত্রুটিযুক্ত হয়ে যায়, যা দ্বারা কোরবানি জায়েজ হবে না তাহলে দেখতে হবে ক্রেতা ধনী না দরিদ্র? ক্রেতা যদি দরিদ্র হয় তাহলে সেই ত্রুটিযুক্ত পশু দিয়েই সে কুরবানি দিবে। আর যদি ক্রেতা ধনী হয়, তাহলে দ্বিতীয় আরেকটি পশু কিনে কোরবানি দিতে হবে। প্রথমটি দিয়ে কুরবানি শুদ্ধ হবে না। (ফতোয়ায়ে শামী, ৫ম খন্ড, ২৮৪ পৃষ্ঠা)

গো নিউজ২৪/এমআর   

ইসলাম বিভাগের আরো খবর
তাবলিগের বিরোধটা আসলে কোথায়

তাবলিগের বিরোধটা আসলে কোথায়

ওয়াজ মাহফিল সরকারিভাবে মনিটরিংয়ের অনুরোধ

ওয়াজ মাহফিল সরকারিভাবে মনিটরিংয়ের অনুরোধ

নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ না করলে নামাজ হবে?

নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ না করলে নামাজ হবে?

আশুরার দিনে যে দুইটি আমল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

আশুরার দিনে যে দুইটি আমল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

পবিত্র আশুরা ২৯ জুলাই

পবিত্র আশুরা ২৯ জুলাই

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান