ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তারেকের ফেরারী জীবনের দিনলিপি!


গো নিউজ২৪ | সাব্বির আহমেদ প্রকাশিত: মে ২০, ২০১৮, ০৩:১০ পিএম আপডেট: মে ২০, ২০১৮, ০৯:১০ এএম
তারেকের ফেরারী জীবনের দিনলিপি!

ঢাকা: কিংস্টোন হোটেল লবিতে প্রায় বিকেলেই তাকে দেখা যায়। বসে আছেন। কফিতে চুমুক দিচ্ছেন। কারও সাথে খোশ গল্প করছেন। কোন গোপনীয়তা নেই। অদূরেই তার বাসা। তাই নিজেই কার ড্রাইভ করে বেরিয়ে পড়েন। বাংলাদেশে তিনি ফেরারী আসামী। মাথায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড। আর খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ায় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশ সরকার তাকে খুঁজছে। তাকে ফেরত আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। লন্ডনে কোন প্রক্রিয়ার তিনি এখন অবস্থান করছেন এ নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।

তবে শুরু থেকে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। তার একটি মেয়াদ ছিলো। পরে আর কোন প্রক্রিয়ায় স্বপরিবারে তিনি সেখানে অবস্থান করতে পারেন?

এর জবাবে লন্ডনের হোয়াটচ্যাপেল (Whitechapel)-এর একজন সলিসিটর মাহতাব আহমেদ বলছেন, ‘তারেক রহমান লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। তারপরে তিনি এখন যেভাবে আছেন তাকে একটিমাত্র প্রক্রিয়ায় থাকা সম্ভব আর সেটি হলো ‘ইনডিফিনিট লিভ টু রিমেইন’। এর মানে হলো তিনি স্থায়ীভাবে সেখানে বসবাস করতে পারবেন। চাইলে বৃটেনের নাগরিত্ব গ্রহণ করতে পারবেন।'

এই নাগরিকত্ব তিনি না নিয়ে ‘বাংলাদেশের নাগরিক’ হিসেবেই রাজনৈতিক আশ্রয়ে সেখানে আছে এটি তার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিছুদিন আগে জানিয়েছেন।

‘এখন তারেক রহমান নাগরিকত্ব গ্রহণ না করে ইনডেফিনিট লিভের রেসিডেন্স কার্ডধারী হিসেবে থাকছেন’- সলিসিটরের ধারণা।

এই সলিসিটর তারেক রহমানের একজন ঘনিষ্টজনের বরাত দিয়ে বলেন, তারেককে বাংলাদেশে ফেরাতে যে প্রত্যাবর্তন চুক্তির কথা ভাবছে বাংলাদেশ সরকার, তা ঠেকাতে বৃটেন ও ইউরোপের মানবাধিকার আদালতে যাওয়ার একটা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তারেক রহমান।

এ অবস্থায় তারেক রহমান সেখানে বসবাস করে বাংলাদেশের ঘটনাগুলোর মধ্যে প্রায়ই ঢুকছেন তিনি। সেখানে জাতীয়তাবাদী দলের অনেকেই তার সাক্ষাৎ পাচ্ছেন। একান্ত কয়েকজন তার বাসা পর্যন্ত যাচ্ছেন।

লন্ডনে যে কিংস্টন এলাকায় তারেক রহমান থাকছেন সেটি একটি অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত। তার আশেপাশেই বৃটেনের বহু এমপি-মন্ত্রীর বাসা।

যুক্তরাজ্য বিএনপি দলীয় একটি বিশেষ সূত্র জানায়, লন্ডনে শুরুর দিকে তিনি সিলেট প্রবাসী যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি কমর উদ্দিনের আশ্রয়ে ছিলেন। তার সবকিছু দেখভাল করতেন কমর উ্দ্দিন পরিবার। ২০১৩ সালে কমর উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার কাছাকাছি আসেন সিলেটের জগন্নাথপুরের আরেক লন্ডন প্রবাসী আব্দুস সাত্তার ও দক্ষিন সুরমা উপজেলার লন্ডন প্রবাসী কামাল উদ্দিন। এখন এ দু’জন তাকে দেখভাল করছেন।

আর তারেক রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে মিশে চলছেন যিনি তিনি পারভেজ মল্লিক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রদল নেতাকে সস্ত্রীক তারেক পরিবারে যেকোন সময় যেতে পারেন। ব্যাক্সহকারি হিসেবে আছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেকছাত্রদল নেতা আব্দুর রহমান সানী।

কিংস্টন হোটেলসহ আশেপাশে ঘুরে বেড়াতে সানীকে সঙ্গে দেখা যায়। সানীর মোবাইল ফোনে দু’দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে পাওয়া যায়নি। সতর্কতার সঙ্গে বাংলাদেশি নাম্বারের ফোন কল তিনি এড়িয়ে চলেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

তারেক রহমান ২০০৮ সালে ভ্রমণ ভিসায় চিকিৎসার জন্য ব্রিটেন যাওয়ার পর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি লন্ডনে আছেন।

দেশে ১৭ বছরের দন্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে ফেরাতে বাংলাদেশ সরকার বৃটেনের প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু আসামি প্রত্যর্পণের কোনো চুক্তি বাংলাদেশ-বৃটেনের মধ্যে নেই। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলাসহ সাতটি মামলা চলমান রয়েছে। এ ছাড়া দুটি মামলায় ৭ বছর ও অন্যটিতে ১০ বছরের সাজা হয়েছে|

আসামি প্রত্যর্পণের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাজ্যের পারস্পরিক আইনি সহযোগিতা চুক্তি করার কথা বিবেচনা করছে বাংলাদেশ। এর বিপরীতে আবার রহমান যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি ইউরোপের মানবাধিকার আদালতে গিয়ে এটি মোকাবেলা করতে পারেন বলেও বৃটেনের অভিবাসন বিষয়ে অভিজ্ঞ সলিসিটররা মনে করছেন।

 

গো নিউজ২৪/আই

সংবাদপত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর
ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে