কক্সবাজারে রামুর অধিবাসী মোহাম্মদ আজিম। স্থানীয়রা তাকে পাগল আজিম বলেই জানে। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। ভিক্ষা করে ১০ টাকা পেলেই মহা খুশীতে নাচতে থাকেন।
কিন্তু কয়েক বছর আগেই তিনি ছিলেন রামু উপজেলার তেচ্ছিপুল এলাকার অন্যতম ধনী ও কোটিপতি। আর এখন উদ্দেশ্যহীন দ্বারে দ্বারে, পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়ান তিনি।
অথচ এই ব্যক্তি কয়েক বছর আগে দুই হাতে টাকা ওড়াতেন। বিলাসবহুল জীবনে ছিলেন অভ্যস্ত। টাকা খরচ করতেন পানির মতো। তার বাড়িটিও ছিল দেখার মতো। চড়তেন বিদেশি গাড়িতে। হাতের মোবাইল ফোনটি সে সময়ের সেরাটি ব্যবহার করতেন।
গহনায় মুড়িয়ে রেখেছিলেন স্ত্রীকে। স্ত্রীকেও কিনে দিয়েছিলেন দামী মোবাইল। আর পাঁচটা ধনীর মতোই চাকচিক্যে ভরা ছিল তার জীবন।
পড়াশোনা ছেড়ে ১৭ বছর বয়সে ব্যবসায় নেমে পড়েন আজিম। কক্সবাজার থেকে পান, শুঁটকি ও কাঠ পাঠাতেন ঢাকায়। তরতর করে তার ব্যবসা ফুলে ফেঁপে ওঠে। তিন বছরেই হয়ে যান কোটিপতি। এরপর ব্যবসার প্রসারিত হতে থাকে তার।
তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ভালো আয় করতে শুরু করেন। কিন্তু আজিম যেভাবে তরতর করে উঠেছিলেন সেভাবেই নেমে গেলেন। চোখের পলকে রাজা, ভিখারীতে পরিণত হলেন।
বিশেষ একটি ঘটনায় ব্যবসায় লোকসান গুনতে হলো অনেক। এরপর আর দাঁড়াতে পারেননি।
একে একে গাড়ি, বাড়ি, স্মার্টফোন, কম্পিউটার সব কিছু বিক্রি করে আজ নিঃস্ব। তবুও যদি কর্ম করে খাওয়ার যোগ্যতা থাকে। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে সে ক্ষমতাও হারিয়েছেন।
এখন রামু-কক্সবাজারের মহাসড়কের পাগল ও ভিখারী আজিমের দিন খুব ভালো হলে রোজগার হয় ২০ থেকে ৪০ টাকা। সেটা নিয়েই চলে যায় তার জীবন।
গত একবছর ধরে এভাবেই চলছে তার দিনকাল। পরিবারটি আর আগের মতন নেই তার। তারাও থাকছেন না আজিমের সঙ্গে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে রামু তেচ্ছিপুলের একসময়ের কোটিপতি মোহাম্মদ আজিম এখন ফুটপাতের পাগল।
গো নিউজ২৪/আই