ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গল্পটা শেখ হাসিনার, যেমন ছিল...


গো নিউজ২৪ | বিনোদন প্রতিবেদক: প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০১৮, ০৭:৫০ পিএম
গল্পটা শেখ হাসিনার, যেমন ছিল...

‘হাসিনা- এ ডটার’স টেল’ শিরোনামের ডকু- ফিল্মটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ১৬ নভেম্বর। ছবিটি এরইমধ্যে আলোচনা তৈরি করেছে। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আদর্শ নয় বরং তার নিতান্তই ব্যক্তি জীবনের গল্প ফুটে উঠেছে সেখানে। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণের অভিজ্ঞতা জানালেন নির্মাতা রেজাউর রহমান খান পিপলু।

শুরুটা কীভাবে?
আমি সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর অনেকজনকে পার্সোনালি চিনতাম। আমি যেহেতু বিজ্ঞাপন বানাই। ওনাদের সঙ্গে কাজ করতাম অনেকদিন থেকেই। এটা একটা ইনসিডেন্টাল অকুপেশনের মধ্যে পড়ে যাওয়ার অবস্থা। এমন না যে প্ল্যান করে আমাকে ডাকলো। আমাকে প্রপোজাল দিলো বা আমার রিকমেন্ডশন বললাম। ব্যাপারটি মোটেও এমন ছিল না। ওনাদের দিক থেকেও খুব একটা অর্গানিক প্রসেস ছিল না। ওনাদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল এভাবেই একদিন ভাবনায় আসলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যকলাপ কিছু ডকুমেন্টশন করে রাখি। এটা ফ্যামিলি লেভেলের জন্য। কোন অফিশিয়াল ব্যাপার নয়। এরকম একটা আমেজে আমরা তাঁর কিছু ইন্টারভিউ নেয়া শুরু করলাম। ইন্টারভিউটা একটু পেছনের গল্প থেকে শুরু করি। ওইটা যে একটা ছবি হবে। সেটা কখনোই ভাবনায় ছিল না। এইটা প্রায় বছর দুয়েক কিছু সময় অন কিছু সময় অফ রাখা হলো। বছর দুয়েক যাওয়ার পর আমরা বুঝতে পারলাম এটার একটা সম্ভাবনা আছে। তখন থেকেই আসলে আমরা এটাকে স্টোরিক্যাল ওয়েতে সাজাতে শুরু করলাম। আমাদের জার্নিটা শুরু হয়েছে ২০১৩ সালে।

পাঁচ বছর! দীর্ঘ সময়…
এমন না যে এটার পাঁচ বছর ধরে কাজ চলছে। সেটা বললে ডিরেক্টরের জন্য অনেক ভারী হয়ে যাবে। দৈর্ঘ্য মাত্র ৭০ মিনিট। তার জন্য এত সময় কেন লাগলো! ব্যাপারটি মোটেও এমন কিছু নয়। ব্যাপারটি ছিল প্রসেসিংয়ের। এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে নিয়ে কাজ করা। তার সময়, আমাদের সবার সময়। তার সঙ্গে ডেট মেলানো। ডকুমেন্টশন যোগাড় করা। অনেক প্রসেসিং ছিল। অনেক আর্কাইভাল ছিল। যেগুলো সংগ্রহ করা সহজ ছিল না। অনেক পুরনো ফুটেজ ডকুমেন্টশনের জন্য পত্রিকা অফিস থেকে শুরু করে নানা জায়গায় যেতে হয়েছে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর কিছু পুরনো ফুটেজ। বিভিন্ন ছবি। পুরো ব্যাপারটি আবার এত স্লো। এ জন্য আসলে আমাদের এই সময়টা লাগলো।

ক্যামেরার সামনে প্রধানমন্ত্রীকে ডিরেকশন দেয়ার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
আসলে ডিরেকশন দেয়ার কোন টোনই ছিল না। আমাদের প্ল্যান ছিল। উনি আমাদের নক দিতেন। আজকে অফিসে থাকবো। বা গণভবনে রেস্টে থাকবো। তোমরা আসতে পারো। এটা এমন না যে এমন সেট করতে হয়েছে। এখানে আসতে হবে বসতে হবে। এই এক্সপ্রেশন দিতে হবে। এমন কিছু হয়নি। খুবই বৈঠকী ঢংয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি। সেগুলোই আমরা ক্যামেরায় ধারণ করেছি। অনেক সময় কোন একটা কাজ করছেন। কিছু লিখছেন সেটাও হয়তো ক্যাপচার করলাম। খুবই সিম্পেল ওয়েতে আমরা এগিয়েছি। আমরা কখনো রোল ক্যামেরা অ্যাকশন বলিনি একজন অ্যাকটরের মতো। ওনার সঙ্গে সময় কাটানোর যখনই সুযোগ পেয়েছি। সেটাই শ্যুট করার চেষ্টা করেছি। সেখান থেকে যতটুকু মনে হয়েছে আমি রাখতে পারি। সেটা রেখেছি।

কোন গল্প হয়েছে?
অবশ্যই এটা একটা স্টোরি টেলিং। এই গল্পটা দাড় করানোর জন্যই আমাদের পাঁচ বছর সময় লাগলো। প্রতিটি গল্পই যে সিনেম্যাটিক হবে এরকম নয়। তবে আমরা একটা সংযোগ রাখার চেষ্টা করেছি। যার জন্য ওনার বোনের ন্যারেশন থেকে শুরু করে, যত আর্কাইভ ছিল ওনাকে নিয়ে। সবকিছুই কালেক্ট করার চেষ্টা করেছি। ওনার জার্নিটাকে আসলে নিয়ে আসবে। অনেক অনেক তথ্য আছে। যা এলোমেলোভাবে হয়তো জেনেছি আমরা। অন্যের মুখ থেকে কিংবা ভাবনা থেকে মানুষ জেনেছে। সেটা আমরা একটা গল্পের মতো সাজিয়েছি।

তাঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা?
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করতে গেলে যে এক্সাইটমেন্ট থাকবে। সেটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। আর ওনার জীবনে এত এত কষ্ট আছে। উঠা নামা আছে। সেগুলোর সঙ্গে যখন পরিচয় হয়েছে। গায়ের লোম দাড়িয়ে গেছে। যারা দেখবে তাদের কি অবস্থা হয় আমার জানা নেই। যেটা বলতে হয়। আর উনি খুব ক্যাজুয়ালি সবকিছু নিতে পারেন। উনি একজন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে উনি আমার মা বা আমার বড় বোন। তার সঙ্গে যেমন সম্মানবোধ রেখে কথা বলি। যেমন আবদার করি। তেমনটা করার জায়গা উনি দিয়েছেন বলে পুরো কাজটি সম্ভব হয়েছে। ওনার জন্য কোন প্রটোকল রাখারও প্ল্যান করতে হয় না। যেমন উনি হাটছেন, ক্যামেরাম্যান ওনাকে ক্যামেরা নিয়ে ফলো করছেন। উনি সিড়ি দিয়ে উঠতেছেন। আগেই কিনা বলে এই ছেলে, সিড়ি দেখে উঠো। কিনা হালকা পড়ে যেতে গেল। উনি দৌড়ে এসে ধরেন। ধমক দেন। আরে এভাবে করো। ওনার চারপাশটাকে কিভাবে যেন উনি খুব সহজে বুঝতে পারেন। ধরুন আমাদের টিমে যারা আছেন। একদিন দেখলো আমরা কি করছি। পরেরদিন তিনি বলে দিতে পারবে কে কি করি। কিনা দেখা গেল আমার জুতার ফিতাটা খোলা। এত ঝামেলার মধ্যে কিনা হঠাৎ করে বলবে এই পিপলু তুমি জুতার ফিতা বাধো। পড়ে যাবে তো। এই যে ছোট ছোট জিনিস। এগুলো খুব সারপ্রাইজিং ছিল। তিনি খেতে যাবে। আমাদের জিজ্ঞেস করতে ভুলে না যে খেয়েছো কিনা। পাঁচ বছর তার সঙ্গে কাটিয়েছি। কতশত এক্সপেরিয়েন্স আছে।

কোথায় কোথায় শুটিং করা হয়েছে?
আপাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তো আমি সবচেয়ে বেশি পেয়েছি গণভবন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ও গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। এ ছাড়াও অনেক সময় সরকারি কিছু অনুষ্ঠানে দৃশ্য ধারণ করেছি। ছবিতে আমরা দেখব, বাবার (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) মৃত্যুর পর আপা জার্মানি, ব্রাসেলস থেকে শুরু করে দিল্লি—যেখানেই গেছেন সেখানে আমাদের যেতে হয়েছে। আমি তথ্যচিত্রটাকে এমনভাবে পরিকল্পনা করেছি, তাঁর সঙ্গে শুটিংয়ের ব্যাপারটা দেশেই রেখেছি। বাকি জায়গাগুলোতে তাঁর যাওয়ার দরকার পড়েনি।

১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা দিল্লীতে ছিলেন। এই সময়টা তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল বলা চলে। পরিবারকে হারিয়ে তিনি পরবসী। এই সিনেমায় দিল্লীর গল্পও বলেছেন। ডকু-ড্রামাটির জন্য দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী যাননি। তবে আমি ও আমার টিম দিল্লীর সেসব জায়গা তুলে ধরেছি। পানডারা রোডের বাড়ি ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধীর রেসকোর্স রোডের বাড়ি যেখানটা এখন তার নামে জাদুঘর হয়েছে। সেসবও উঠে এসেছে। ইন্ধিরা গান্ধীর অথিতেয়তার কথাও বলা হয়েছে।

প্রতিবন্ধকতা কি?
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে ওনার ‘ডেট’। ওনার সিকুয়েরিটি। অনেক টাইম নিয়ে ধৈর্য্য ধরে শ্যুট করতে হয়। সেই সময়টা পাওয়া তো বেশ কষ্টসাধ্য ছিলই। আর আমাদের হিস্টোরির আর্কাইভাল তো অনেক দুর্বল। আমরা অনেক জায়গায় অনেক কিছু চাইলেও সহজে পাইনি। সেটার জন্য আমরা এসোসিয়েট প্রেস- এপি, আইপি, বিবিসির মতো সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।

শেখ রেহানা ছিলেন…
দুইবোন হরিহর আত্মা। খুবই আত্মিক সম্পর্ক। গল্প বলতে গেলে একে অন্যের ছাড়া যেন কিছুই সম্ভব নয়। শেখ হাসিনার অন্য পিঠ শেখ রেহানা। একটা কমপ্লিমেন্টিং অংশে ওনাকে দেখা যাবে। ওনার পরিবারের প্রায় সবাই এসেছেন এর মধ্যে। যেমন আপনার বাড়ি আমি বেড়াতে গেলাম। সেখানে তো আপনার পরিবারের মানুষের সঙ্গে আমার দেখা হবেই। তেমনভাবে পরিবারের মানুষজনও ছিলেন। তবে প্ল্যান করে কেউ আসেনি।

এর বাইরে শোবিজ নিয়ে কোন কথা হয়েছে?
আমি আসলে আমার কাজটা জানতাম। এই কাজটির বাইরে অন্য কিছু নিয়ে কথা বলাই হয়নি। ওনাকে ডাইভার্টও করতে চাইনি। আমি তো জানতাম আমার স্ট্রাকচার কি। আমার ওইটাই ফোকাস ছিল।

প্রধানমন্ত্রী দেখেছেন?
এটা একটা রোবটিক সিনেমা। ওনার কোন মন্তব্য আমরা আশাও করিনি। দেখতে চাননি। বলেছেন অনেক কথা বলেছি। আশা করি সেটা ভালোভাবেই করেছ। আমরা জোর করেছি, আপা আপনার দেখতেই হবে। ওনার অনুভুতিতা অনেক ভাড়ি ছিল। এটা যতক্ষন না পর্যন্ত কেউ না দেখবে। আমি বোঝাতে পারবো না প্রধানমন্ত্রীর অনুভুতি কি হতে পারে। আমাদের কাজ দিয়ে আমার মনে হয়েছে ওনার অনুভুতিতা ছুঁতে পেরেছি। কোনো কারেকশান দেননি যে এটা এরকম করো, এটা বদলে দিও। তিনি কেবল মজা করেছেন তার মেকাপ নিয়ে। বলছিলেন, ‘বয়স হয়েছে। মেকাপ যেন বেশি না লাগে।’ সেটা আমরা এডিটিংয়ের সময় মাথায় রেখেছিলাম।

মাত্র চারটি হলে কেন?
ছবিটির মধ্যে অনেক সরলতা আছে। অনেক ট্রাজেডি আছে। সব সত্য আছে। এটা আপনাকে এন্টারটেইন করবে। এটা আপনাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাবে। একটা ডকু ড্রামা হলে রিলিজ করেছি। এটাই তো অনেক। তবে এটা তো একসপ্তাহে শেষ হয়ে যাওয়ার কোন ব্যাপার নেই। এটা যুগ যুগ বেচে থাকার মতো একটা বিষয়। যেটা আজকে চারটি হলে রিলিজ দিয়েছে। কালকে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। এখান থেকে কোন ব্যাবসা বা অন্য কিছু নয়। এটা আমি সাধারণ দর্শক হিসেবে দেখবো আপনি দেখবেন। বাংলাদেশের মানুষ সবাই দেখবেন বলে আশা করি। ছবিটি দেশের চারটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। ঢাকায় বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্স, যমুনা ব্লকবাস্টার ও মধুমিতায় ছবিটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আর রাজধানীর বাইরে ছবিটি চট্টগ্রামের মিনিপ্লেক্সে দেখানো হবে।

কি দেখবো?
আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনীতির মঞ্চে বহুবার দেখেছি। তাকে হাসতে দেখেছি, কাঁদতে দেখেছি। রাজনীতির মঞ্চে মরতে মরতে বাঁচতে দেখেছি। মানুষের পাশে তাকে দেখেছি, মানুষকে তার পাশে দেখেছি। দেখেছি স্লোগানে বক্তৃতায় রাজপথে ভাষণে, দেখেছি গোটা জাতিকে মায়ের আঁচলে আগলে রাখা শাসনে। কিন্তু কখনো দেখেনি একান্ত নিভৃত্তে একা মানুষটাকে, একটি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনাকে।

পাঁচ বছর! দীর্ঘ সময়। কেমন সম্পর্ক হলো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে?
আমরা যখন কাজটি হাতে নেই তখন ২০১৩ সাল। মানে রানিং প্রধানমন্ত্রীর সাথে কাজ! বিষয়টা সহজ ছিলো না। আমিও ভাবলাম এমন একটা কাজ করতে হলে প্রধানমন্ত্রীর থেকে দূরে দূরে থাকলে হবে না। আমি বুদ্ধি করে উনাকে বললাম, আপনাকে আমি আপা বলে ডাকবো। মাঝে মধ্যে একটু আধটু বিরক্ত করবো। প্রথমে তিনি আমাকে ‘এই ছেলে’ বলে ডাকতেন, এরপর আসতে আসতে আমাকে বললেন ‘এই পিপলু’। এভাবেই আমার কাজটা করতেও সহজ হয়ে যায়। মনে আছে প্রথম সাক্ষাতের সময় আলাপে আলাপে প্রধানমন্ত্রী বলছিলেন ‘এই জানো, আমি রেহানা একে অন্যের শাড়ি ভুল করে পরে ফেলি।’ তাঁর মুখে এই রসাত্মক কথাটা শুনতে শুনতে আমার মনে হয়েছিলো এই মানুষটির সঙ্গে ডাল চাল নিয়ে কথা বলা যায়। তিনি একদমই ঘরের মা-বোনের মতো আচরণ করেছেন। আর সেটাই আমাদের দরকার ছিলো।

আসন্ন নির্বাচনের আগে তথ্যচিত্রটি প্রভাব ফেলবে? 
আমাদের এই ধরনের উদ্দেশ্য ছিল না। তথ্যচিত্রটি নির্বাচনে বা রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, তা নিয়ে আমরা অতটা ভাবিনি। আমরা শুধু একজন সাধারণ কন্যার গল্প বলার চেষ্টা করেছি। আমি চেষ্টা করেছি সাদামাটা একটা উপস্থাপনের। আমার মাথায় ছিলেন ব্যক্তি শেখ হাসিনা। তিনি কী পছন্দ করেন, কী খেতে ভালোবাসেন, কী ধরনের শাড়ি তিনি পছন্দ করেন? ছেলেমেয়ে ও নাতিদের সঙ্গে কীভাবে সময় কাটান, তার বোনের সঙ্গে রসায়নটা কেমন, কেমন তার জীবনযাপন? স্বজন হারানোর ভাবনা তাকে কীভাবে প্রভাবিত করে, কীভাবে কেটেছে তার নির্বাসিত জীবনের দিনগুলো- এইসব জানতে চেয়েছিলাম।

বাঙালি জানে ঠাকুর বাড়িতে কী রান্না হতো, ঠাকুরবাড়ির মেয়েরা কীভাবে শাড়ি পড়তো, কেমন করে পড়তো। সেইসব নিয়ে পত্রিকায় নানারকম লেখা ও ফিচার দেখি। কিন্তু বাঙালি কোনোদিন জানতে চায়নি বঙ্গবন্ধুর পরিবারে কী রান্না হতো? সুলতানা কামাল চমৎকার শাড়ি পড়তেন, ফ্যাশনেবল ছিলেন। সেগুলো কিন্তু আমাদের মেয়েদের কাছে জনপ্রিয়তা পায়নি।

কেন? যে পরিবারটি এ দেশের রাজনীতির সঙ্গে এত গভীরভাবে জড়িত, দেশের মুক্তির সঙ্গে যে পরিবারের এত ত্যাগ রয়ে গেছে সেই পরিবারটির সঙ্গে আমাদের এত দূরত্ব কেন? কারণ নানা রিউমার ও গল্প ঘৃণার জন্ম দিয়ে একটা দেয়াল তৈরি করা হয়েছে।

কাজটি করতে গিয়ে ব্যাক্তিজীবনকে কতটা প্রভাবিত করেছে?
আমরা যারা আশির দশকে বেড়ে ওঠেছি দেখেছি তখন জয় বাংলা বলা যেত না। কোথাও বঙ্গবন্ধুর নাম নিশানা ছিলো না। ওসব প্রায় নিষিদ্ধ ছিলো। বাঙালি জাতিসত্ত্বার গুরুত্ব ছিলো না। বলা হতো দেশটা মুসলিমদের। কিন্তু যখন নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন হলো তখন বুঝলাম দেশের ইতিহাস নিয়ে এতদিন একটা ফাঁকি দেয়া হয়েছিলো আমাদের। আমি নিজে এমন একটি পরিবারে বড় হয়েছি যেখানে আমিও অনেক জানতে পারিনি। ইতিহাস সম্পর্কে, বঙ্গবন্ধুর পরিবার সম্পর্কে। আসলে আমার বাবা বৃটিশ আমলের মানুষ। তিনি বৃটিশদের দেখেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছেন। পাকিস্তান ভাগ হতে দেখেছেন। সেখানেও কন্ট্রিবিউশন ছিলো। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্যও কাজ করেছেন। তার কাছে মুক্তিযুদ্ধের পরে আর তেমন করে দেশপ্রেমের আবেগ কাজ করেনি। এতগুলো জাতিসত্ত্বার ভেতর দিয়ে যাতায়াত করে তার জাতীয়তার বড়াইটা আর ছিলো না।

কিন্তু আমি তো সেই বড়াটা করতে চেয়েছি। আমি কেন জানবো না আমার জাতির জনকের পরিবারের কথা। বঙ্গবন্ধু তার স্ত্রীকে রেনু বলে ডাকতেন। এটা আমার ছেলে কেন জানবে না। আমার এটা মনে হয়েছে। এবং সেটা জানার ও জানানোর চেষ্টা করতেই এই ছবিটি বানিয়েছি। যে দেয়ালটা তৈরি করা হয়েছিলো সেই দেয়ালটা ভাঙতে চেয়েছি।

গো নিউজ২৪/জাবু

বিনোদন বিভাগের আরো খবর
বুকটা ফেটে যায় কষ্টে: মাহিয়া মাহি

বুকটা ফেটে যায় কষ্টে: মাহিয়া মাহি

সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে মরিয়া যেসব অভিনেত্রী

সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে মরিয়া যেসব অভিনেত্রী

পরকীয়া এবং ফাঁদে পড়া নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস

পরকীয়া এবং ফাঁদে পড়া নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস

দেড় মাসে ওজন অনেকটা কমিয়ে ফেলেছেন শাবনূর

দেড় মাসে ওজন অনেকটা কমিয়ে ফেলেছেন শাবনূর

এই ফিটনেসে ভক্তদের খুশি করাতে পারবেন শাবনূর?

এই ফিটনেসে ভক্তদের খুশি করাতে পারবেন শাবনূর?

কাজ নেই অথচ ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ, এতো টাকা কোথায় পান এই অভিনেত্রী

কাজ নেই অথচ ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ, এতো টাকা কোথায় পান এই অভিনেত্রী