ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

করোনার উপস্থিতি নিয়ে নতুন তথ্য


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২০, ০৬:২৫ পিএম আপডেট: জুন ৩০, ২০২০, ১২:২৫ পিএম
করোনার উপস্থিতি নিয়ে নতুন তথ্য

ইউরোপে নভেল করোনাভাইরাস সম্ভবত যতটা ভাবা হচ্ছিল তার চেয়ে বেশি সময় ধরে উপস্থিত আছে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এটা ইতালিতে হাজির ছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শুরুতে। তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে ইউনিভার্সিটি অব বার্সেলোনার গবেষকরা ২০১৯ সালের ১২ মার্চের অপরিশোধিত পানির বর্জ্য পরীক্ষা করে সেখানে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করেন।

তাদের সেই গবেষণাটি সম্প্রতি প্রিপ্রিন্ট সার্ভার মেড-আর্কাইভে প্রকাশিত হয়েছিল। এই গবেষণাপত্রটি এখন সমালোচনা ও পর্যালোচনা সাপেক্ষে সায়েন্টিফিক জার্নালে প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। পিয়ার রিভিউ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত অবশ্য এ প্রমাণগুলো সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত। সুতরাং এখানে প্রশ্ন হচ্ছে কী ধরনের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছিল এবং বিজ্ঞানীরা এর প্রকৃত কী অর্থ খুঁজে পেয়েছেন?

সার্স-কোভ-২ সম্পর্কে শুরুর দিকে যেসব তথ্য পাওয়া যায় তার একটি হচ্ছে এটি আক্রান্ত মানুষের মলের মাঝেও থাকতে পারে। এরপর ভাইরাস যখন অন্ত্রের মধ্য দিয়ে যায়, সেখানে এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল লক্ষণের কারণ হতে পারে। এটি তার বাহ্যিক প্রোটিন স্তর হারালেও আরএনএ নামক জেনেটিক উপাদানের বিটগুলোও এ যাত্রায় অক্ষত থেকে যায় এবং মলের সঙ্গে তা বেরিয়ে আসে।

প্রাপ্ত প্রমাণগুলো বলছে, এ পর্যায়ে এটি আর সংক্রামক থাকে না। কিন্তু বিষয় হচ্ছে করোনাভাইরাস আরএনএর এই বিটস অপরিশোধিত পানির বর্জ্যে দেখা যেতে পারে এবং এটা প্রাদুর্ভাব ট্র্যাকিংয়ের জন্য খুবই কার্যকরী।

প্রকৃতপক্ষে এটা পূর্বাভাস দিতে পারে যে সরকারি পরিসংখ্যানগুলোতে প্রদর্শিত হওয়ার সপ্তাহ ১০ দিন আগে কোথায় মহামারী দেখা দিতে পারে। কারণ হচ্ছে লক্ষণ স্পষ্ট হওয়ার আগে মানুষের মলের মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাস চিহ্নিত হতে পারে।

এই প্রাক-উপসর্গ সম্পন্ন লোকগুলো পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়ার জন্য অসুস্থ হতে হবে এবং এরপর তারা ফল পাবে। তারপর তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি, এ প্রক্রিয়ায় এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময়ও লাগতে পারে।

এর ফলে স্পেনসহ অনেক দেশ পানির বর্জ্য পর্যবেক্ষণ করছে করোনাভাইরাস শনাক্ত করার জন্য। বিশেষ এই পরীক্ষার জন্য ওয়েস্টওয়াটার এপিডেমিওলজিস্টরা জানুয়ারি ২০১৮ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত এই পানির ফ্রোজেন স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন। তারা মূলত শহরগুলোতে কখন প্রথম ভাইরাসের অস্তিত্ব দেখা গেছে তা নির্ণয় করতে চেয়েছেন।

তারা ১৫ জানুয়ারি ২০২০ সালের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছিলেন, যা কিনা ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালের প্রথম আনুষ্ঠানিক সংক্রমণের খবর ঘোষণার ৪১ দিন আগের ঘটনা। এর আগের সব নমুনা নেগেটিভ ছিল, কেবল ১২ মার্চ ২০১৯ সালের নমুনা ছাড়া। যা কিনা করোনাভাইরাসের পিসিআর টেস্টে পজিটিভ ফল দেখিয়েছে। পিসিআর হচ্ছে সংক্রমণ শনাক্ত করার মানসম্পন্ন উপায়। পিসিআর পদ্ধতিতে লালা, শ্লেষ্মা, ফ্রোজেন ওয়েস্টওয়াটার কিংবা সম্ভাব্য যেসব জায়গায় ভাইরাস লুক্কায়িত আছে বলে মনে করা হয় সেখান থেকে সংগৃহীত নমুনা ব্যবহার করা হয়।

করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় সাধারণত একটির বেশি জিন পরীক্ষা করে দেখা হয়। গবেষকরা করেন তিনটি। তারা ২০১৯ সালের মার্চের নমুনার তিনটি জিনের একটিতে পজিটিভ ফল পেয়েছেন। সেটি ছিল আরডিআরপি জিন। তারা এই জিনের দুটি অঞ্চলের জন্য পরীক্ষা করে দেখেছেন এবং দুটিই শনাক্ত হয়েছিল অ্যামপ্লিফিকেশনের ৩৯তম সাইকেলের কাছাকাছি সময়ে। পিসিআর টেস্ট কম নির্দিষ্ট হয় অ্যামপ্লিফিকেশনের রাউন্ড বেড়ে গেলে। বিজ্ঞানীরা সাধারণত অ্যামপ্লিফিকেশনের ৪০ থেকে ৪৫ রাউন্ড ব্যবহার করে থাকেন।

এই পজিটিভ রেজাল্টের বেশকিছু ব্যাখ্যা রয়েছে। একটি সার্স-কোভ-২ ড্রেনের খুব নিম্ন স্তরে অবস্থান করছে। আরেকটি হচ্ছে পরীক্ষার নমুনা দুর্ঘটনাবশত সার্স-কোভ-২-এর সঙ্গে মিলে সংক্রমিত হয়েছিল। ল্যাবে অনেক সময় এমনটা ঘটে। এখানে পজিটিভ নমুনা নিয়ে কাজ হয় এবং এর ক্ষুদ্র অংশগুলোকে অন্য কোনো কিছুকে সংক্রমণ করা থেকে রক্ষা করা কঠিন হয়।

আরেকটি ব্যাখ্যা হচ্ছে নমুনায় অন্য আরএনএ অথবা ডিএনএ রয়েছে যা টেস্ট টার্গেট সাইটের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। ফলে এটি অ্যামপ্লিফিকেশনের ৩৯তম সাইকেলে ইতিবাচক ফল দেয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই নমুনাটি আসলেই ভাইরাস বহন করছে কিনা তা জানার জন্য আরো কিছু পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে।

প্রাপ্ত এই ফলাফলগুলোর যেটি আগ্রহ উদ্দীপক বিষয় তা হলো এটার সঙ্গে এপিডেমিওলজিক্যাল ডাটার সঙ্গে এর অমিল। স্যাম্পলিংয়ের তারিখের পর স্থানীয় জনগণের মাঝে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়ার কথা গবেষকরা উল্লেখ করেননি।

পাশাপাশি আমরা জানি কভিড-১৯ অনেক বেশি ছোঁয়াচে, অন্তত সাম্প্রতিক সময়ে তো বটেই। সেক্ষেত্রে নয় মাস ধরে শনাক্ত না হয়ে এবং কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা না থাকার পরও এর ছড়ানোর বিষয়টিও লক্ষণীয়। তাই আরো বেশি গবেষণা ছাড়া সিদ্ধান্তে পৌঁছা ঠিক হবে না।

গোনিউজ২৪/এন

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর
যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী