ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আয়-সম্পদে হাসান সরকারের চেয়ে অনেক এগিয়ে জাহাঙ্গীর


গো নিউজ২৪ | গাজীপুর প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০১৮, ০৮:২৭ এএম আপডেট: এপ্রিল ১৬, ২০১৮, ১০:৪৬ এএম
আয়-সম্পদে হাসান সরকারের চেয়ে অনেক এগিয়ে জাহাঙ্গীর

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বৈধ ৯ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত দুই প্রার্থীই বিত্তবান। এরমধ্যে বিএনপির প্রার্থী মো. হাসান উদ্দিন সরকারের (হাসান সরকার) চেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের সম্পদের পরিমাণ বেশি। পেশায় ব্যবসায়ী এই দুই প্রার্থীর আয়ের ক্ষেত্রে রয়েছে বড় ব্যবধান। জাহাঙ্গীর আলমের বার্ষিক আয় হাসান সরকারের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি। জাহাঙ্গীর আলমের বার্ষিক আয় যেখানে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা, সেখানে হাসান সরকারের ১১ লাখ টাকার মতো। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নামে অতীতে মামলা থাকলেও বর্তমানে নেই। অন্যদিকে, বিএনপির মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে দু’টি মামলা চলমান। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিলকৃত হলফনামা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

হলফ নামায় দেখা গেছে, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৯জন মেয়র প্রার্থীর সবাই শিক্ষিত। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাস্টার্স ডিগ্রিধারী ও বিএনপি প্রার্থী স্নাতক পাস। এছাড়া বাকি প্রার্থীদের মধ্যে কেউ উচ্চ মাধ্যমিকের নিচে নেই। পেশার দিক থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী ছাড়া অন্য সাত মেয়র প্রার্থীর মধ্যে দুইজন শিক্ষক, দু’জন চাকরিজীবী এবং একজন ব্যবসায়ী রয়েছেন। আর দু’জনের পেশার বিষয়টি হলফনামায় স্পষ্ট নয়।

হলফনামার প্রসঙ্গে রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মণ্ডল বলেন, প্রার্থীদের হলফনামা প্রচার ও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সাধারণ ভোটাররা প্রার্থীদের তথ্য জেনে ভোট দিতে পারবেন। কেউ হলফনামায় তথ্য গোপন করলে এবং তা প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

আওয়ামী লীগ মনোনীতি প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তার বার্ষিক আয় ২ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৮ কোটি ৮৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এর বাইরে রয়েছে ১ হাজার ৫৩৬ শতাংশ কৃষি ও অকৃষি জমি। অন্যদিকে দেনা রয়েছে ৮ কোটি টাকা। রয়েছে দু’টি অস্ত্র, গাড়িসহ আসবাবপত্র। তার ওপর নির্ভরশীল কোনও ব্যক্তির আয় দেখানো হয়নি।

জাহাঙ্গীর আলমের বার্ষিক আয়ের মধ্যে মধ্যে ১ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ই ধারায় অর্জিত দেখিয়েছেন। এছাড়া, কৃষিখাত থেকে তার বার্ষিক আয় দেড় লাখ টাকা। বাড়ি ও দোকান ভাড়া পান ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে আয় ৯৪ লাখ ২০ হাজার টাকা।

তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই। অতীতে দ্রুত বিচার আইনে দু’টি মামলা দায়ের হয়েছিল তার বিরুদ্ধে। যারমধ্যে একটিতে খালাস ও অন্যটি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। নির্বাচনি প্রচার ও অন্য কার্যক্রমে তিনি ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করবেন বলে ইসিকে জানিয়েছেন। এর মধ্যে কর্মীদের পেছনে ব্যয় করবেন ১০ লাখ টাকা।

আইন অনুযায়ী, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সর্বোচ্চ ব্যয় ৩০ লাখ টাকা ও প্রার্থীর ব্যক্তিগত ব্যয় দেড় লাখ টাকা।

হলফনামায় জাহাঙ্গীর আলম তার পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ব্যবসা। তিনি অনারেবল টেক্সটাইলস কম্পোজিট ও জেড আলম এপারেলস লিমিটেড নামক দু’টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

সম্পদের মধ্যে নগদ টাকার পরিমাণ ৭ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। ব্যাংকে তার জমা রয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭১ টাকা এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৭ টাকা। আর সঞ্চয়পত্র আছে ১০ লাখ টাকার। এছাড়া জাহাঙ্গীর আলমের দু’টি গাড়ি, একটি বন্দুক ও একটি পিস্তল, ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং আসবাবপত্র রয়েছে।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৫৩৬ শতাংশ জমি। এর মধ্যে কৃষি জমি ১ হাজার ৪৯৫ দশমিক ১৫ শতাংশ, অকৃষি জমি ৩৩ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং আবাসিক/বাণিজ্যিক জমি ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। জমি বিক্রয়ের বায়না বাবদ তার ৮ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনি পরিকল্পনার বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন, ‘নির্বাচনি প্রচারে ১ লাখ ১৪ হাজার পিস পোস্টার ছাপাবেন। ১০টি নির্বাচনি ও একটি কেন্দ্রীয় ক্যাম্প স্থাপন, ১০ লাখ লিফলেট বিতরণ ও ৫৭টি পথসভা করবেন। এতে মোট ব্যয় হবে ৩০ লাখ টাকা।

বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. হাসান উদ্দিন সরকারও সম্পদশালী হলেও তার সম্পদ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে বিএনপি প্রার্থীর সম্পদের পরিমাণ অনেক কম। হলফনামায় হাসান উদ্দিন সরকারের বার্ষিক আয় ১০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ও তার ওপর যারা নির্ভরশীল, তাদের বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৯১ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। নিজের অস্থাবর সম্পদের পরিমান ৬৪ লাখ টাকা ও স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ ১৯ লাখ টাকা। এর বাইরে দু’জনের ৫৩ তোলা স্বর্ণ, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে। এছাড়া হাসান সরকার তার নিজের নামে একটি পিস্তল ও একটি শর্টগান এবং স্ত্রীর নামে একটি বন্দুক রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে হাসান সরকারের নামে ৫৯৮ শতাংশ ও তার স্ত্রীর নামে ৩০৫ শতাংশ জমি রয়েছে। আর স্ত্রীর নামে রয়েছে একটি ৪তলা বাড়ি। হাসান সরকারের ঋণ রয়েছে ২৬ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।

হলফনামায় দেখা গেছে, হাসান উদ্দিন সরকার একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেছেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকার তেজগাঁও থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি ও টঙ্গী থানায় ১৯৭৪ সনের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা চলমান রয়েছে। দু’টি মামলার একটি বিচারাধীন ও আরেকটি তদন্তাধীন রয়েছে। এ দু’টি মামলা বর্তমান সরকারের আমলে দায়ের করা হয়েছে।

গো নিউজ২৪/এমআর

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর
যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী