ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জুমআর দিনের বরকত নিয়ে রাসুল (স) এর ঘোষণা


গো নিউজ২৪ | অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০১৭, ১১:৪৩ এএম
জুমআর দিনের বরকত নিয়ে রাসুল (স) এর ঘোষণা

শুক্রবারকে আরবি ভাষায় আল-জুমআ বলে। এই শব্দটি আল-জামা’ থেকে উদ্ভূত, যার আভিধানিক অর্থ সম্মিলিত হওয়া বা একত্রিত হওয়া। ইসলামাবলম্বীরা সপ্তাহে একদিন, প্রতি শুক্রবারে বৃহৎ ইবাদতগাহ্‌গুলিতে একত্রিত হয়। আল্লাহ্‌ তাআলা ছয় দিনে আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছিলেন। 

এই শুক্রবারেই আল্লাহ্‌ তাআলা সৃষ্টিকার্যকে সমাপ্ত করেছিলেন, এটা হলো সপ্তাহের ছষ্ঠ দিন। শুক্রবারে আল্লাহ্‌ তাআলা আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছিলেন এবং জান্নাতে স্থান দিয়েছিলেন।  শুক্রবারেই তাঁকে জান্নাত থেকে বহিষ্কৃত করা হয়েছিল। শুক্রবারেই কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে। শুক্রবারে এমন একটি মুহূর্ত আছে যখন বান্দা আল্লাহ্‌ তাআলার নিকট যা চাইবে তিনি তাকে তাই দেবেন।

এ দিনের সম্মান মর্যাদা ও ফজিলত সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক সুসংবাদ প্রদান করেছেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সহিহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, আমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহকে আল্লাহ্ তাআলা জুমআর দিনের সন্ধান দেননি। ইয়াহুদিরা বেছে নিয়েছে শনিবারকে, নাসারাগণ পেয়েছে রোববার। আর আল্লাহ্ তাআলা আমাদেরকে (মুসলিম উম্মাহকে) জুমআর দিনের সন্ধান দিয়েছেন।

জুমআর দিন সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথ্যবহুল গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পেশ করেছেন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সমস্ত দিনের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হচ্ছে জুমআর দিন।

এই দিনে আদম (আলাইহিস সালাম)কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে; এ দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। জুমআর দিনেই কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে। (তিরমিজি)ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর রচিত মুআত্তায় এই হাদিসের কয়েকটি শব্দ বাড়িয়ে বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিজী সেই বর্ণনাকেও সহিহ বলেছেন।

অপর এক হাদিসে এসেছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সমস্ত দিবসের মধ্যে জুমআর দিনই হচ্ছে সর্বোত্তম দিন। এ দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিনেই তাঁকে দুনিয়ায় নামিয়ে দেয়া হয়েছে, এ দিনেই তাঁর তাওবা কবুল করা হয়েছে, এ দিনেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন এবং এ দিনেই কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে।

জুমআর দিন সূর্য উদয় হওয়ার পর (দুনিয়ায়) মানুষ এবং জিন ব্যতিত প্রত্যেক প্রাণীই কিয়ামতের ভয়ে আতংকিত থাকে। জুমআর দিনে এমন একটি বরকতময় সময় আছে, যাতে মুসলিম বান্দা নামাজরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে যা প্রার্থনা করবে, আল্লাহ্ তাকে তা দান করবেন।

কা’ব বিন মালিক এ হাদিসের রাবি হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞেস করলে, এটি কি প্রত্যেক বছরে হয়ে থাকে? হজরত আবু হুরায়রা বললেন, বরং প্রত্যেক জুমআতেই তা রয়েছে। অতঃপর কা’ব তাওরাত (কিতাব) খুলে পাঠ করলেন এবং বললেন, আল্লাহর রাসুল সত্য বলেছেন।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, অতঃপর আমি হজরত আব্দুল্লাহ বিন সালামের সাথে সাক্ষাৎ করে কা’বের সঙ্গে আমার বৈঠকের কথা জানালাম। তিনি বললেন, আমি সেই সময়টি সম্পর্কেও অবগত আছি।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি তাকে বললাম, আমাকে সেই সময়টি সম্পর্কে সংবাদ দিন। তিনি বললেন, এটি হচ্ছে জুমআর দিনের শেষ মুহূর্ত।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এটি কি করে সম্ভব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো বলেছেন, ‘মুসলিম বান্দা তখন নামাজরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ্ তাকে তা দান করবেন।

আর জুমআর দিনের শেষ মুহূর্ত এমন একটি সময় যাতে নামাজ পড়া বৈধ নয় (আসর নামাযের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নামায পড়া নিষিদ্ধ)। সুতরাং উহা তো নামাজের সময় নয়।

সর্বোপরি হাদিসের আলোচনাগুলো থেকে বুঝা যায় যে, জুমআর দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ দিনের ইবাদত বন্দেগি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ।

গো নিউজ২৪/এবি

ইসলাম বিভাগের আরো খবর
তাবলিগের বিরোধটা আসলে কোথায়

তাবলিগের বিরোধটা আসলে কোথায়

ওয়াজ মাহফিল সরকারিভাবে মনিটরিংয়ের অনুরোধ

ওয়াজ মাহফিল সরকারিভাবে মনিটরিংয়ের অনুরোধ

নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ না করলে নামাজ হবে?

নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ না করলে নামাজ হবে?

আশুরার দিনে যে দুইটি আমল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

আশুরার দিনে যে দুইটি আমল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

পবিত্র আশুরা ২৯ জুলাই

পবিত্র আশুরা ২৯ জুলাই

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান