ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গরু-বাছুর বেচে ধান কাটার টাকা জোগাড়, কাঁদলেন কৃষক আবুল


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মে ২৩, ২০১৯, ০৪:০৬ পিএম আপডেট: মে ২৩, ২০১৯, ১০:০৬ এএম
গরু-বাছুর বেচে ধান কাটার টাকা জোগাড়, কাঁদলেন কৃষক আবুল

ধান পেকে পড়ে আছে ক্ষেতে। দ্রুত পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে না পারলে ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই শ্রমিক দিয়ে ক্ষেতের ধান কাটালেন কৃষক আবুল হোসেন।  

কিন্তু ধান কাটার জন্য শ্রমিকের মজুরি জোগাড় করতে উপায় না দেখে বেচে দিতে হলো নিজের দুটি গরু। 

আবুল হোসেনের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ত্রিমোহন গ্রামে। এ বছর চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন তিনি। সবই তার নিজের জমি। জমিতে সার-কীটনাশক দেওয়া, সবই ঠিকঠাকভাবে করেছেন। মোট উৎপাদন খরচ শ্রমিকদের ধান কাটার খরচ ধরে হবে ৬৪ হাজার টাকা। আশা করেছিলেন, ধানের ভালো দাম পাবেন। কিন্তু ধানের যা দাম তাতে হতাশ আবুল হোসেন। পার বিঘায় ১৬ মণ করে ধান হবে বলে মনে করছেন তিনি। মণ প্রতি ৫০০ টাকায় ধান বিক্রি করলে সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা পাবেন। সেই হিসেবে উৎপাদন খরচই উঠছে না তার।

এরই মধ্যে আবুল হোসেনের মাঠের ধানে পাক ধরেছে। আশপাশের সবাই ধান কাটা শুরু করেছেন। তিনি কাটেন না। মনের ভেতর দুশ্চিন্তার ঝড় বয়ে যায় তার। চার বিঘা জমির ধান কাটতে কমপক্ষে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকার দরকার। রোজ একজন শ্রমিকের মজুরি ৮০০ টাকা।

আবুলের হাতে কোনো টাকা ছিল না। রাত-দিন ভাবছিলেন, কীভাবে তিনি টাকা জোগাড় করবেন? একবার ভাবেন, সুদে টাকা নেবেন। আবার ভাবেন, ধানের দাম ভবিষ্যতে যে বাড়বে তার নিশ্চয়তা কোথায়? আবুল হোসেন তার স্ত্রী উজালা বেগমের সঙ্গে পরামর্শ করেন। অনেক ভেবে উজালা বেগম গাভি বিক্রি করে দেওয়ার পরামর্শ দেন। 

তিনি বলেন, গাভি বিক্রির টাকায় ধান কাটা হয়ে যাবে। সুদের টাকার অনেক জ্বালা। সুদের টাকা নেওয়ার দরকার নেই।

সব ভেবে চিনতে গাভি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন আবুল। গাভির সঙ্গে বাছুরও আছে। তাই বিক্রি করলে গাভি-বাছুর একই সঙ্গে বিক্রি করতে হবে। নিজের মনের সঙ্গে যুদ্ধ করেই সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেন তিনি। ৪২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে যায় তার সাধের বাদামি গরু আর বাছুর। ব্যাপারী যখন গাভি আর বাছুর গোয়ালঘর থেকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন, কেঁদে ফেলেছিলেন আবুল।

গাভি বিক্রির সেই টাকা হাতে পাওয়ার পর আবুল হোসেন মির্জাপুরের হাটে গিয়ে দশ জন শ্রমিক (স্থানীয় ভাষায় কামলা) নিয়ে আসেন বাড়িতে। প্রতিদিন আটশো টাকার পাশাপাশি তিন বেলা খাওয়াতে হয় এক একজন শ্রমিককে। আবুল হোসেনের ধান কাটা চলছে। দুই বিঘার মতো কাটা হয়েছে।

কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ধানের আবাদ আর করুম না। লাভ তো হয়ই না। সব লোকসান। ধান বুনে গরু-বাছুর ব্যাচন লাগে। খাওন লাগে, তা ই পেটের দায়ে আবাদ করি। ' মাঠ থেকে আবুল হোসেন যান নিজের বাড়িতে। গোয়ালঘরের কাছে গিয়ে বলেন, ধানের আবাদ করে গাভি-বাছুর হারাতে হয়েছে। রোজ দুই সের করে দুধ দিত।

গো নিউজ২৪/আই

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর
যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী