ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মারিয়ামের স্ট্যাটাস ভাইরাল


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০১৯, ০৪:২০ পিএম আপডেট: নভেম্বর ৬, ২০১৯, ১০:২০ এএম
মারিয়ামের স্ট্যাটাস ভাইরাল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মারিয়াম রশিদ ছন্দা। গতকাল মঙ্গলবার ছাত্রলীগের এক কর্মী তার পেটে লাথি মারেন। এতে যন্ত্রণায় মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি।

আহত ছন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী। আহতাবস্থায় মারিয়াম রশিদ ছন্দাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার আহতাবস্থার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে।

ওই ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এই হামলা ও আন্দোলন নিয়ে নিজের ফেসবুক পাতায় একটি স্ট্যাটাস দেন ছন্দা।  সেখানে তিনি আন্দোলনে হামলাকারীদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মারিয়াম রশিদ ছন্দার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি এখানে তুলে ধরা হলো :

নভেম্বর ৫ আজীবন মনে রাখবার মতো দিন। আন্দোলনে গিয়েছিলাম সাংস্কৃতিক কর্মীর যে দায়বদ্ধতা থাকে সেখান থেকে, বিবেকের তাড়নায়। সবাই বলে দ্রোহের কবিতা আমার কন্ঠে বেশ ভালো যায়, দ্রোহটা আমার স্বভাবজাত। অন্যায় দেখলে আমি চুপ করে থাকিনি কোনোদিন, সেটা ঘরে বা বাইরে যেখানেই হোক। কিন্তু কাউকে অসম্মান, আঘাত করা, হেয় করা আমার ধাতে নেই, আমি প্রতিবাদটাও ওই ভাষায়ই করি। সব সাংস্কৃতিক কর্মীও তাই করে, আমাদের শিক্ষা এই।

অথচ সেই আমাকেও বলা হলো শিবির এবং এইভাবে আমার তলপেটে লাথি দেওয়াকে জাস্টিফাই করা হলো। আমার শিক্ষককে মাটিতে ফেলে পেটানো হলো, আমার বন্ধুকে পেটানো হলো এবং সেখানে আমরা মেয়েরা ব্যারিকেড দিলাম যেন স্যারের গায়ের আগে আমাদের গায়ে মার লাগে। ঠিক তখন কুমিরের কান্না দেখাতে ছাত্রলীগ আসল এবং স্যারকে উদ্ধারের নাম করে পা ধরে টেনে নিয়ে গেল এবং সেখান থেকে বিকেল পর্যন্ত তাকে হাসপাতালে নিতে দেয়নি।

এতদিন শুনেছি, অল্প-বিস্তর দেখেছি এদের তাণ্ডব। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে না পড়লে কখনোই জানতাম না এরা আসলে কী! আমি কিছুই বলব না, কাউকে অভিশাপ দেব না, রাগ করব না, আমি সব ভুলে যাব। সত্যি বলছি কেবল এইটুকু স্মৃতি ছাড়া।

যারা এই হামলা নেতৃত্ব দিলেন, নীরব সমর্থন দিলেন এবং এতকিছুর পরও প্রতিবাদ করলেন না, আজকের পর থেকে আপনাদের চোখের দিকে তাকাতে আমার ইচ্ছা করবে না। যে সকল মহান শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র, বন্ধু, জুনিয়ররা ন্যায়ের পেটে লাথি মারলেন, সত্যের পেটে লাথি মারলেন, পাজর ভাঙলেন, আমি তাদের সবিনয়ে অনুরোধ করছি, আপনাদের সঙ্গে আমার হৃদয়ের বন্ধন কেটে গেছে। ক্যাম্পাসে হয়তো আর এক বছর দেখব বড়জোর, আমাকে ফেসবুক থেকে এখনই রিমুভ করে দিন। আপনাদের প্রত্যেককেই আমি চিনি, এই ঘটনার পর আপনাদের ফেসবুক বন্ধু হয়ে থাকবার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।

দুপুর ১২টা ৩০ থেকে এ পর্যন্ত তিনবার পেইনকিলার দেওয়া হলো, ব্যথাটা কমছে না। আমার পাশের ওয়ার্ডে আমার বন্ধু, জুনিয়র কাতরাচ্ছে। এই ব্যথা নিয়েও তাই লিখলাম। সত্যি বলছি আপনাদের আমার প্রয়োজন নেই। আমি আমার প্রিয়জনদের চিনে গেছি, আমি আমার মানুষ চিনে গেছি। শুনে রাখুন, এই ব্যথাই এদের শক্তি, এই ব্যথাই এদের বহুদূর নিয়ে যাবে।

আর মনে রাখুন, ‘যে আগুন মিটমিট করে জ্বলছিল একজনের মনে, সে আগুন এক সময় দপদপিয়ে উঠবে সকলের মাঝে। একবার সকলের মাঝে আগুন জ্বলে উঠলে মূল মিটমিটে আগুন না থাকলেও সমস্যা নেই।’

গো নিউজ২৪/আই

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর
যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী