ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথমে রায়ের কপি, এরপর নথি, তার পর কী ?


গো নিউজ২৪ | ইমতিয়াজ আমিন, নিউজ রুম এডিটর: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮, ১০:০৭ পিএম
প্রথমে রায়ের কপি, এরপর নথি, তার পর কী ?

ঢাকা : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী অবস্থায় রয়েছেন ১৮ দিন হতে চললো।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন মামলার বিচারক ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান।

মামলার অন্যান্য ৫ আসামীকেও ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

সাজা প্রাপ্ত অন্য আসামীরা হলেন- সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের বোনের ছেলে মমিনুর রহমান। মামলায় শুরু থেকে পলাতক আছেন তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।

রায়ে সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেকের ২কোটি ১০লক্ষ ৭১ হাজার টাকা সমপরিমান জরিমানাও ধার্য করা হয়েছে। 

রায়ের পরে আলোচনা চলতে থাকে কবে জামিন পাবেন খালেদা জিয়া তা নিয়ে। ভাবা হচ্ছিলো রায় পরবর্তী রোববার খালেদার আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করবেন।

তবে তা সম্ভব হয়নি রায়ের সার্টিফায়েড কপি না মেলায়। এ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয় দেশজুরে। অতঃপর রায়ের ১২ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি কপি হাতে পান খালেদার আইনজীবীরা।

রায়ের কপি হাতে পেয়েই মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জামিন আবেদনের কথা জানান খালেদার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আগে থেকেই নিয়ে রেখেছেন বলেও জানান তিনি।

১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া, জাকির হোসেন ভূইয়া, জিয়াউদ্দিন জিয়া ও এম হেলাল উদ্দিন হেলালের হাতে এ রায়ের সার্টিফায়েড কপি দেন আদালতের পেশকার মোকাররম হোসেন। 

কপি হাতে পেয়ে সানাউল্লাহ মিয়া জানান, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার রায়ের সার্টিফায়েড কপি আমরা হাতে পেয়েছি। মঙ্গলবার উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আবেদন করবো।

তবে ২০ ফেব্রুয়ারিও খালেদার জামিন আবেদন করা হয়নি। সেদিন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন তার আইনজীবীরা।

সাজার বিরুদ্ধে করা আপিলে খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে বলা হয়েছে, যে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খালেদার সাজা হয়েছে ওই টাকা এখনও ব্যাংকে রয়েছে।

রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে মোট ৩১টি যুক্তি দেখানো হয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো- যে অভিযোগে খালেদা জিয়াকে দণ্ড দেয়া হয়েছে সেটা দুর্নীতির মধ্যে পড়ে না।

আপিলে ৬০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনের সঙ্গে ১২২৩ পৃষ্ঠার নথিপত্র জমা দেয়া হয়েছে।

সেদিন আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন, পরের দিন বুধবার ২১ ফেব্রুয়ারির বন্ধ থাকায় বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য আবেদন করবেন এবং সেদিনই জামিন আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন আইনজীবীরা।

কিন্তু আদালত জামিন শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করে দেন।

দীর্ঘ এই কর্মকান্ডের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা একবারের জন্যও মামলার নথি-পত্রের বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলেন নি।

অবশেষে কারাবন্দী হওয়ার ১৭ দিন পরে মামলার নথি-পত্রের জন্য জামিন আবেদনের আদেশ দেন নি আদালত।

রোববার ( ২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। এরপর দুই বিচারক পাঁচ মিনিট নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। পরে আদালত বলেন, নিম্ন আদালতের নথি আসার পর আদেশ দেয়া হবে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে দুপুর আড়াইটা থেকে শুনানি শুরু হয়। খালেদা জিয়ার সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিন চাওয়া হয়েছে আবেদনে।

শুনানিতে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। জামিন আবেদনের শুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি আদালতকে বলেন, ‘ইতিহাসে এই প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী যিনি এতিমদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আরো বলেন, ‘একজন প্রধানমন্ত্রীর ছেলের স্বাক্ষরে কীভাবে টাকা চলে যায়? ওই সময় তার ছেলে প্রধানমন্ত্রীর বাসায়ই থাকতেন। একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি এত বড় দায় এড়াতে পারেন না।

খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবীরা সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বয়স, অসুস্থতা ও সামাজিক অবস্থান বিবেচনা করে জামিন আবেদনের আর্জি করেন।

অন্যদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। 

এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, প্রথমে জামিন আবেদন হলো না রায়ের কপির জন্য, এর পর জামিন আবেদন হলেও তা আটকে গেল মামলার নথি-পত্রের জন্য, এর পর তাহলে কী ?


গো নিউজ২৪/আই

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর
যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী