ঢাকা শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

গাজীপুরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত কামু কারাগারে, তবে লাশ কার?


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুন ২, ২০১৮, ০৬:৩২ পিএম আপডেট: জুন ২, ২০১৮, ১২:৩২ পিএম
গাজীপুরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত কামু কারাগারে, তবে লাশ কার?

গাজীপুর মহানগরের পূবাইলের ভাদুনে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক ব্যক্তি নিহত হওয়া নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটায় মাদক বিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ওই ব্যাক্তির নাম-পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। 
 
পুলিশ প্রথমে জানায়, নিহতের নাম কামরুল ইসলাম কামু (৩২)। তবে কামুর স্ত্রী জানান, তার স্বামী জীবিত এবং কাশিমপুর কারাগারে আছেন। কাশিমপুর কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিকও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পরে পুলিশ দাবি করে, নিহত ব্যক্তির নাম কামাল খান ওরফে কামরুল ইসলাম ওরফে কামু। কিন্তু পুলিশ নিহত ব্যক্তির যে নাম-ঠিকানা দিয়েছে সেখানে গিয়ে ওই নামে কারও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা বলছেন, কামরুল ইসলামের বাড়ী গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর এলাকায়। সে আরিচপুর এলাকায় বাসা ভাড়া থাকতো বেশ কিছুদিন আগে। পরে সে কালিগঞ্জে থাকতো। সেখান থেকেই পুলিশ তাকে আটক করে।

গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আমীর হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ কালীগঞ্জের উলুখোলা এলাকায় রাত ১০টায় দিকে অভিযান চালায়। পুলিশ উলুখোলা মসজিদের পাশের রাস্তা থেকে মাদক বিক্রির সময় কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।

এসময় তার কাছ থেকে চার হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার ও একটি এলিয়ন প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়। তাকে নিয়ে কালীগঞ্জ থানায় যাওয়ার পথে তার সহযোগীরা মহানগরের ভাদুন এলাকায় পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়ে।

এসময় কামরুল গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঠানো হয়।

পুলিশ জানায়, বন্দুকযুদ্ধে নিহত কামু টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকার মৃত সিরাজ উদ্দিন খান ওরফে তমিজ উদ্দিন খানের ছেলে। কিন্তু বিকাল ৫টার পর পুলিশ জানায়, নিহতের নাম কামাল খান ওরফে কামু (৩২)। সে টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুর এলাকার মৃত সিরাজ খানের ছেলে।

গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আমীর হোসেন আরও জানান, কামাল খান ওরফে কামরুল ইসলাম ওরফে কামুর বিরুদ্ধে গাজীপুর, কালীগঞ্জ, ঢাকার শেরেবাংলা থানা ও নারায়ণগঞ্জ থানায় দুটি হত্যাসহ ডাকাতির চেষ্টা, চাঁদাবাজি ও মাদক মামলা মিলিয়ে মোট ১৪টি মামলা রয়েছে। টঙ্গী থানায় জোড়া খুনের মামলাসহ (নং ২২ তারিখ ২২.০৫.২০১৬) মোট ১৪টি মামলা আসামি।

এই পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, দুজনই সন্ত্রাসী এবং দুজনের নামেই মিল রয়েছে। একজেন বাড়ি পূর্ব আরিচপুর অন্যজনের নাম এরশাদনগর। তবে নিহতের বাড়ি মির্জাপুরে নয়।

টঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, নিহতের বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় শরীফ ও জুম্মন নামে দুই যুবক খুনের মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

অবশ্য শুক্রবার নিহতের বিষয় জানতে চাইলে কামরুল ইসলাম কামু কাশিমপুর কারাগারে রয়েছে বলে জানান।

অন্যদিকে কামরুল ইসলাম কামুর স্ত্রী জোস্না বেগম বলেন, কামু বিভিন্ন মামলায় গত দুই বছর ধরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। শুক্রবার দুপুরে বন্দুকযুদ্ধে নিহতের কথা শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।

তিনি বলেন, পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি কামু পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। এর সত্যতা নিশ্চিত করতে আমি শুক্রবার দুপুর ৩টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে স্বামীর সঙ্গে দেখা করি। তিনি জীবিত আছেন, কারগারেই আছেন।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে কামরুল ইসলাম কামু তার কারাগারে রয়েছে এবং জীবিত আছেন। নিহত কামরুলের বাবার নাম সিরাজ উদ্দিন খান শুনেছি। তবে বাকি তথ্য জানা নাই বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিকাল ৫টার পর থেকে ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়, কামরুল ইসলাম ওরফে কামাল খান ওরফে কামু (৩২) টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুর এলাকার মৃত সিরাজ খানের ছেলে। তার নামে মাদকসহ তিনটি মামলা রয়েছে। কিন্তু আরিচপুরে কামু নামে কারও সন্ধান দিতে পারেনি স্থানীয়রা।

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, কামুর বুকের বাম পাশে তিনটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। তিনটি গুলিই পেছন দিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশ নিহত কামুর মরদেহ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে বলে জানায়। তবে কোন ঠিকানায় কার কাছে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে এনিয়ে পুলিশ বিস্তারিত কিছু বলছে না। কালীগঞ্জের ঠিকানায় গিয়েও কামুর আত্মীয়-স্বজনদের কারও খোঁজ মিলেনি।

 

গো নিউজ২৪/আই

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর
যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী