ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শবেবরাতে কবর জিয়ারতের ফজিলত


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৩, ১০:২৯ পিএম
শবেবরাতে কবর জিয়ারতের ফজিলত

মন নরম, আখেরাতের স্মরণ বৃদ্ধি এবং দুনিয়ার মোহ কমানোর পেছনে কবর জিয়ারতের রয়েছে বিরাট প্রভাব। তাই তো আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের জন্য কবর জিয়ারতের উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি ইতিপূর্বে তোমাদের কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা কবর জিয়ারত করো। এটা পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’ -সুনানে আবু দাউদ : ৩২৩৫

নবীজী (সা.) নিজেও মাঝে মাঝে কবর জিয়ারত করতেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) তার আম্মাজানের কবর জিয়ারত করার জন্য গমন করেন। এ সময় হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কাঁদলেন এবং তার সঙ্গীরাও কাঁদল। এরপর রাসুল (সা.) বলেন, ...‘অতঃপর আমি আমার রবের কাছে, আমার মায়ের কবর জিয়ারত করতে চাইলে তিনি এর অনুমতি দিয়েছেন। কাজেই তোমরা কবর জিয়ারত করবে। কেননা তা মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’ -সুনানে আবু দাউদ : ৩২৩৪

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) যে রাতগুলোতে আমার কাছে অবস্থান করতেন- কখনো কখনো রাতের শেষাংশে ‘জান্নাতুল বাকি’ নামক কবরস্থান জিয়ারতে বের হতেন। -মুসলিম শরিফ সূত্রে মিশকাত পৃষ্ঠা : ১৫৪

শবেবরাতে একটি ভালো আমল হলো- আত্মীয়স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশীর কবর জিয়ারত করা। কেউ কেউ মনে করেন, এ রাতে কবর জিয়ারত করা একান্ত আবশ্যকীয় ইবাদত, আবার কেউ কেউ মনে করেন, এ রাতে কবর জিয়ারত করা সম্পূর্ণ বিদআত। বিধায় এ রাতে কবর জিয়ারত সম্পর্কে মানুষের মনে বিভিন্ন দ্বিধা ও প্রশ্ন জেগেছে।

এ প্রসঙ্গে হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, একদা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার কাছে তাশরিফ আনলেন এবং তার অতিরিক্ত পোশাক খুললেন, একটু পরে পুনরায় পোশাক পরিধান করে বের হয়ে গেলেন। ফলে তিনি আমার কোন সতীনের কাছে গিয়েছেন ভেবে আমার মাঝে আত্মমর্যাদায় নাড়া দেয়। তাই আমি তাকে খুঁজতে বের হলাম। অবশেষে জান্নাতুল বাকি নামক কবরস্থানে পেলাম। তিনি সেখানে মুমিন নারী-পুরুষ ও শহীদদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। -শোয়বুল ইমান, বায়হাকি : ৩/৩৮৪

অপর হাদিসে আছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, একরাতে আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে হারিয়ে খুঁজতে বের হলাম। হঠাৎ তাকে জান্নাতুল বাকি নামক কবরস্থানে পেলাম। তিনি ইরশাদ করলেন, নিশ্চই আলাহতায়ালা শাবানের পনেরতম রজনীতে প্রথম আকাশে অবতরণ করেন এবং বনী কালবের বকরিগুলোর পশম অধিক মানুষকে ক্ষমা করেন। -সুনানে তিরমিজি : ৭৩৯

উক্ত হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয়, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন সময় যেভাবে কবর জিয়ারত করতেন, সে ধারাবাহিকতায় দু’একবার শবেবরাতেও একান্তই একা কবর জিয়ারত করেছেন। এতে প্রতি শবেবরাতে কবর জিয়ারত করা প্রমাণ হয় না। তাছাড়া তিনি কবর জিয়ারতের জন্য কখনো সময় নির্ধারণ করে প্রচার ও ডাকাডাকি করেননি। এমনকি হজরত আয়েশা (রা.) কর্র্তৃক প্রকাশ হওয়ার পরও সাহাবা (রা.) ও তাবেয়িরা এমনকি পরবর্তী আইম্মায়ে মুজতাহেদিন কর্র্তৃক সময় নির্ধারণ করে প্রচার করা ও এন্তেজাম করার প্রমাণ কোথাও পাওয়া যায় না।

সুতরাং শবেবরাতে আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই একাকী কবর জিয়ারত করা যেতে পারে। নিজ সময়মতো ঘোষণাবিহীন একাকী হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মতো হলেই তা হবে ইত্তেবায়ে রাসুল ও সওয়াবের কাজ। অন্যথায় তা হবে গোনাহের কাজ। অবশ্য এন্তেজাম ছাড়া এমনিতেই কিছু লোক সমবেত হয়ে গেলে অসুবিধা নেই।

কিন্তু কবর জিয়ারত করাই যাবে না কিংবা করতেই হবে এর কোনোটিই ফেতনা ছাড়া ইসলামের জন্য কল্যাণজনক নয়।

ইসলাম বিভাগের আরো খবর
তাবলিগের বিরোধটা আসলে কোথায়

তাবলিগের বিরোধটা আসলে কোথায়

ওয়াজ মাহফিল সরকারিভাবে মনিটরিংয়ের অনুরোধ

ওয়াজ মাহফিল সরকারিভাবে মনিটরিংয়ের অনুরোধ

নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ না করলে নামাজ হবে?

নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ না করলে নামাজ হবে?

আশুরার দিনে যে দুইটি আমল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

আশুরার দিনে যে দুইটি আমল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

পবিত্র আশুরা ২৯ জুলাই

পবিত্র আশুরা ২৯ জুলাই

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান