ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনার ভেল্টিলেটর আবিষ্কারে বাংলাদেশি চিকিৎসকের সফলতা


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২০, ০২:৩৫ পিএম আপডেট: মার্চ ৩০, ২০২০, ০৮:৩৫ এএম
করোনার ভেল্টিলেটর আবিষ্কারে বাংলাদেশি চিকিৎসকের সফলতা

করোনা মোকাবিলায় সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে বাংলাদেশে প্রথম ভেন্টিলেটর (কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস মেশিন) তৈরি করেছেন ডা. কাজী সিফায়েত ইনাম স্বাক্ষর এবং ইঞ্জিনিয়ার বায়েজীদ শুভ। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই ভেন্টিলেটরের নাম দেয়া হয়েছে 'স্পন্দন'।

এই আবিষ্কার করোনায় আক্রান্ত মুমূর্ষ রোগীদের জীবন বাঁচাতে অসাধারণ ভুমিকা রাখবে বলে আশাবাদী চিকিৎসকরা। 

একান্ত আলাপচারিতায় ডা.সাক্ষর তার এই প্রযুক্তির বিষয়ে খোলামেলা আলাপ করেন। তিনি বলেন, এক বছর আগে এই কনসেপ্টটি আমাদের মাথায় আসে। ঢাকা মেডিকেলে এফসিপিএস ট্রেইণী কার্ডিওলজির ওপর দুই বছরের প্রশিক্ষণ চলাকালিন সময়ে দেখা গেছে আমাদের কাছে যে সকল রোগী আসে তাদের বেশিরভাগই গরীব। তাদেরকে এক থেকে দুই দিন আইসিইউ'র সাপোর্ট দেয়া গেলে তাদের অনেকের জীবন রক্ষা পেতো। ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউ বেড সব সময় পূর্ণ থাকে।
এবং খরচ অনেক বেশি। ফলে অনেক রোগী দেখা যায় আইসিইউ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

তাদের প্রাইভেট হাসপাতালে যাওয়ার সামর্থ নেই। সেই সময় থেকে মাথায় কাজ করছিল যদি আমরা খুব সাধারণভাবে ভেন্টিলেটর তৈরি করতে পারি। যেটা অন্তত ৭২ ঘণ্টা থেকে চারদিন পর্যন্ত সাপোর্ট দিতে পারবে সেরকম একটি বেসিক ভেন্টিলেটর বানাতে পারলে অনেকগুলো জীবন রক্ষা পাবে।

পরবর্তীতে আমার আত্মীয় ইঞ্জিনিয়ার শুভ'র সঙ্গে আলাপ করি এটা নিয়ে কিছু করা যায় কী না। গত ছয় মাস আগে বেসিক ধারণাটি মাথায় রেখে একটি ডিজাইন তৈরি করি আমরা। ব্যস্ততার কারণে কার্যক্রম কিছুদিন বন্ধ ছিলো। পরবর্তীতে করোনা পৃথিবীব্যাপী মহামারী আকারে যখন ছড়িয়ে পরেছে তখন লক্ষ্য করলাম যে উন্নত বিশ্বের দেশ ইতালি,  আমেরিকাসহ দেশগুলোতে সবাই মোটামুটি একটি সংকটে ভুগছে সেটা হচ্ছে ভেন্টিলেটর। রোগীর পরিমান বেড়ে গেলেও সেই তুলনায় ভেন্টিলেটরের সংখ্যা খুবই কম।

বিশ্বব্যাপী মেডিকেল কোম্পানির ভেন্টিলেটর সাপোর্টও সীমিত। যেগুলো আছে সেগুলো বিক্রি হয়ে গেছে।

এ অবস্থায় বাংলাদেশে করোনা আরো ছড়িয়ে পরলে অবস্থা খারাপ হবে। এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এসকল বিষয় মাথায় রেখে গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

গত শনিবার পুরো বিষয়টির একটি প্রোটো (প্রথমিক) তৈরি করেছি। যেহেতু এটি একটি মেডিকেল পণ্য সেক্ষেত্রে এটি বাজারে আনতে কিছুটা আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। আমরা একটি স্যাম্পল ইতোমধ্যে তৈরি করেছি যেটার পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে আরো অনেকগুলো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। চূড়ান্তভাবে বাজারে আসতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে।

এছাড়া ফান্ড সরবরাহের কিছু ব্যাপার আছে। যদি আমরা প্রয়োজনীয় অর্থ এবং খুব দ্রুত কাজগুলি গুছিয়ে ফেলতে পারি তাহলে আমরা আগামী এক মাসের মধ্যে বৃহৎপরিসরে উৎপাদন কাজ শুরু করতে পারবো। বাজারে প্রতিটি পূর্ণাঙ্গ ভেন্টিলেটরের মূল্য পাঁচ লাখ থেকে শুরু হলেও করোনার মহামারী ঠেকাতে আমাদের বেসিক ভেন্টিলেটরের প্যাকেজটির মূল্য হবে এক লাখ টাকার মধ্যে। যেটা সকল শ্রেণির মানুষের জন্য সাধ্যের মধ্যে থাকবে।

যেহুতু পন্যটি প্রোটো (প্রাথমিক) পর্যায়ে আছে সেক্ষেত্রে যাচাই বাছাইয়ের পর যদি আমরা পূর্ণাঙ্গ সার্টিফিকেট পাই তখন আমরা ছোটখাটো একটি ফ্যাক্টরির মত চালু করবো। ডা. কাজী সিফায়েত ইনাম সাক্ষরের জন্ম কুমিল্লার গোবিন্দপুরে। মা সাহিদা খাতুন কুমিল্লার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা। জন্ম ও বেড়ে ওঠা ক্যান্টনমেন্ট কোয়ার্টারে।

ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। বর্তমানে এফসিপিএস কার্ডিওলজির ওপর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। দুই ভাই বোনের মধ্যে তিনি বড়। বাবা কাজী এনামুল হক ব্যবসায়ী।

গোনিউজ২৪/এন

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর
যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী