ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সব যেন সয়ে যাচ্ছে, মানুষ বুঝেছে এটাই জীবন


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২০, ০৪:২২ পিএম আপডেট: আগস্ট ২৬, ২০২০, ০৪:২৩ পিএম
সব যেন সয়ে যাচ্ছে, মানুষ বুঝেছে এটাই জীবন

আজ থেকে চুয়ান্ন বছর আগে লেখক রবার্ট এ হেইলেইন তার ‘দি মুন  ইজ এ হারিস মিস্ট্রেস’ উপন্যাসে প্রথম নিও নরমাল কথাটি শোনান। এরপর দু’হাজার পাঁচ সালে বিশ্বজুড়ে যে এভিয়ান ফ্লু'র দৌরাত্ম্য তৈরি হয় তখন জীবনে স্বাভাবিকত্ব আনতে নিও নরমাল শব্দটির আমদানি করেন রজার এম সান্ডারল্যান্ড এবং জুডি লেনার্ড।  দু’হাজার সাত- আটের অর্থনৈতিক সংকটের সময় আবার এই নিও নরমাল কথাটির আবির্ভাব হয়।

অক্সফোর্ড অভিধান জানাচ্ছে,  সংকটের সময় অর্থনীতিকে এবং জীবনধারণকে সুস্থিত রাখার নামই নিও নরমাল।  কোভিড - ১৯  এর  মতো সংকট একশো বছরে বিশ্ব দেখেনি।  দেখেনি জীবনের সঙ্গে এই বোঝাপড়াও।  একশো বছর আগের স্প্যানিশ ফ্লু'র সময় মানুষের অজানা ছিল এই নিও নরমাল জীবন, এই ভারসাম্য। তাই সেবার কোটি কোটি মানুষের মৃত্যু হয় বিশ্বজুড়ে। এই করোনা অতিমারি যে আরও প্রাণ নিতে  পারেনি  তার কারণ এই নিও নরমাল লাইফ। দক্ষিণ কলকাতার কসবার বাসিন্দা সুদীপ্ত বসু একজন ব্যাংক কর্মী।

করোনা প্রতাপ শুরু হওয়ার পর দীর্ঘদিন ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলছিল। কিন্তু জীবন নিও নরমাল লাইফে পৌঁছাতেই সুদীপ্ত এখন অফিস যাচ্ছে। মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস, প্রতিদিন তার বাইকটিকেও স্যানিটাইজ করতে হচ্ছে। অর্থনীতির চাকায় সুদীপ্ত একটি স্পাইক এরও ভগ্নাংশ মাত্র। কিন্তু এইরকম কোটি সুদীপ্ত অর্থনীতিকে সচল রাখছে। জীবনের সঙ্গে প্রতিদিন বোঝাপড়া করছে সাতের জিকো,  সতেরোর  সত্যবান,  সাইত্রিশের সাগ্নিক কিংবা সাতান্ন অথবা সাতষট্টির শিশির বাবু। 

গৃহবধূ শর্মিলা কিংবা রানু অথবা কলেজ ছাত্রী বিলকিসদের জীবন বদলে গেছে। সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং,  মাস্ক, গ্লাভস, হেডক্যাপ এখন জীবনের অঙ্গ। ঘণ্টায় ঘণ্টায় হাত স্যানিটাইজ করাটা অভ্যাস। কে যেন বলেছিল, মানুষ অভ্যাসের দাস। এই করোনা যেন এই আপ্তবাক্যটাকে আরও সত্যি করে চলেছে। সংক্রমণ চলেছে, মৃত্যু চলেছে, সেই সঙ্গে ঘুরছে জীবনের চাকাও। টুইটার সম্প্রতি পাঁচহাজার মানুষের ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। মাত্র তেরো শতাংশ মানুষ বলেছেন, এই নিও নরমাল লাইফ একঘেয়ে, বিরক্তিকর। বাকি সাতাশি শতাংশ নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবেই এটি গ্রহণ করেছেন।

প্রাগৈতিহাসিক যুগে মানুষ আগুনের ব্যবহার জানতো না। কাঁচা মাংস খেত। তারপর আগুন আবিষ্কৃত হল। আগুনের সঙ্গে সহবাস করতে লাগল মানুষ।  এই আধুনিক যুগে করোনার সঙ্গে সহবাস করছে মানুষ। করোনাও একদিন যক্ষা,  ক্যান্সার, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো জীবনের অঙ্গ হয়ে যাবে।  তার আগের এই সময়টাই নিও নরমাল।  এরপর সব নরমাল হয়ে যাবে। এখনই করোনা আমাদের সঙ্গী।

একটা সময় ছিল কারও করোনা হয়েছে শুনলে পাড়ায় হইচই পড়ে যেত। আর এখন? সব যেন সয়ে যাচ্ছে।  মানুষ বুঝেছে অতিমারির এই সংকটকালে জীবনের সঙ্গে সমঝোতাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাই, অস্বাভাবিকতাকেই স্বাভাবিক মনে করে জীবনযাপন।  আর এটাই নিও নরমাল লাইফ। যাতে মানুষ এখন অভ্যস্থ। কিংবা এটাই জীবন।

ফিচার বিভাগের আরো খবর
তিশার বাবার কান্না দেখেছেন কি

তিশার বাবার কান্না দেখেছেন কি

ডাক্তার মেয়ে ও সরকারি চাকরিজীবী ছেলের মা বৃদ্ধাশ্রমে

ডাক্তার মেয়ে ও সরকারি চাকরিজীবী ছেলের মা বৃদ্ধাশ্রমে

পেনশন তহবিল: যে কৌশলে চাকরি না থাকলেও সমস্যা নেই

পেনশন তহবিল: যে কৌশলে চাকরি না থাকলেও সমস্যা নেই

রাজার মুকুটে ২৮৬৮টি হীরা ও নীলকান্তমণি-পান্না-রুবিসহ ৪৪৪ রত্ন

রাজার মুকুটে ২৮৬৮টি হীরা ও নীলকান্তমণি-পান্না-রুবিসহ ৪৪৪ রত্ন

‘একটু জোরে কথা বললে হিসু করে দিই, শরীর কেঁপে জ্বর আসে’

‘একটু জোরে কথা বললে হিসু করে দিই, শরীর কেঁপে জ্বর আসে’

সৌদি আরবে আগে চাঁদ দেখা যায় যে কারণে

সৌদি আরবে আগে চাঁদ দেখা যায় যে কারণে