ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশ ঘুরিয়ে লাভটা কী হলো


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০১৮, ০৮:১০ পিএম
বিদেশ ঘুরিয়ে লাভটা কী হলো

ঢাকা : রাজধানীতে বেডে়ই চলেছে ধুলো। সম্প্রতি এটি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। নগরীর ধুলো সমস্যা মোকাবেলায় কাজে আসছে না ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ‘মাঝে-মধ্যে’ পানি ছিটানোর ব্যবস্থা। অবশ্য ‘মাঝে-মধ্যে এভাবে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা কাজে আসার কথাও নয়’।

এদিকে, রাজধানীর ধুলো মোকাবেলার দায়িত্বে যারা রয়েছেন_ তাদের অর্থাৎ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও ওয়াসার কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে_ কিভাবে ঢাকায় ধুলোর বিপরীতে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ রাখা যায়। কিন্তু তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে দিনে দিনে অদক্ষ উন্নয়নের পথেই হাঁটছেন, কী লাভ হলো টাকা খরচ করে তাদের বিদেশ ঘুরিয়ে?

ঢাকাতে গাড়ির ধোঁয়া, ধুলোবালি নানা কারণে প্রতিনিয়তই বাড়ছে বায়ু দূষণ। বাতাসে বাড়ছে মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক পিএম ২.৫ এর মাত্রা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে ফুসফুসজনিত নানা রোগসহ ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে।

রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়া থেকে শুরু করে রামপুরা রোড হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত রাস্তাজুড়েই ধুলোবালি। একই অবস্থা রাজধানীর মিরপুর, কমলাপুর, টিকাটুলি এলাকার। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলা এলাকাসহ অন্য এলাকাও ধুলোর নগরীতে রূপ নিয়েছে।

সরেজমিনে রাজধানীর রামপুরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অসংখ্য নাগরিকের নাকে মার্ক্স। বাসে বাসে ও ফুটপাতে চলছে মাক্সের রমরমা ব্যবসা। ধুলোর কারণে কেউ স্বাচ্ছন্দে কথাও বলতে পারছেন না। এমনকি ব্যস্ততম ওই এলাকার রাস্তার পাশের চায়ের দোকেনে নেই ভিড়।

কথা হয় মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা রনি হায়দারের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রধান সড়ক থেকে অনেকটা ভেতরে তার বাসা। কিন্তু প্রধান রাস্তার ধুলো চলে যায় তার বাসায়। বিছানা থেকে শুরু করে ঘরের আসবাবপত্রে রাস্তার ধুলো।

তিনি বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখা যায়, সারা শরীরের ধুলো। অদ্ভুত শহরের গল্প লেখার চিন্তা করছেন তিনি।

এমন সমস্যা অত্র এলাকার প্রায় প্রতিটি বাসায়। শুধু রাস্তা নয়, রাস্তার ধুলো বাসা বাড়িতে চলে যাচ্ছে।

এদিকে রাজধানীর প্রতিটি সড়কে একযোগে চলছে নানা উন্নয়ন কাজ। ওয়াসা থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন নানা উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে শহরের প্রতিটি স্থানে ধুলো। যদিও ধুলো নিরসনের সামর্থ থাকার কথা ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের, কিন্তু নেই কেন?

শীত মৌসুম শুরু হবার পর থেকেই শুরু হয়েছে একাধিক সেবা সংস্থার উন্নয়ন কাজ। কোন ধরনের নিয়ম না মেনে চলছে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। একদিকে চলছে কাজ, অন্যদিকে শহরের বাসিন্দাদের নাকে হাত।

এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবাহান বলেন, শহরের সব কিছুর দেখার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। কিন্তু তারা নিজেরাই নিয়ম না মেনে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করছে।

তিনি জানান, রাস্তায় উন্নয়নের জন্য ১৯৯৭ সালের আইন অনুযায়ী প্রকাশ্যে উন্নয়ন করলে সেখানে বাঁধা দেবে পরিবেশ অধিদপ্তর ও সিটি করপোরেশন। কিন্তু কারো কোন জবাবদিহিতা না থাকায় ইচ্ছে মতো নাগরিকদের বিপদে ফেলছে।

তিনি বলেন, ওয়াসা কিংবা অন্য কোন সংস্থায় রাস্তা খোঁড়ার আগে সিটি করপোরেশন থেকে অনুমতি নিতে হয়। যারা অনুমতি দিচ্ছে তারা কেন নিয়ম না মেনে উন্নয়ন করতে গেলে বাঁধা দিচ্ছে না।

এদিকে রাজধানীর ধুলো মোকাবেলায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পানি ছিটানো প্রকল্প চলমান থাকলেও তা কাজে আসছে না। ভিআইপি রাস্তায় দিনে দুইবার পানি ছিটিয়ে যাবার কয়েক মিনিটের মধ্যে আবার ধুলো।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মেকানিক্যাল রোড ক্লিনার দিয়ে রাস্তার ধুলো পরিষ্কার করেও কাজে আসছে না।

এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক কমোডোর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ধুলোয় পানি ছিটালে রাস্তা কাঁদা হয়ে যায়। এরপরও বেশি সময় পানির কার্যকারিতা থাকে না। অল্প সময়ের মধ্যে আবার সেই ধুলো।

তিনি বলেন, ওয়াসা কিংবা সিটি করপোরেশন সবাই রাস্তায় উন্নয়ন কাজ করছে। আর এসব সংস্থায় কর্মকর্তারা বিদেশে ঘুরে দেখেছেন কিভাবে রাস্তায় উন্নয়ন কাজ করতে হয়। কিন্তু কেউ তা প্রয়োগ করছেন না।

তিনি আরো বলেন, পরিবেশ সম্মত প্রক্রিয়ায় যদি রাস্তায় উন্নয়ন কাজ করা হয়। তাহলে নাগরিকদের এতো কষ্ট হয় না।

ডিএনসিসি এলাকার নাগরিকদের ধুলো থেকে রক্ষা করার জন্য কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা_ জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, মেকানিক্যাল রোড ক্লিনার দিয়ে রোববার (৩ মার্চ) বাংলামটর থেকে বনানী ফ্লাইওভার পর্যন্ত রাস্তা পরিষ্কার করা হয়েছে। ভিআইপি এ রাস্তায় চার টন ধুলো মেশিন তুলে নিয়েছে। ঝাড়ু দিয়ে ধুলো পরিষ্কার করা যায় না, যদি ধুলো বন্ধের কাজ না করা হয়।

তিনি বলেন, সবাই রাস্তা কাটাকাটি করছে। ভদ্রচিতভাবে কাজ না করলে ধুলো কমানো সম্ভব নয়।

একই কথা বলেন ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক খোন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম। তিনি বলেন, মাত্র ৯টা গাড়ি দিয়ে সকাল ৭টায় ও বিকেল ৩টার দিকে ভিআইপি সড়কে পানি ছিটানো হয়। এতে শহরের ধুলো কমানো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, পানি ছিটানোর পর কিছু সময় ধুলো থাকে না। এরপর আবার ধুলো। কী করবো আমরা?

করপোরেশনের এ কর্মকর্তার মতে_ শহরের রাস্তা নিয়ম মেনে খোঁড়াখুঁড়ি করা হলে ধুলোর সমস্যা সৃষ্টি হতো না।

রামপুরা এলাকায় দেখা যায়, নাকে ধুলো প্রবেশ বন্ধের জন্য মারক্স বিক্রি করছে কাদের মিয়া। তিনি জানান, ওই এলাকায় কয়েক বছর ধরে মাক্স বিক্রি করেন তিনি। তবে গত কয়েক মাস ধরে ওই এলাকায় মাক্সের চাহিদা কয়েকগুন বেড়েছে।

 

গো নিউজ২৪/আই

সংবাদপত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর
ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে