ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি, লক্ষণ এবং সতর্কতা


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক: প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২০, ০৪:৪৬ পিএম আপডেট: মার্চ ৮, ২০২০, ০৭:৩৮ পিএম
করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি, লক্ষণ এবং সতর্কতা

করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত এক লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৮৭।বাংলাদেশেও ৩ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন এখনও আবিস্কার করা সম্ভব হয়নি। তাই প্রতিরোধই এখন একমাত্র পথ। ইতোমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই ভাইরাসটি কতটা ভয়ংকর এবং কীভাবে ছড়ায়, তা নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

করোনা ভাইরাস কী?

করোনা ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯-এনসিওভি। এটি এক ধরনের করোনা ভাইরাস। ভাইরাসটির অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৭টি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি হয়তো মানুষের দেহকোষের ভেতরে ইতোমধ্যে ‘মিউটেট করছে’, অর্থাৎ গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করছে। ফলে এটি আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। সোমবারই বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন, এ ভাইরাস একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে ছড়াতে পারে।

কতটা ভয়ংকর এই ভাইরাস
এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে। তবে এর পরিণামে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া, নিউমোনিয়া এবং মৃত্যু ঘটারও আশঙ্কা রয়েছে। এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের দুই শতাংশ মারা গেছেন, হয়তো আরও মৃত্যু হতে পারে। তাছাড়া এমন মৃত্যুও হয়ে থাকতে পারে যা চিহ্নিত হয়নি। তাই এ ভাইরাস ঠিক কতটা ভয়ংকর, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এক দশক আগে সার্স (পুরো নাম সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামে যে ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৮০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল সেটিও ছিল এক ধরনের করোনা ভাইরাস। এতে আক্রান্ত হয়েছিল ৮ হাজারের বেশি মানুষ। আর একটি ভাইরাসজনিত রোগ ছিল মিডল ইস্টার্ন রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা মার্স। ২০১২ সালে এতে মৃত্যু হয় ৮৫৮ জনের।

করোনা ভাইরাসের লক্ষণ কী
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, জ্বর এবং কাশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় পাঁচ দিন লাগে। প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। তারপর দেখা দেয় শুকনো কাশি। এক সপ্তাহের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং তখনই কোনও কোনও রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। 

কীভাবে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস
মধ্য চীনের উহান শহর থেকে এই রোগের সূচনা। ৩১ ডিসেম্বর এই শহরে নিউমোনিয়ার মতো একটি রোগ ছড়াতে দেখে প্রথম চীনের কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

তবে ঠিক কীভাবে এর সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারেরনি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সম্ভবত কোনও প্রাণী এর উৎস ছিল। প্রাণী থেকেই প্রথমে ভাইরাসটি কোনও মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং তারপর মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়েছে। এর আগে সার্স ভাইরাসের ক্ষেত্রে প্রথমে বাদুড় এবং পরে গন্ধগোকুল থেকে মানুষের দেহে ঢোকার নজির রয়েছে। আর মার্স ভাইরাস ছড়িয়েছিল উট থেকে।

করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে উহান শহরে সামুদ্রিক একটি খাবারের কথা বলা হচ্ছে। শহরটির একটি বাজারে গিয়েছিল এমন ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।  ওই বাজারটিতে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী বেচাকেনা হতো

কিছু সামুদ্রিক প্রাণী যেমন বেলুগা জাতীয় তিমি করোনা ভাইরাস বহন করতে পারে। তবে উহানের ওই বাজারে মুরগি, বাদুড়, খরগোশ এবং সাপ বিক্রি হতো।

এর চিকিৎসা কী?
ভাইরাসটি নতুন হওয়াতে এখনই এর কোনও টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এমনকি এমন কোনও চিকিৎসাও নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে মানুষকে নিয়মিত হাত ভালোভাবে ধোয়া নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে। হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা এবং ঠান্ডা ও ফ্লু আক্রান্ত মানুষ থেকে দূরে থাকারও পরামর্শ দিয়েছে তারা। এশিয়ার বহু অংশের মানুষ সার্জিক্যাল মুখোশ পরা শুরু করেছে।

আপাতত প্রতিকার হিসেবে এ ভাইরাস বহনকারীদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে বলছেন বিজ্ঞানীরা। ডাক্তারদের পরামর্শ, বারবার হাত ধোয়া, হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা ও ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ পরা।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. গ্যাব্রিয়েল লিউং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এ নির্দেশনায় বলছেন, হাত সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, বারবার হাত ধুতে হবে। হাত দিয়ে নাক বা মুখ ঘষবেন না, ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ পরতে হবে। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে মুখোশ পরুন, আর নিজে অসুস্থ না হলেও, অন্যের সংস্পর্শ এড়াতে মুখোশ পরুন।’

গো নিউজ২৪/আই

স্বাস্থ্য বিভাগের আরো খবর
করোনা নিয়ে হঠাৎ বড় দুঃসংবাদ

করোনা নিয়ে হঠাৎ বড় দুঃসংবাদ

দেশে এইডস রোগী বাড়ছে, বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন সমকামীরা

দেশে এইডস রোগী বাড়ছে, বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন সমকামীরা

বহির্বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা হারানোর পথে বাংলাদেশের এমবিবিএস ডিগ্রি

বহির্বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা হারানোর পথে বাংলাদেশের এমবিবিএস ডিগ্রি

বাংলাদেশে ডেঙ্গু টিকার সফল পরীক্ষা

বাংলাদেশে ডেঙ্গু টিকার সফল পরীক্ষা

মশা নিধন যাদের দায়িত্ব, তাদের তা সঠিকভাবে পালন করতে হবেঃ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

মশা নিধন যাদের দায়িত্ব, তাদের তা সঠিকভাবে পালন করতে হবেঃ স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ইউটিউব দেখে ফিজিওথেরাপি সেন্টার!

ইউটিউব দেখে ফিজিওথেরাপি সেন্টার!