চৈত্রসংক্রান্তি ও পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মল চত্বরে লোকসংগীত উৎসব ও কনসার্টের আয়োজন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। এতে জেমস, মিলা, ওয়ারফেজ, আর্টসেল ও ফিড ব্যাকসহ বেশ কয়েকটি ব্যান্ডের সঙ্গীত পরিবেশনের কথা ছিল।
কিন্তু অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে শুক্রবার দিবাগত রাতে উৎসবস্থলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটায় ছাত্রলীগের একটি অংশ। রাতে আগুন দেওয়ার পর কনসার্ট আয়োজকদের পক্ষ থেকে যখন ফের সবকিছু ঠিকঠাক করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল; তখন দ্বিতীয় দফায় আজ সকালে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ফলে একই দিনে দুবার আগুনের মহড়া দেখলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যে কারণে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ উদ্যাপন উপলক্ষে রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মল চত্বরে অনুষ্ঠিতব্য কনসার্টের অনুমতি বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে এক বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা। তাদের ধারণা, এ ঘটনার ফলে ডাকসুর ছাত্রলীগের সঙ্গে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে এলো। এর ফলে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দেশের সবচেয়ে বড় কনসার্ট আয়োজন হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
ছাত্রলীগের একটি বড় অংশ বলছে, মূলত ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে ‘কোণঠাসা’ করতেই অন্য তিন শীর্ষ নেতা একজোট হয়েছেন। এই অংশের দাবি, শোভন ছাড়া অন্য তিনজন নিজেদের 'আপার ছাত্রলীগ' বললেও তারা মূলত নেতা হয়েছেন ‘সিন্ডিকেট’ থেকে। অন্যদিকে শোভন নেতা হয়েছেন সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দে। প্রধানমন্ত্রী শোভনকে অন্য তিনজনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন বলে অন্য তিনজন তার প্রতি ঈর্ষান্বিত। ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে ভিপি পদে শোভনের হারের পেছনেও এই তিন নেতার তৎপরতাকে দায়ী করছে এই অংশ।
ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা বলেন, সংগঠনের এত বড় আয়োজন নিয়ে সভাপতি শোভনকে কিছু জানানো হয়নি। আয়োজনকে ঘিরে কোটি টাকারও বেশি বাণিজ্য করেছেন ছাত্রলীগের অন্য তিন শীর্ষ নেতা। এই কারণে শোভনের অনুসারীরা এই অগ্নিকা- ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটায়।
তবে, গতকাল রাতের অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনার বিষয়ে শোভন ছাড়া ছাত্রলীগের অন্য তিন শীর্ষ নেতার একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের আগে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের বাসায় একটি সভা হয়েছে। সেই সভার নির্দেশ অনুযায়ীই তার নেতা-কর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। ডাকসু নির্বাচনে হারের ‘হতাশা’ থেকেই শোভন এসব করছেন বলে দাবি করেন ওই নেতা।
এদিকে শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থলে থাকা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, এই উৎসবের স্পন্সর কোমল পানীয়ের ব্র্যান্ড ‘মোজো’। উৎসবে সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মূলত, এই টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়েই দ্বন্দ্ব।
গো নিউজ২৪/আই